ডায়মন্ড ব্যাকমথ ফসলের শত্রু

Monday, August 2, 2010

কপিজাতীয় সবজির জন্য এটা খুব ক্ষতিকর পোকা। বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপি, ব্রকলি, মূলা ও শালগমে এ পোকার আক্রমণ দেখ যায়। প্রাপ্তবয়স্ক ডায়মন্ড ব্যাকমথ দেখতে সরু, খুবই ছোট, ধূসর বাদামি রঙের।
লার্ভা দেখতে হালকা সবুজ, দেহে কালো লোম থাকে। স্বাভাবিক অবস্থা বিঘ্নিত হলে লার্ভা কুঁকড়ে যায়। আবার গাছ থেকে পড়ে গেলেও লার্ভা গোল হয়ে একটি রেশমের মতো সূতার সাহায্যে ঝুলতে থাকে। লার্ভা পাতা ও কুঁড়ি এমন ভাবে খায় যা দেখতে ছোট ছোট ছিদ্রের মতো হয়ে যায়। পূর্ণাঙ্গ পোকা কোনো ক্ষতি করে না।
পূর্ণ বয়স্ক মথ একত্রে তিনটি অতিক্ষুদ্র ডিম পাড়ে পাতার নিচের অংশে। ১০ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে ক্ষুদ্র লার্ভা বা কীড়া বের হয়ে পাতা ছিদ্র করে ভেতরের কোষগুলো খেতে থাকে। আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে পরবর্তী ১০ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে বড় হয়ে পাতার বাইরের কোষও খেতে থাকে। এরপর কীড়া পাতলা সূতার মতো আবরণ দিয়ে নিজের শরীরের চার দিকে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে কোকুন তৈরি করে, যা দেখতে হালকা রেশমি জালের মতো মনে হয়। এই কোকুন পাতা বা কাণ্ডের সাথে লেগে থাকে এবং এর ভেতরেই পুত্তলী দশা কাটে। ডিম থেকে মথ পর্যন্ত জীবনচক্র সম্পন্ন হতে ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ সময় লাগে।
বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে বাঁধাকপির জন্য প্রতিকার ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন হয় যদি-
হ বীজতলায় ১০ ভাগের বেশি গাছ আক্রান্ত হয়, রোপণের পর থেকে মাথা বাঁধা শূরু হওয়া পর্যন্ত ৩০ ভাগ গাছ আক্রান্ত হয়। হ মাথা বাঁধা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ২০ ভাগের বেশি গাছ আক্রান্ত হলে এবং মাথা বাঁধা শেষ হলে বা পূর্ণতা প্রাপ্ত হলে ১০ ভাগের বেশি গাছ আক্রান্ত হলে। বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে ফুলকপি ও ব্রকলির জন্য প্রতিকার ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন হয় যদি-
হ বীজতলায় ১০ ভাগের বেশি গাছ আক্রান্ত হয়। হ রোপণের পর থেকে ১ম ফুল আসা পর্যন্ত ৫০ ভাগের বেশি গাছ আক্রান্ত হলে। হ ফুল ফোটা থেকে পূর্ণতা প্রাপ্ত হওয়া পর্যন্ত ১০ ভাগের বেশি গাছ আক্রান্ত হলে। পরিচর্যাগত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা। হ রোপণের আগে জমি তৈরির সময় গভীরভাবে চাষ করা। হ ফসল সংগ্রহের পর অবশিষ্টাংশ নষ্ট করা। হ রোপণের পর থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত ক্ষেতে বা এর আশপাশে বা আইলে সরিষাজাতীয় আগাছার নিয়ন্ত্রণ করা। হ আক্রান্ত ক্ষেতে ব্যাসিলাস থুরিনজিয়েনসিস ব্যবহার করা, এতে পোকা সাথে সাথে মরে না। পোকার খাবার অরুচি সৃষ্টি করে পোকাকে দুর্বল করে মেরে ফেলে। হ আক্রান্ত ক্ষেতে ট্রাইকোগ্রামা ব্যবহার করা। হ থেঁতলানো নিমের পাতা এক কেজি বা এক কেজি নিম বীজ ভাঙা ২ থেকে ৩ লিটার পানিতে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে আরো ২ থেকে ৩ লিটার পানি মিশিয়ে ১০ গ্রাম সাবান গুঁড়াসহ জ্বাল দিতে হয় মিশ্রণ না ফুটা পর্যন্ত। এরপর ঠান্ডা করে আরো ৫ লিটার পানি যোগ করে (মোট ১০ লিটার) ১০ গ্রাম তুঁত মিশাতে হয়। মিশ্রণটি ছেঁকে নিয়ে ক্ষেতে স্প্রে করলে এই পোকা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
হ ক্ষেত থেকে ফসল সংগ্রহের আগ পর্যন্ত কীটনাশক স্প্রে করা।


খোন্দকার মোঃ মেসবাহুল ইসলাম কৃষিবিদ

তথ্যসূত্র: শাইখ সিরাজ রচিত ‘মাটি ও মানুষের চাষবাস’ গ্রন্থ থেকে সংগ্রহীত

মনের উঠোনে

সাম্প্রতিক সংযোজন

মোবাইল থেকে দেখুন

আমাদের দেশ এখন আপনার মুঠোফোনে, মোবাইল থেকে লগইন করুন আমাদের দেশ

দ র্শ না র্থী

দ র্শ না র্থী

free counters

কে কে অনলাইনে আছেন