
এদিকে জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবে ভাদ্র মাসের ১৫দিন হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত  বৃষ্টির দেখা মিলছেনা। কৃষকরা বলছেন,এভাবে যদি আর ৮/১০দিন বৃষ্টি না হয়  তাহলে কোন কিছুই বোনা সম্ভব হবে না। পাটের দাম থাকায় এবং পাটের বীজ সহজ  লভ্য থাকায় ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বিপুল উৎসাহ নিয়ে কেশবপুরের কৃষকরা  তাদের জমিতে পাট বুনেছিল। গতবার যারা এক ছিটে জমিতেও পাট চাষ করেনি তারাও  এবার বিঘের পর বিঘেতে পাটের আবাদ করেছে। ফলে পাটের আবাদ এবার কেশবপুর  অঞ্চলে দ্বিগুন হয়েছে।
বিগত বছরগুলোতে সোনালী আঁশ গলার ফাঁস হয়ে  কৃষকদের কাছে দেখা দিয়েছিল। মিল কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কিন্তু  সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপে বিশ্ব বাজারে পাটের চাহিদা বেড়ে গিয়ে ৪/৫শ টাকা  মন দরের পাট ২৫/২৬শ টাকায় বিক্রি হয়। যারা পাট চাষ করেছিল তাদের মুখে হাসি  ফুটে  উঠেছিল। কিন্তু বর্তমানে পাটের বাজার ফঁড়িয়াদের নিয়ন্ত্রনে থাকায়  পাটের বাজার কমতে শুরু করেছে। তারা ইচ্ছে মত পাটের দাম নির্ধারন করে ১১/১২শ  টাকায় নামিয়ে এনেছে। এতে কৃষকরা আবার হতাশ হয়ে পড়েছে। তারপর অনাবৃষ্টির  কারনে তারা উৎপাদিত পাট পচন দেয়া নিয়ে তারা পড়েছেন মহা বিপাকে।
কেশবপুর  কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার বাজার পাটের মূল্য বেশী থাকার কারণে  গোটা কেশবপুর এলাকায় পাটের চাষ হয়েছে পাঁচ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে। খরার  কারনে আগাম সেচের মাধ্যমে চাষিরা এবার পাটের আবাদ করেন। উৎপাদন খরচ ও  সংসারের টানা-পোড়েনে পড়ে অনেক চাষি ক্ষেতের পাট ফঁড়িয়াদের কাছে আগেই কমদামে  বিক্রি করে টাকা নিয়ে খরচ করেছেন। পাট চাষের জন্য অনুকুল আবহাওয়ার কারনে  এবছর পাটের বাম্পার হয়েছে। কিন্তু উৎপাদিত পাট পানির অভাবে চাষিরা জাগ দিতে  পারছেননা।
খাল বিল ডোবা পুকুর কোথাও জাগ দেবার মতো কোনো পানি নেই।  ভরা বর্ষা মৌসুমে এখনো ভারি বৃষ্টিপাত হয়নি। পাটের সোনালী আঁশ বের করতে যে  পরিমাণ পানির প্রয়োজন কৃষকরা তা পাচ্ছেননা। চাষিরা মেশিন দিয়ে খানা-খন্দে  পানি তুলে সেখানে পাট জাগ দিচ্ছেন। অনেক চাষি দূর থেকে পানি কিনে এনে তা  ডোবায় ফেলে পাট জাগ দিচ্ছে এতে খরচের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে।
বুকভরা  আশা নিয়ে চাষিরা পাটের আবাদ করলেও বর্তমান বাজারে যে দামে পাট বিক্রি হচ্ছে  তাতে তারা নিরাশ হচ্ছেন। কেশবপুর উপজেলার পাঁতিজয়া গ্রামের কাজল চৌধুরী  পিটিবি নিউজ ডটকমকে জানান, তিনি এবার তার তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন।  গ্রামের কোথাও পানি না থাকায় আনেক দূর থেকে পানি এনে তার ডোবা ভরে তাতে পাট  জাগ দিতে হয়েছে। যার কারনে বৃষ্টির আশায় অনেক কৃষক ও জমির মালিক জমি থেকে  পাট কাটছেননা।



































