দক্ষিণাঞ্চলের কৃষক পানির দরে পণ্য বিক্রয়ে বাধ্য হচ্ছে

Saturday, August 7, 2010


দক্ষিণাঞ্চলে স্বাধীনতার ৩৯ বছর পরেও কৃষি ভিত্তিক কোন শিল্প কল-কারখানা গড়ে উঠেনি। এমনকি কৃষি পণ্য সংরক্ষণের জন্য হিমাগার পর্যত্ম নেই। ফলে প্রতি বছর ব্যাপক পরিমাণ কৃষি পণ্য উৎপাদন হলেও তা পানির দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। কখনো কখনো বিক্রি করাও সম্ভব হয় না। তখন এসব পণ্য নষ্ট হয়ে যায়। কখনোই এ অঞ্চলের কৃষকরা কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় না।

বরিশাল কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯-১০ সালে জেলার ১০টি উপজেলায় মোট ২০ হাজার ২১৭ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের গ্রীষ্মকালীন শাক-সবজি ও ফলের আবাদ হয়েছে। যার অধিকাংশ এখনো মাঠে রয়েছে। শ্রাবণের বর্ষণে এবং জোয়ারের পানিতে এসব মাঠ-ঘাটে এখন পানি ছুঁই ছুঁই করছে। ফসল মাঠ থেকে তুলে এনে সংরক্ষণ করার কোন উপায় নেই কৃষকের।

কৃষকের কপালে দুশ্চিত্মার ছাপ স্পষ্ট। তবুও করার কিছু নেই। উৎপাদিত পণ্যের মধ্যে প্রায় ৪৬ হাজার হেক্টর জমিতে ফলেছে রবিশস্য। যার মধ্যে সয়াবিন ২ হাজার ৩৪৮ হেক্টর, আখ ৯৫০ হেক্টর, গোল আলু ১৯শ’ হেক্টর, মিষ্টি আলু ১ হাজার ৭২৬ হেক্টর। এছাড়াও বিভিন্ন জাতের ডাল, ভুট্টা, তিল, সূর্যমুখী, তিসি, মরিচ, রসুন, পিঁয়াজ, আদা ও শীতকালীন শাক-সবজি মিলিয়ে ৩৯ হাজার ৭৬ হেক্টরে চাষাবাদ হয়েছে। প্রতিটি ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা জানান, পরিবহন সমস্যা এবং বাজারে ফড়িয়া-দালালদের একচেটিয়া দাপটে কৃষকরা পানির দরে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। চলতি গ্রীষ্মকালীন মৌসুমেও এমনটিই আশংকা করছেন কৃষকরা। তাদের ৪ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে আবাদ করা শাক-সবজি ইতিমধ্যেই পানির দরে বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। পানির দরে বিক্রি না করলে শ্রাবণের বর্ষণে তা মাঠেই নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শাক-সবজির মধ্যে প্রতি মণ ঢেঁড়শের মূল্য বাবদ কৃষকরা পাচ্ছে ২শ’ থেকে ২৫০ টাকা। পুঁই শাক ৮০ থেকে ১শ’ টাকা, চিচিঙ্গা ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, ঝিঙ্গা ২শ’ টাকা থেকে ২৪০ টাকা, শসা ১৬০ থেকে ২শ’ টাকা। একই অবস্থা চালকুমড়া, করলস্না, ডাটা শাক, কাকরোল, বেগুন, বরবটিসহ পেয়ারা, কলা, পেঁপে, আমড়া, লেবু ইত্যাদি ফলের বেলায়ও। অথচ দালাল-ফড়িয়াদের হাত ঘুরে খুচরা বাজারে দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য। বাবুগঞ্জ, উজিরপুর, বানারীপাড়া, স্বরূপকাঠী ও বাকেরগঞ্জের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ইউনিয়ন ভিত্তিক বাজার ব্যবস্থা বাসত্মবায়িত না হওয়া, সরকারিভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকা, পরিবহন সমস্যা, কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে না ওঠায় তারা উৎপাদিত পণ্যের মূল্য পাচ্ছেন না।

বরিশাল কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জানান, কৃষকদের অসুবিধাগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হবে।

সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক

মনের উঠোনে

সাম্প্রতিক সংযোজন

মোবাইল থেকে দেখুন

আমাদের দেশ এখন আপনার মুঠোফোনে, মোবাইল থেকে লগইন করুন আমাদের দেশ

দ র্শ না র্থী

দ র্শ না র্থী

free counters

কে কে অনলাইনে আছেন