
পানচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একমাত্র পান চাষই তাদের উপার্জনের প্রধান উৎস। পান চাষে প্রচুর অর্থের দরকার হয়। কোনো কোনো কৃষক ঋণ করেও পান চাষ করে লাভবান হয়েছেন।
সাপাহার হাট, মধুইল হাট, আশড়ন্দ হাটে প্রতি সপ্তাহে পানের হাট বসে। এখান থেকে বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যবসায়ীরা পান নিয়ে যান। মুনাফার দিক থেকে অন্য কোনো কৃষিপণ্য থেকে এত বেশি আয় সম্ভব নয়, যা পান চাষে সম্ভব। কল্যাণপুরের পানচাষি বাদেশ বর্মণ বলেন, পান চাষ তাদের পারিবারিক ব্যবসা। পান চাষ করেই তারা পরিবার-পরিচালনা করেন। তারা আর্থিকভাবে এখন সচ্ছল। আশড়ন্দ গ্রামের পানচাষি আবদুল মালেক ও মাইনুল হক বলেন, ব্যাংকে টাকা জমা রাখার চাইতে পানের বরজ অধিক নিরাপদ। তবে পানের বরজ করতে অনেক সময় টাকা পাওয়া যায় না। তারপর বরজ করতে হলে বেশি পরিচর্চা করতে হয়।
সাপাহার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ কল্যাণপুর গ্রামে কৃষকদের মধ্যে বাস্তব অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইসিএম কৃষক প্রশিক্ষণ স্কুল স্থাপন করেছে। এই স্কুলে এলাকার কৃষক পানসহ তাদের সব ধরনের ফসলের রোগবালাই প্রতিরোধে কি করতে হবে তার সঠিক পরামর্শ গ্রহণ করছে। পানচাষি আকবর আলী বলেন, বর্তমান সময়ে আধুনিক চাষ পদ্ধতিতে কৃষির উন্নয়নের দিকে সরকার বেশি গুরুত্ব দিলেও এ অঞ্চলের অর্থকরী কৃষিপণ্য পানের উৎপাদনের জন্য চাষিদের কোনো আধুনিক চাষপদ্ধতি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এছাড়া প্রয়োজনীয় উপকরণের অভাব ও মূল্যবৃদ্ধির কারণে পান চাষে ব্যয় বেড়ে গেছে। পানের জমিতে খৈল সার হিসেবে ব্যবহার করা হয় কিন্তু খৈল না পাওয়ায় এবং এর মূল্য বৃদ্ধির কারণে কৃষকরা পানের জমিতে নিজের ইচ্ছায় রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে শুরু করে। ফলে প্রতি বছর পানের বরজে মড়ক লেগে পান গাছ পচে নষ্ট হয়ে থাকে। উপজেলা কৃষি অধিদফতরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সেলিম উদ্দীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি উপজেলার পানচাষিদের সঠিক তালিকা ও স্থাপিত পানের বরজের প্রকৃত হিসাব দিতে ব্যর্থ হন। উপজেলা কৃষি বিভাগে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য-উপাত্ত নেই বলে জানান। এলাকার পানচাষিরা মনে করেন, সরকারিভাবে পান চাষে উন্নত প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রদান করলে দেশ থেকে পান রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব হবে।
তথ্য সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন, তারিখ: ১১-১২-২০১০