নিম্নমানের বীজে তরতাজা গাছ, নেই ফলন

Saturday, October 30, 2010


‘প্যাকেটের বেছন কিনে আমাগেরে কপাল ভাঙ্গিছে, খালি বড় বড় গাছ হইছে, ফুল-ফল কিছুই নাই।’ কথাগুলো পাবনার সদর উপজেলার ভজেন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক মো. হাসান আলীর। চলতি মৌসুমে তিনি দুই বিঘা জমিতে মাষকলাইয়ের আবাদ করেছিলেন। জমিতে গাছ হলেও ফুল ও ফল নেই। এই সমস্যা শুধু হাসান আলীর একার নয়, পাবনা সদর ও আটঘরিয়া উপজেলার আরও কয়েক হাজার কৃষকের মাষকলাইয়ের খেতেও ফলন হয়নি।
কৃষকদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন সংস্থার (বিএডিসি) বীজ বিপণন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে স্থানীয় ডিলার বিএডিসির প্যাকেটে আমদানি করা নিম্নমানের বীজ সরবরাহ করায় তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পাবনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর পাবনার নয়টি উপজেলায় মোট ১০ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে মাষকলাইয়ের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় দুই হাজার ৬৮০ এবং আটঘরিয়া উপজেলায় ৯৫০ হেক্টর জমিতে মাষকলাইয়ের আবাদ করা হয়।
কৃষকেরা আরও অভিযোগ করেন, সদর ও আটঘরিয়া উপজেলায় মাত্র ৩০ শতাংশ জমিতে ফলন হয়েছে। যেসব কৃষক বীজ সংরক্ষণ করেননি, তাঁরা বিএডিসির আটঘরিয়া উপজেলার বিএডিসির ডিলার মেসার্স হাবিব বীজ ভান্ডার থেকে বীজ কিনেছিলেন। হাবিব বীজ ভান্ডার আটঘরিয়া উপজেলার দায়িত্বে থাকলেও সদর উপজেলার কৃষকেরাও তাঁর কাছ থেকে বীজ কিনেছেন। এসব বীজ থেকে জমিতে শুধু মাষকলাইয়ের বড় বড় গাছ হয়েছে। যেসব কৃষক নিজেরা বীজ সংরক্ষণ করে বপন করেছেন, তাঁরাই শুধু ফলন পেয়েছেন।
সদর ও আটঘরিয়া উপজেলার কয়েকটি এলাকায় দেখা গেছে, মাঠজুড়ে শত শত একর জমিতে শুধু মাষকলাইয়ের গাছ রয়েছে।
বিএডিসি পাবনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, হাবিব বীজ ভান্ডারকে এ বছর মাষকলাইয়ের এক মেট্রিক টন বীজ সরবরাহ করা হয়েছিল।
কৃষকেরা অভিযোগ করেন, বীজের চাহিদা বেশি থাকায় ডিলার মেসার্স হাবিব বীজ ভান্ডারের মালিক হাবিবুর রহমান আমদানি করা নিম্নমানের বীজ সরবরাহ করেন। হাবিবুর রহমানকে এক টন বীজ দেওয়া হলেও তিনি কৃষকদের কাছে কমপক্ষে ১০ টন বীজ বিক্রি করেছেন।
আটঘরিয়ার কৃষক আনসার আলী অভিযোগ করেন, বীজের ডিলার হাবিব বিএডিসির প্যাকেট নকল করে তাতে আমদানি করা নিম্নমানের বীজ ঢুকিয়ে কৃষকদের কাছে বিক্রি করেছেন। এতে এই বীজে কোনো ফলন হয়নি।
আটঘরিয়ার শ্রীকান্তপুর গ্রামের কৃষক কামাল হোসেন জানান, তিনি মোট ১৩ বিঘা জমিতে মাষকলাইয়ের আবাদ করেছিলেন। এর মধ্যে তিন বিঘা জমিতে তিনি সংরক্ষণ করা বীজ বপন করেছেন এবং ওই তিন বিঘায় ভালো ফলনও পেয়েছেন। বাকি ১০ বিঘা জমিতে তিনি হাবিব বীজ ভান্ডার থেকে আনা বীজ বপন করেছেন। ওই ১০ বিঘায় কোনো ফলন হয়নি।
সদর উপজেলার মালীগাছা ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, ‘যেসব জমিতে পরিবেশকের বীজ বপন করা হয়েছে, সেবব জমিতে ফলন না হওয়ার বিষয়টি আমাদের কাছেও পরিষ্কার নয়। আমাদের প্রদর্শনী খামারেও ফলন হয়েছে।’
বিএডিসির সহকারী পরিচালক (বীজ বিপণন) আবদুল হালিম বলেন, বিএডিসি ডিলারদের মোট চাহিদার দুই শতাংশ বীজ সরবরাহ করে। বিএডিসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে ডিলার কৃষকদের কাছে আমদানি করা নিম্নমানের বীজ বিক্রি করেছেন বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে, সে অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।
পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জামান আজম বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জেনেছি। মাঠ পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।’
বীজের ডিলার মেসার্স হাবিব বীজ ভান্ডারের মালিক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিএডিসির সরবরাহ করা বীজ বিক্রি করেছি। অতিরিক্ত কোনো বীজ বিক্রি করিনি। আবহাওয়ার কারণেই কৃষকের জমিতে মাষকলাইয়ের ফলন হয়নি।’ তিনি বিএডিসির প্যাকেট নকল করে তাতে নিম্নমানের বীজ ঢুকিয়ে কৃষকদের কাছে বিক্রি করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

তথ্য সূত্রঃ প্রথম আলো, তারিখ: ৩০-১০-২০১০

ফসলি জমি, বধ্যভূমি হুমকিতে ফেলে বালু উত্তোলন

Friday, October 29, 2010


বগুড়ার সদর উপজেলার ফুলবাড়ী এলাকায় ফসলি জমি এবং করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি এভাবে অবাধে বালু তুলছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ইতিমধ্যে ওই এলাকার ৫০ বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এবং আরও শতাধিক বিঘা জমি ও একটি বধ্যভূমি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। একই কারণে কয়েক শ বিঘা জমিতে ফসলের আবাদ বন্ধ হয়ে গেছে।
এলাকাবাসী জানান, বগুড়া শহরতলির ফুলবাড়ী এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে করতোয়া নদী। ছোট বালু নামে পরিচিত এই গ্রামে রয়েছে একটি বধ্যভূমি। সম্প্র্রতি এই বধ্যভূমি সংরক্ষণের জন্য জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে ফলক স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ওই নদী থেকে বালু তোলায় বধ্যভূমি বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় এক চাষি জানান, চার-পাঁচ বছর ধরে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি এ এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে বালু তুলছেন। বালু তোলার জন্য প্রথমে এক বছরের জন্য জমি ইজারা নেওয়া হয়। এরপর জমিতে বোরিং করে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত যন্ত্র দিয়ে বালু তোলা হয়। এতে জমিতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় ফসলের আবাদ বন্ধ রয়েছে। কোথাও জমি ধসে গেছে। একই কারণে নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে এ পর্যন্ত এলাকার প্রায় ৫০ বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বালু তোলা অব্যাহত থাকায় শতাধিক বিঘা জমি বিলীন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কয়েকজন স্থানীয় কৃষক জানান, বালু তোলার কারণে আমতলী এলাকায় ৩৫ একর জমি নদীতে চলে গেছে।
২১ অক্টোবর সরেজমিনে দেখা গেছে, নদীতে ড্রেজিং মেশিন বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। কোথাও কোথাও ফসলি জমিতে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত শতাধিক যন্ত্র বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। এলাকাবাসী ভয়ে এই বালু তোলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নাম বলতে চান না।
এলাকার এক মুদির দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জমি থেকে বালু তোলার ফলে ফসলি জমি শেষ হয়ে যাচ্ছে। এখানকার বধ্যভূমি ও শ্মশানঘাট বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
বগুড়া সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবদুুল কাদের বলেন, বধ্যভূমি এলাকা থেকে বালু তোলার বিষয়টি মৌখিকভাবে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কিন্ত কোনো কাজ হয়নি।
বালু ব্যবসায়ী ও ফুলবাড়ী এলাকার জমির মালিক মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ‘একসময় এই বালু তোলার প্রতিবাদ করেছিলাম। কিন্তু বালু তোলা বন্ধ হয়নি। বালু তোলার কারণে নিজের জমিও নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। বাধ্য হয়ে নিজেই বালু তুলছি।’
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম খালেকুজ্জামান বলেন, এসব বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য পুলিশ সব সময় তৎপর রয়েছে। তিন দিন আগেই সাতটি শ্যালো মেশিন আটক করা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক নাজমুল হক জানান, ফসলি জমি থেকে বোরিং করে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত যন্ত্র দিয়ে বালু তোলার বৈধতা নেই। এভাবে বালু তুললে ভূমিধস হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা পারভীন জানান, সদর উপজেলায় কোনো বালুমহাল নেই। তার পরও আমতলী এলাকায় বালু তোলা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে একাধিবার উপজেলা সমন্বয় কমিটির মাসিক সভায় আলোচনা হয়েছে। কিন্তু ব্যক্তিগত জমি হওয়ায় বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।
ইউএনও সুলতানা পারভীন আরও বলেন, ‘বালু তোলার কারণে জমি ধসে পড়ায় বেশ কয়েকবার ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে বালু তোলার কাজে ব্যবহূত যন্ত্র আটক করা হয়েছে। বালু তোলা বন্ধ করার জন্য আমরা ওই এলাকায় গিয়ে সচেতনতামূলক সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

বোয়ালমারীতে কয়েক হাজার সরকারি গাছ লোপাট

Tuesday, October 26, 2010


ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর জিসি (গ্রোথ সেন্টার) থেকে কালিনগর জিসি সড়কের ছয় কিলোমিটার অংশে দুই পাশের লাগানো কয়েক হাজার সরকারি গাছ লোপাট হয়ে গেছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই লুটপাটে জড়িত বলে অভিযোগ আছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, গাছগুলো রক্ষায় এলজিইডি কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে এলজিইডি ওই সড়কের দুই পাশে বিভিন্ন প্রজাতির ছয় থেকে সাড়ে ছয় হাজার গাছ লাগায়। এর মধ্যে ১০০ থেকে ১৫০টি গাছ বর্তমানে টিকে আছে বলে এলজিইডির মাঠ তত্ত্বাবধায়ক মুজিবুর রহমান গতকাল সোমবার জানান। গত রোববার সরেজমিনে রাস্তার দুই পাশে কেটে নেওয়া কয়েক শ গাছের গোড়া দেখা গেছে। পশ্চিম আজলবেড়া গ্রামের আকতার হোসেন (৩০) জানান, ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছগুলো ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার-দফাদারেরা কেটে নিয়ে যান। সেই সঙ্গে কখনো কখনো তাঁরা মরা গাছও কেটে নেন। ধোপাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক হাসিবুর রহমান জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তাঁর লোকজন দিয়ে বছরের পর বছর ধরে এ এলাকার হাজার হাজার সরকারি গাছ কেটে সাবাড় করছেন। এগুলো দেখার যেন কেউ নেই।
২০০৬ সালের জুনে বন বিভাগের বোয়ালমারী কার্যালয়ের ফরেস্টার শহীদুল আলমের দেওয়া এক তদন্ত প্রতিবেদনে জানা গেছে, ওই সড়কে লাগানো গাছগুলোর মধ্যে গত ছয় মাসে ৮৬৪টি মরা শিশুগাছ ও চারটি তালগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নির্দেশে চৌকিদার-দফাদারেরা কেটে নিয়ে গেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ওই বছরের ১৪ জুন দাখিল করা এ প্রতিবেদনে ঘটনার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার চর চাঁদপুর গ্রামের মান্নান ঢালী, ধোপাডাঙ্গা গ্রামের মো. কাউছার, তালতলা গ্রামের আয়নাল ও চাঁদপুর গ্রামের কাশেম শেখকে দায়ী করা হয়।
চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সদস্য এস এম সামসুল আলম বলেন, ‘সড়কের দুই পাশে থাকা শিশুগাছগুলো আমাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিশুগাছে মড়ক দেখা দেওয়ায় একদিকে মারা যাচ্ছে, অন্যদিকে ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছগুলো যে যার মতো কেটে নিচ্ছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন ও এলজিইডি কর্তৃপক্ষের কাছে বহু আবেদন-নিবেদন করলেও তাঁরা কর্ণপাত করে না।’
ওই তদন্ত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান সামসুল আলম বলেন, ‘এলাকায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তৎকালীন সাংসদ শাহ মো. আবু জাফর ওই ফরেস্টারকে ডেকে আমার বিরুদ্ধে ভুয়া প্রতিবেদন দাখিলের কারণ জানতে চেয়েছিলেন।’
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, ‘আমি এখানে অল্প কিছুদিন আগে এসেছি। এসব গাছ রক্ষায় এর আগে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানি না। যেসব গাছ অবশিষ্ট আছে, সেগুলো রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহাবুবুর রহমান বলেন, চাঁদপুরে সরকারি গাছ কাটার কথা আমি শুনেছি। সহকারী কমিশনার (ভূমি) বর্তমানে ছুটিতে আছেন। তিনি ফিরে এলে এ ব্যাপারে তাঁকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হবে।’
প্রশিক্ষণকালীন ছুটিতে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাব্বির ইকবাল বলেন, এলজিইডি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও যথাসময়ে ব্যবস্থা গ্রহণে অনীহার কারণে উপজেলায় এলজিইডির লাগানো কয়েক হাজার গাছ লোপাট হয়ে গেছে।

সূত্রঃ প্রথম আলো (তারিখ: ২৬-১০-২০১০)

হাঁসের ঝাঁকে সুখের হাসি

Friday, October 22, 2010

খামারের হাঁসগুলোকে খাবার দিচ্ছেন শামসুল আলম

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উত্তর-পশ্চিম এলাকা পুরোটাই হাওরবেষ্টিত। গত বোরো মৌসুমে ওই এলাকার চারটি হাওরের ফসল রক্ষায় ছিল একটি বেড়িবাঁধ। প্রকৃতির কৃপায় বাঁধ টিকলে চার হাওরের বোরো রক্ষা পায়। কিন্তু এবার আর শেষরক্ষা হলো না। অন্যান্য হাওরের মতো বাঁধ ভেঙে ফসলডুবির ঘটনা ঘটে এখানেও। ভবিষ্যতের চিন্তায় অস্থির হয়ে ওঠে হাওরপারের কৃষক। এর মধ্যেও ব্যতিক্রম আছে। শামসুল আলম (৩৫) নামের এক কৃষক ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় ব্রতী হলেন। যে বৈরী প্রকৃতি তাঁর ধানের গোলা শূন্য করেছে, সেই প্রকৃতিকে উপজীব্য করে ধানশূন্য গোলায় হাঁসপালন শুরু করলেন তিনি।
ফসলডুবির পর টানা দুই মাসের চেষ্টায় শামসুল তাঁর হাঁসের ঝাঁকে সংখ্যা বাড়িয়ে এক হাজার পূর্ণ করলেন। শুধু দেখভাল করার মধ্য দিয়ে হাওরের জল-প্রকৃতিতে বেড়ে উঠছে হাঁস। কার্তিক মাস থেকে এক হাজার হাঁস তিন মাসে অন্তত ৭০০-৭৫০টি ডিম দেবে। পরে পুরো হাঁসের ঝাঁকে বিক্রি করে ফসলডুবির আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে, বোরো রোপণের পুঁজি সংগ্রহ হবে। এতে কোনো ধারদেনারও দরকার পড়বে না। যে পানি কেড়ে নিল ধান, সেই পানিই যেন শামসুলকে দিল স্বচ্ছলতার ‘নিদান’।
শামসুল আলমের বাবা আবদুল বশির মারা গেছেন প্রায় ১০ বছর আগে। ধান চাষ ছাড়া গৃহস্থ পরিবারের ছেলে হিসেবে বাড়তি কিছু শিক্ষা তিনি ছেলে শামসুলকে জীবদ্দশায় দিয়ে গিয়েছিলেন। প্রয়াত বাবার কথা স্মরণ করে ফসলহারা শামসুল ভাবলেন, যে প্রকৃতি ফসল কেড়ে নিয়েছে, সেই প্রকৃতিকে অবলম্বন করে হাঁস পালন করবেন। যৌথ পরিবারের তিন ভাইকে সঙ্গে নিয়ে নেমে পড়লেন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায়। একটি ব্যাংক থেকে ছয় মাসের জন্য কিছু টাকা ঋণ নিয়ে গোয়ালঘরে পুষতে শুরু করলেন হাঁস। ৫০ থেকে ১০০ এভাবে শুরু। পর্যায়ক্রমে তিন দিন বয়সী হাঁসের ছানা কিনে এক হাজার পূর্ণ করেন শামসুল।
হাঁসের ঝাঁকে খাবার দেওয়ার সময় শামসুল জানান, প্রতিটি হাঁসের ছানা ৩৩ টাকা করে কেনা। আর তিন মাস পর প্রতিটির দাম পড়বে ২০০ টাকার বেশি। মাঝখানে লাভ হিসেবে তিন মাস পাওয়া যাবে ডিম। এ লাভ থেকে দেনা শোধ করে আগামী মৌসুমে বোরো ফলানোর পুঁজি হয়ে গেল।
হাঁস বেশি খায়—এ ভয়ে গৃহস্থরা হাঁস পালতে সাহস পান না বলে জানান শামসুল। গেল বার ফসলডুবির পর প্রকৃতি তাঁদের বেকার করে দেয়। তখন অনেকটা জেদের বশে হাঁসপালন শুরু করেন। জেদ কার সঙ্গে? প্রশ্ন শুনে সহাস্যে শামসুল বলেন, ‘যে পানিতে ধান নিল, হেই পানিই তো হাঁস পালার সুযোগ করি দিল...!
শামসুলের প্রতিবেশী শিবপুরের ধীরেন্দ্র বিশ্বাস জানান, গৃহস্থ পরিবারের কোনো সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে সাধারণত ফসলাদি নিয়েই কথা হয়। কিন্তু শামসুলের সঙ্গে কারও সাক্ষাৎ হলে কুশলাদি বিনিময়ের পর পরই ‘হাঁসের খবর কিতা...?’ বলে জানতে চান অনেকে।
ফসল হারিয়ে একজন শামসুলের হাঁসপালনের এ উদ্যোগ ঘুরে দাঁড়ানোর অনন্য একটি চেষ্টা বলে অভিহিত করেন সিলেট কৃষক কল্যাণ সংস্থার আহ্বায়ক আবদুল হান্নান আনসারী। তাঁর মতে, হাওরাঞ্চলে বর্ষার এ সময়টা হচ্ছে অলস সময়। কিন্তু এবারকার চিত্র ভিন্ন। ফসলডুবির পর কৃষক পরিবারে সেই আরাম-আয়েশ আর নেই। হাওরে হাঁসপালন প্রতি গৃহস্থ পরিবারেই বিচ্ছিন্নভাবে দেখা যায়। হাওরপারের মানুষের এ উদ্যোগ, এই শিক্ষা কোনো দপ্তর দেয়নি, প্রকৃতি থেকে অর্জিত।

তথ্য সূত্রঃ প্রথম আলো, তারিখ: ২২-১০-২০১০

মরিচ

Thursday, October 21, 2010


মরিচ কী জিনিস, ইউরোপীয়রা তা জেনেছে খুব বেশিদিন আগে নয়_ এমন ধারণা বিলকুল ভুল। চূর্ণকৃত গোলমরিচ খাওয়ার অভ্যাস তাদের দীর্ঘদিনের। গ্রিক ও রোমান সভ্যতার যুগে ঝালযুক্ত খাবারের প্রচলন ছিলো। ইউরোপে গোলমরিচ আমদানি হতো এশিয়ার মসলা দ্বীপপুঞ্জ থেকে। আর এই বস্তুটিই সচল রেখেছিলো আলেকজান্দ্রিয়া, জেনোয়া ও ভেনিস বন্দরের অর্থনীতিকে। মধ্যযুগে এসে গোলমরিচ বনে যায় বিলাসী পণ্য। তখন শস্যের বিনিময়ে এটি কিনতে হতো এবং সেজন্য আলাদা ভাড়া আর করও গুনতে হতো। অটোমান সাম্রাজ্যের উত্থানের ফলে এশিয়াতে আসার ভূমি ও নৌপথগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলো। যে কারণে ভারতে পৌঁছার নতুন পথ খুঁজতে শুরু করলো ইউরোপীয় বণিকরা। উদ্দেশ্য ছিলো_ গোলমরিচ ছাড়াও অন্যান্য আকর্ষণীয় মসলা এবং রেশম ও আফিম সংগ্রহ করা।

ভারতে পেঁৗছার পশ্চিমাভিমুখী রাস্তা খুঁজে পেতে ক্রিস্টোফার কলম্বাস ১৪৯২ সালে যাত্রা শুরু করেছিলেন স্পেন থেকে। ইউরোপের রন্ধনকে নিশ্চিত করাই ছিলো তার লক্ষ্য, রন্ধনের কোনো পরিবর্তন নয়। কিন্তু ঘটনাক্রমে তার এ সফরের মাধ্যমেই ইউরোপের রান্নার প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন সূচিত হয়েছিলো। ইতালিয়ান নাবিক কলম্বাসের ভারত পৌছানোর সৌভাগ্য আর হয়নি। নতুন যে জায়গায় তিনি গেলেন, সেখানে সন্ধান পেলেন এক অভিনব রঙিন বস্তুর (যার বাংলা নামকরণ মরিচ)। কয়েক বছরের মধ্যেই দক্ষিণ ইউরোপের খাবারে মরিচের স্বাদ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিলো। এই মরিচ ভারত, চীন এবং থাইল্যান্ডের রন্ধন প্রণালীতেও বিপস্নব ঘটিয়ে দিতে খুব একটা সময় নেয়নি।

মরিচ শব্দের ইংরেজি হচ্ছে 'চিলি'। উচ্চারণ অভিন্ন হলেও বানানে রয়েছে রকমফের (Chili, Chilli, Chile, Chile Pepper) । কিন্তু বানান ও নামে কী আসে যায়! বৈশ্বিকরণ গল্পের আগ্রহ-সঞ্চারক অধ্যায় হলো মরিচ। এতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ইতিহাস পৃথিবীর অন্য কোন খাবারেরই নেই। কতো অঞ্চলের, কতো লোক যে এখন মরিচ ভক্ষণ করছে, তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই। চীন, ভারত কিংবা থাইল্যান্ডের মরিচপ্রেমীকে জিজ্ঞেস করলে উত্তর একটিই আসবে, 'মরিচ আমাদের দেশজ বস্তু, আমাদের মাতৃভূমির অবিচ্ছেদ্য অংশ। পুরোপুরি মিশে আছে আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে। ইউরোপ ও আমেরিকায় মরিচ আসক্তের সংখ্যা কম, কিন্তু তারাও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে ঝালের ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে।

কয়েকশ কোটি লোকের পেট ভরায় ধান এবং গমের মতো শস্য। এগুলোর সঙ্গে মরিচের কোন তুলনা চলে না, এমনকি আলুর সঙ্গেও নয়। কিন্তু মূল উপকরণে ঝাল যুক্ত করে গরিবী খানাতেও একটু বড়লোকি আমেজ দিতে মরিচের জুড়ি নেই। কোটি কোটি লোকের কাছে মরিচই একমাত্র বিলাসী উপকরণ, যা তারা নিত্যদিন যোগাড় করতে পারে। এশিয়ার বস্তি থেকে শুরু করে পশ্চিম আফ্রিকার গো-চরণ ভূমিতেও বস্তুটির দেখা মেলে। বর্ণিল খোসার ভেতরই যতো রহস্য। রাসায়নিকগুলো ঝাল উৎপাদন করার মাধ্যমে নিজের প্রতি মানুষকে আসক্ত করে ফেলে। বিখ্যাত ভারতীয় কুক মধুর জেফরি মনে করেন, একবার ঝাল খাবারের স্বাদ নিলে আর পেছনে তাকানোর উপায় নেই। আস্তে আস্তে অভ্যাসে পরিণত হবে। ঝাল না খেলে তখন আর ভালোই লাগবে না।

উৎস দক্ষিণ আমেরিকায়, অধিকাংশ মরিচ বিশেষজ্ঞই এ ব্যাপারে একমত। চিলি নামের দেশটিই তো তার বড় প্রমাণ। ছয় হাজার বছর আগেও দক্ষিণ আমেরিকায় মরিচ উৎপাদিত হতো এবং এর বেচাকেনা চলতো। ওয়াশিংটনের ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্টরির আর্কিওবায়োলজি বিভাগের পোস্ট ডক্টরাল ফেলো লিনডা পেরি ক্যারিবীয় অঞ্চলসহ ভেনিজুয়েলার মরিচের মাইক্রোফসিল চিহ্নিত করেছেন। এই ভদ্রমহিলার দেয়া তথ্যানুসারে, ৬ হাজার ২শ' ৫০ বছর আগে ইকুয়েডরের দক্ষিণাঞ্চলে মরিচের আবাদ হতো। তখন পর্যন্ত ইকুয়েডরের দক্ষিণাঞ্চলে জংলি মরিচের দেখা মেলেনি। পেরু কিংবা বলিভিয়া থেকে মরিচ গিয়েছিলো এই দেশটিতে। পুরো দক্ষিণ আমেরিকা জয় করার পর সেন্ট্রাল আমেরিকাতে পৌছুতেও খুব বেশি সময় লাগেনি এটির। লিনডা পেরি গবেষণায় পেয়েছেন যে, মরিচ সবার আগে ব্যবহার করেছিলো ব্রাজিল।

মরিচ ক্যাপসিকাম বর্গে অন্তভর্ুক্ত এবং নাইটশেড পরিবারের সদস্য। একই পরিবারে রয়েছে টম্যাটো, আলু ও বেগুন গাছ। ক্যাপসিকামের ২৫টি প্রজাতির মধ্যে মাত্র পাঁচটির আবাদ হয়। দক্ষিণ আমেরিকায় অধিকাংশ বনমরিচের দেখা মেলে এখনও। ক্লাসিক বাঁকা লাল অথবা সবুজ মরিচের ব্যবহার হয় মেক্সিকোর রান্নায়। থাইল্যান্ডের লোকজন যেটি ব্যবহার করে সেটি দেখতে বুলেটের মতো, কিন্তু নাম 'বার্ডস আই'। কোনো কোনোটি দেখতে মটর কিংবা হূৎপিন্ডের মতো রং পাল্টে হয়ে যায় একেক স্তরে একেক রকম। তবে মরিচের সাধারণ রঙগুলো হলো_ বিবর্ণ লাল, হলুদ, কালো, উজ্জ্বল কমলা এবং লেবু সবুজ। নিউ মেক্সিকো ইউনিভার্সিটির চিলি পিপার ইনস্টিটিউটের পল বসল্যান্ডের মন্তব্য, হাজারো রকমের মরিচ আছে। নিত্য-নতুন ধরন আবিষ্কৃত হচ্ছে প্রায়ই। মিষ্টি সবুজ ও হলুদ মরিচ এবং ক্যাপসিকামের ব্যবহার হয় সালাদে। অনেকে বেছে নেয় সরাসরি তরকারি হিসেবে।
পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষ দিকে কলম্বাস পৌঁছুলেন ক্যারিবীয় অঞ্চলে। আমেরিকা জুড়ে তখন মরিচের ব্যাপক প্রচলন। আবিষ্কৃত জগৎ থেকে ফিরে আসার সময় ভয়ংকর স্বাদযুক্ত নতুন মসলাটি নিতে ভুললেন না কলম্বাস। নিজেরা এর প্রেমে পড়েননি খুব দ্রুত, কিন্তু বংশবিস্তার করান সোৎসাহে। পতর্ুগীজ বণিকরা এটি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন পশ্চিম আফ্রিকা, ভারত এবং পূর্ব এশিয়ায়। কলম্বাসের আমেরিকা পৌঁছানোর ৩০ বছরের মধ্যেরই ভারতের পশ্চিম উপকূলে পর্তুগীজ উপনিবেশ গোয়ায় তিন ধরনের মরিচ চাষ করা হয়েছিলো। থাইল্যান্ডে কিছুদিনের উপস্থিতিতে পর্তুগীজরা স্থানীয়দের খ্রিস্টান বানাতে সমর্থ না হলেও রান্নাঘরে ঠিকই বিপস্নব ঘটিয়ে দিয়েছিলো। ইউরোপীয় ব্যবসায়ীরা মরিচ নিয়ে গিয়েছিলেন জাপান, ইন্দোনেশিয়া, তিব্বত ও চীনে। ৫০ বছরের মধ্যে মরিচ ছড়িয়ে পড়ে পুরো ইউরোপে। ঝাল মরিচ আসার কারণে ভারতে গোলমরিচের ব্যবহার এক পর্যায়ে প্রায় উঠেই গিয়েছিলো।

মাঝে মরিচের ব্যবহার প্রায় ভুলতেই বসেছিলো ইউরোপ। সাম্প্রতিক সময়ে অভ্যাসটা আবার ফিরে এসেছে ইন্ডিয়ান ও থাই রেস্টুরেন্টগুলোর কল্যাণে। ব্রিটিশদের কাছে ভারতীয় খাবার এখন খুবই পছন্দের। সময় ও সুযোগ পেলেই তারা ভারতীয়দের দোকানে ঢু মারে। ২০০১ সালে ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী রবিন কুক তার পছন্দের খাবারের নাম বলতে গিয়ে চিকেন টিক্কা মাসালার উলেস্নখ করেছিলেন। এ খাবারটি এখন ব্রিটিশ নারীরাও তৈরি করতে পারেন। চিকেন, ক্রিম ও টমেটোর সঙ্গে মরিচসহ অন্যান্য মসলা মিশ্রণ করতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক হাজার বছর আগে মরিচের প্রচলন শুরু হলেও এখন তারা নিজেদের তৈরি খাবারে খুব একটা ঝাল দেয় না। তবে ভোজনরসিকদের সপ্তায় অন্তত একদিন মেক্সিকান খাবার চাই-ই চাই। মেক্সিকান খাবারে যে ঝাল থাকে সে কথা সবাই জানে।

ঝাল পরিমাপেরও ব্যবস্থা আছে। আমেরিকান কেমিস্ট উইলবার ১৯১২ সালে ঝাল মাপার স্কেল আবিষ্কার করেন। তার নামানুসারেই নামকরণ হয়েছে স্কভিল হিট ইউনিটস (এস এইচ ইউ)। পৃথিবীর অনেক মরিচের এসএইচইউ হচ্ছে শূন্য। ইতালিয়ানরা পাস্তা তৈরিতে ৫০০ এস এইচ ইউ-এর পিপারোনসিনো নামক মরিচ ব্যবহার করে। থাইল্যান্ডের রান্নায় ব্যবহার করা মরিচের গড় এসএইচ ইউ এক লাখ। দুই লাখের বেশি হলে যে চোখ দিয়েই জল ঝরবে। ঝালের রেকর্ডটি দীর্ঘদিন ধরে রেখেছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ার এক বাণিজ্যিক মরিচ ব্যবসায়ী। তার ক্ষেতে উৎপাদিত হচ্ছিলো ৫ লাখ ৭৭ হাজার এসএইচইউ'র মরিচ। উৎপাদিত বস্তুর নাম দিয়েছিলেন তিনি 'রেড সাবিনা'।

আগের সব রেকর্ড মস্নান করে দিয়েছে ভারতের 'ভূত জলোকিয়া'। যার বাংলা অর্থ ভূত মরিচ। এর দেখা মেলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। সেনা শহর তেজপুরের ডিফেন্স রিসার্চ ল্যাবরেটরি ২০০০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঝালের শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করে বসে। প্রথমে তাদের কথা কেউ কানেই তুলছিলো না। ২০০৫ সালে ঝালের তীব্রতা পরীক্ষা করতে রাজি হয় নিউ মেক্সিকো চিলি ইনস্টিটিউট। ফলাফল আসে অবিশ্বাস্য, ৮ লাখ ৫৫ হাজার এসএইচইউ। এখানেই শেষ নয়, নাগাল্যান্ডের আদিবাসীরা 'নাগা চিলি' নামের এক প্রকার মরিচ খায়, যার এসএইচইউ ১০ লাখেরও (আনুমানিক) বেশি। আদিবাসীরা শখে খায় না এটি, তরকারি রান্না করে নিয়মিতভাবে। তবে নাগা চিলির ঝালের তীব্রতা এখনো পরীক্ষিত হয়নি। খুব শিগগিরই এটিকে পাঠানো হবে নিউ মেক্সিকো চিলি ইনস্টিটিউটে।

তেজপুরের ডিফেন্স রিসার্চ ল্যাবরেটরির পরিচালক আরবী শ্রীবাস্তবা টাইম ম্যাগাজিনকে জানিয়েছেন, ভূত জলোকিয়া (ঠযঁঃ লড়ষড়শরধ) ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে খুবই জনপ্রিয়। মরিচের রাজা বলা হয় এটাকে। বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এই মরিচকে ঘিরে উৎসবও হয়। অদ্ভুত কথা বলেছেন তিনি-টিয়ার গ্যাসে ভূত জলোকিয়া ব্যবহার করা যেতে পারে। দাঙ্গার সময় একটি ছেড়ে দিলে এক কিলোমিটার অঞ্চলে আর কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়ার আগে সৈন্যদের একটি খাইয়ে দিলে দ্বিগুণ তেজে যুদ্ধ করবে। তবে সতর্ক সংকেত শুনিয়েছেন, 'অনভ্যস্ত কাউকে খাওয়ালে টয়লেট হয়ে যাবে তার স্থায়ী ঠিকানা। পাঁচ সেন্টিমিটার লম্বা ভূত জলোকিয়ার রঙ পোড়াটে হলুদ। স্বাভাবিক মরিচের তুলনায় এটি ব্যবহার করতে হয় এক-দশমাংশ। আনাড়ি যে কেউ একটি চিবিয়ে খেলে সারাদিনের জন্য তার জিহবাটাকে অচেতন মনে হতে পারে। ক্রিস্টোফার কলম্বাস আমেরিকা থেকে আলু ও ট্যামেটোসহ অনেক শাক-সবজি নিয়ে গিয়েছিলেন স্পেনে, কিন্তু কোন কিছুই মরিচের মতো এতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারেনি। পাঁচশত বছর পর মরিচ আজ সারা বিশ্বে রাজত্ব করছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে; ঝালের প্রতি আমাদের এতো মোহ কেন? যে জিনিস খেলে আমরা আহত হই, সেই জিনিস আমরা খাই কেনো? প্রশ্ন দুটির সুনিশ্চিত উত্তর কারওই জানা নেই।

আজ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ

Friday, October 15, 2010


আজ শুক্রবার থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত ডিম ছাড়ার মৌসুমে উপকূলীয় এলাকায় ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এই দুই সপ্তাহ যেসব স্থানে ইলিশ মাছ ডিম ছাড়ে, সেসব স্থান থেকে মাছ না ধরতে জেলেদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ সরকারের এ নির্দেশ না মানে, তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে সরকার।
গতকাল মৎস্য ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস এসব কথা জানান। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, গত বছর ইলিশের ডিম ছাড়ার ভরা মৌসুমে মাছ ধরা নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছিল। তাই গত বছরের চেয়ে এবার ১৮ হাজার টন বেশি ইলিশ মাছ উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া এবার রপ্তানিও হয়েছে গতবারের চেয়ে দ্বিগুণ, অর্থাৎ প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘কাউকে শাস্তি দেওয়া আমাদের লক্ষ্য নয়, আমরা চাই জেলেদের সচেতন করতে। যদি ভরা মৌসুমে ইলিশ না ধরা হয়, তবে মাছ বেশি পাওয়া যাবে। আর ইলিশের উৎপাদন বাড়ার ফলে লাভবান হবেন জেলেরাই।’ প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ার পরও মাছের দাম এত বেশি কেন জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, দাম এখন আগের চেয়ে অনেক কম।
মন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, এবার যদি ডিম ছাড়ার মৌসুমে মাছ ধরা বন্ধ রাখা যায়, তবে ভবিষ্যতে ইলিশের দাম আরও কমবে।

তথ্য সূত্রঃ প্রথম আলো, তারিখ: ১৫-১০-২০১০

রায়পুরে ৫০ হেক্টরের পানের বরজ নষ্ট

Thursday, October 14, 2010


সাম্প্রতিক নিম্নচাপের সময় অস্বাভাবিক জোয়ার ও টানা বর্ষণে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ৫০ হেক্টর জমির পানের বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে পানচাষিদের প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আর পান চাষের ওপর নির্ভরশীল এখানকার ৬০০ পরিবার চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার উত্তর চর আবাবিল, দক্ষিণ চর আবাবিল, উত্তর চরবংশী ও রায়পুর ইউনিয়নের ৩১০ হেক্টর জমিতে প্রায় আড়াই হাজার পানের বরজ আছে। এসব ইউনিয়নের ৬০ শতাংশ লোক পান চাষ এবং পানের ব্যবসার ওপর নির্ভরশীল। একেকটি পানের বরজ তৈরি করতে ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা ব্যয় হয়। সাম্প্রতিক নিম্নচাপের সময় টানা তিন দিনের বৃষ্টি এবং অস্বাভাবিক জোয়ারের সময় অনেক বরজে পানি উঠে যায়। এতে ৮১ লাখ ৬৭ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে বেসরকারি হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকারও বেশি।
চর আবাবিল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন মাঝি জানান, পানচাষিদের ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকারও বেশি হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকবাল বলেন, ৫০ হেক্টর জমির পানের বরজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পানচাষিদের তালিকা করা হচ্ছে।

তথ্য সূত্রঃ প্রথম আলো, তারিখ: ১৪-১০-২০১০

খামারির ক্ষতি, শিকারির লাভ


চার দিনের টানা বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারে ভোলার ৯০ শতাংশ পুকুর ও ঘের ডুবে গিয়ে মাছ ও চিংড়ি ভেসে গেছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মৎস্য খামারিরা। তাঁদের প্রায় ১২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। অপরদিকে ভেসে যাওয়া মাছ ধরে লাভবান হচ্ছেন শিকারিরা। তাঁরা বিভিন্ন জাল দিয়ে সাত দিন ধরে প্রচুর মাছ ধরছেন।
জেলার লালমোহন পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সহিদুল ইসলাম জানান, তাঁর উত্তর ফুলবাগিচা ও দত্তপাড়ার ইজারা নেওয়া পুকুর ডুবে দুই লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। লালমোহনের ৯৫ শতাংশ পুকুর ডুবে গেছে বলে জানান তিনি।
দৌলতখান উপজেলার সৈয়দপুর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কাশেমের চারটি বড় পুকুর ডুবে গিয়ে ১২ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। ভবানীপুর ইউনিয়নের আবুল কালাম ও মো. জাকির হোসেনের তিনটি পুকুরের মাছ ভেসে গিয়ে প্রত্যেকের দুই লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দৌলতখানের মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামাল জানান, এ উপজেলায় প্রায় সাড়ে সাত হাজার পুকুর ও ঘের ডুবে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
৭ অক্টোবর ভোর থেকে ভোলা শহরের খালে, কালীবাড়ি রোড, পাখিরপুল, আগারপুল, আবহাওয়া অফিস রোড, অফিসার পাড়া ও ভোলা-দৌলতখান-বোরহানউদ্দিনের বিভিন্ন সড়কে, খালে-বিলে, উঠানে, নর্দমায় শিকারিদের মাছ ধরতে দেখা গেছে। গতকাল বুধবারও এসব শিকারিকে কারেন্ট জাল, ধর্মজাল, ঝাইজাল দিয়ে মাছ ধরতে দেখা গেছে। শিকারিদের মধ্যে এক ধরনের উৎসবের আমেজ লক্ষ করা গেছে।
১০ অক্টোবর থেকে ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের বোর্ডের ঘর এলাকায় সুলতান ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা মিলে প্রতিদিন প্রচুর মাছ ধরছেন। গত তিন-চার দিনে তাঁরা কয়েক হাজার টাকার মাছ বিক্রি করেছেন।
মাছ ধরছিলেন মুছাকান্দি এলাকার আবদুল ওয়াদুদ। তিনি বলেন, ‘কিচ্ছু নাই। আমার চাইড্ডা পুকুরের পাঁচ লাখ টাকার মাছ শ্যাষ। দেড় কানি (দুই একর ৪০ শতাংশ) খেতের ফসল, বাড়ির হাঁস-মুরগি সব শ্যাষ। এ্যাহোন মাছ ধরি, কিছু বিক্রিও করি।’ ওই এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণপদ দে ও ভবরঞ্জন ঝাইজাল দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার টাকার মাছ ধরছেন বলে দাবি করেছেন। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রতিশ চন্দ্র মল্লিক বলেন, ভোলার প্রায় ৫০ হাজার পুকুর ও ঘের ডুবে গিয়ে ১২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে কমপক্ষে ২০ হাজার শিকারি ভেসে যাওয়া ওই সব মাছ ধরছেন।

তথ্য সূত্রঃ প্রথম আলো, তারিখ: ১৪-১০-২০১০

টাঙ্গাইলের মধুপুরে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ


বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটি শীতকালীন সবজির নাম টমেটো। পুষ্টিমান আর স্বাদের কারণে সব মানুষের প্রিয় এ সবজিটির চাষ এ দেশে শুধু শীতকালেই হয়ে থাকে। সারা বছর এর ব্যাপক চাহিদা ও পুষ্টিমানের কথা ভেবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবন করেছে উচ্চতাপসহিষ্ণু টমেটোর জাত।
এই টমেটো দুই বছর আগে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে চাষ হলেও বর্তমানে তা অনেকটা জনপ্রিয় এবং লাভজনক হয়ে উঠেছে।
দরিদ্র কৃষকেরা যাতে স্বল্প পুঁজিতে ও স্বল্প জমিতে এই টমেটো চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারেন, সেই লক্ষ্যে ‘ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ’ শোলাকুড়ি ইউনিয়নের বাঘাডোবা এলাকায় প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে এ জাতের টমেটো চাষ শুরু করে। বর্তমানে বাঘাডোবা ছাড়াও সুবকচনা গ্রামের কৃষকেরা বাড়ির আঙিনায় ও আবাদি জমিতে শেড তৈরি করে বারি-৪ ও বারি-৫ জাতের টমেটোর চাষ করছেন। ফলনও ভালো হচ্ছে। চাষিরা জানান, প্রতি শতাংশ জমিতে তাঁরা ৩০০ কেজি টমেটো পেয়েছেন। বিক্রিও হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে।
হাইব্রিড জাতের টমেটো ব্যাপকভাবে চাষ করে এ এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অনেকে স্বাবলম্বী হতে পারবেন—এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তারা।

তথ্য সূত্রঃ প্রথম আলো, তারিখ: ১৪-১০-২০১০

হিংসার বলি ২৯০টি গাছ

Monday, October 11, 2010


পাবনা সদর উপজেলার মালঞ্চি ইউনিয়নের ফকিরপুর গ্রামের সোহাগী বেগম নামের এক নারীর বাগানের ২৯০টি মেহগনি ও সুপারিগাছ কেটে ফেলেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। গত শুক্রবার রাতের এ ঘটনায় সোহাগীর ভাই আসাদুজ্জামান তাঁর তিন মামা ও দুই মামাতো ভাইকে আসামি করে পাবনা সদর থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ শনিবার রাতে আবুল কালাম ও আবদুর রশিদ নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালে সোহাগী বেগম তাঁর নানার কাছ থেকে জমি কিনে সেখানে মেহগনি ও সুপারিগাছের বাগান করেন। বাগানের গাছগুলো যখন বড় হতে থাকে তখন তাঁর মামারা গাছসহ জমিটি ফেরত চান। সোহাগী জমি ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানালে শুক্রবার রাতে তাঁর মামা আবুল কালাম, আবদুর রশিদ, আবদুস সালাম এবং মামাতো ভাই সফর আলী ও আবদুস সবুর ক্ষিপ্ত হয়ে বাগানের ২৯০টি মেহগনি ও সুপারিগাছ কেটে ফেলে।
সোহাগী বেগম জানান, তাঁর অভাবের সংসার। বিদেশ থেকে স্বামীর পাঠানো টাকায় তাঁর নানার কাছ থেকে জমিটি কিনে বাগান করেছিলেন। তাঁর স্বপ্ন ছিল, বাগানের গাছ বিক্রি করে সংসারের অভাব দূর করবেন। কিন্তু মামাদের হিংসায় তাঁর স্বপ্ন ভেঙে গেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাবনা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. কবিরুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে তৎপর রয়েছে।

টমেটো ফলাতে ভরসা ‘ডোফ’

Friday, October 8, 2010


খেত থেকে উর‌্যাপাদিত টাটকা টমেটোর কেজি ছিল দুই টাকা। এ দামে চাষবাসের খরচও না ওঠায় ক্ষতির মুখে পড়ে গত শীত মৌসুমে খেতের টমেটো রাস্তায় ফেলে বিক্ষোভ করেছিলেন সিলেটের বাইয়ারপাড়ের টমেটোচাষিরা। এবার টমেটো ফলাতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। ঘন ঘন বৃষ্টি হওয়ায় টমেটোর চারা দফায় দফায় মরে যাচ্ছে।
চারাকে বাঁচিয়ে রাখতে চাষিদের চিরাচরিত পদ্ধতি ‘ডোফ’ (স্থাপনা) দিয়েও শেষ রক্ষা হচ্ছে না। কান্দিগাঁওয়ের বাদেআলী গ্রামের আবদুল আউয়াল তাঁর নিজের বাড়ির আঙিনায় পলিথিন মোড়ানো টমেটো চারার ‘ডোফ’ দেখিয়ে বলেন, ‘গেলবার বিপদে পড়ছিলাম টমেটো ফলাইয়া (ফলন) আর ইবার পড়ছি ফলাইতে গিয়া!’
সিলেট সদর উপজেলার সুরমার শাখা বাইয়া নদীর তীরবর্তী চারটি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামে শীতকালীন সবজির চাষ হয়। গত মৌসুমে ওই এলাকায় সবচেয়ে বেশি টমেটোর চাষ হয়েছিল। স্থানীয় সবজির বাজারে চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি হওয়ায় টমেটোর দরপতন ঘটে। একপর্যায়ে দুই টাকা কেজিতে গিয়ে দাঁড়ালে বাইয়ারপাড়ের টমেটোচাষিরা গত ৯ মার্চ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় সাড়ে তিন হাজার কেজি টমেটো ফেলে অভিনব কায়দায় বিক্ষোভ করেছিলেন। সেই বিক্ষুব্ধ টমেটোচাষিরা এবার ফলনে উর‌্যাসাহিত কি না—সরেজমিনে দেখতে গিয়ে টমেটো ফলাতে ডোফ পদ্ধতি অবলম্বনের চিত্র চোখে পড়ে।
টমেটোচাষিরা জানান, গতবার এমন সময় টমেটো চারা রোপণ করে ফলন তোলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এবার চলতি মাসজুড়ে বৃষ্টি থাকায় সবাইকে ‘ডোফ’ পদ্ধতি অবলম্বন করা ছাড়া কোনো ভরসা পাচ্ছেন না। অনন্তপুরের আহমদ আলী জানান, বাইয়ারপাড়ের বাদেআলী, অনন্তপুর, পূর্বঊষা, মীরেরগাঁও, সদরখলা ও পাইকারীগাঁওয়ে অন্তত সহস্রাধিক ‘ডোফ’ দেওয়া হয়েছে।
গত শীত মৌসুমে দরপতনে টমেটোচাষিদের বিক্ষোভে একাত্ম হওয়া সংগঠন সিলেট কৃষক কল্যাণ সংস্থার আহ্বায়ক আবদুল হান্নান আনসারী জানান, দাম কম হওয়ার কারণে টমেটো চাষে এবার চাষিরা নিরুর‌্যাসাহিত ছিলেন। এর পরও আগাম চাষবাসের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে যাঁরা টমেটো চাষে এগিয়ে এসেছিলেন, তাঁরা পড়েছেন এখন বিপাকে। একটি ডোফ তৈরিতে প্রায় ৩০০ টাকা অতিরিক্ত খরচ হয়। এ ক্ষেত্রে চাষিদের ফলনের ধারাবাহিকতা রক্ষায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সিলেট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সবিনয় ভট্টাচার্য বলেন, মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় চাষিরা নিজস্ব প্রযুক্তিতে ফলন অব্যাহত রেখেছেন এবং এ ক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ থেকে যথাসাধ্য সহায়তা করা হবে।

সূত্রঃ প্রথম আলো (তারিখ: ০৮-১০-২০১০)

এক ডিলারের জন্য ভোগান্তি আড়াই হাজার কৃষকের


সুখচর ও নলচিরা ইউনিয়নের কৃষকদের চার-পাঁচ কিলোমিটার দূরের চরকিং ইউনিয়নের আফাজিয়া বাজারে এসে সার কিনতে হচ্ছে। এতে ভ্যানে করে সার আনতে গিয়ে তাঁদের অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হচ্ছে। ওই দুই ইউনিয়নের দায়িত্ব পাওয়া সার ডিলারের গাফিলতির কারণে এ দুই ইউনিয়নের আড়াই হাজার কৃষক চার বছর ধরে সার কিনতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
সুখচর ইউনিয়নের কৃষক এমরান উদ্দিন বলেন, এক বস্তা ইউরিয়া সার আফাজিয়া বাজার থেকে কিনে বাড়ি পৌঁছাতে ৪০ টাকা ভাড়া দিতে হয়। এভাবে চার বছর ধরে সারের জন্য বাড়তি খরচ হচ্ছে।
নলচিরার কৃষক মনির, মালেক, জামাল ও নবীর জানান, আফাজিয়া বাজার থেকে সার আনতে তাঁদের অতিরিক্ত টাকা লাগে। অনেক সময় টাকা জোগাড় করতে না পারায় তাঁরা জমিতে সময়মতো সার দিতে পারেন না। এতে তাঁদের জমিতে প্রতি মৌসুমেই ফসল উর‌্যাপাদন কম হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ে ২০০৭ সালের ২২ নভেম্বর এক সভা হয়। সভায় নদী ভাঙনের কারণে আয়তন কমে যাওয়ায় সুখচর ও নলচিরা ইউনিয়নকে একটি ইউনিয়ন হিসেবে গণ্য করে আনিস ব্রাদার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে সার ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়। এ সময় আনিস ব্রাদার্সের সার বিতরণকেন্দ্র সুখচর ইউনিয়নের রামচরণ বাজারে নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু আনিস ব্রাদার্স এ আদেশ অমান্য করে পাশের চরকিং ইউনিয়নের আফাজিয়া বাজারে সার বিক্রি করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবুল খায়ের বলেন, ‘মেসার্স আনিস ব্রাদার্সকে তার জন্য নির্ধারিত রামচরণ বাজারে সার বিক্রির নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি এ নির্দেশ না মেনে আফাজিয়া বাজারে এসে সার বিক্রি করছে।’
হাতিয়ার বর্তমান ইউএনও হারুন অর রশীদ জানান, আনিস ব্রাদার্সকে তার জন্য নির্ধারিত বিতরণকেন্দ্র রামচরণ বাজারে সার বিক্রির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ অমান্য করলে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আনিস ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী সার ডিলার জোবায়ের হোসেন জানান, সুখচর ও নলচিরা ইউনিয়নের রাস্তাঘাট ভালো না হওয়ায় তিনি চরকিং ইউনিয়নের আফাজিয়া বাজারে সার বিক্রি করছেন। সরকারি নির্দেশ অমান্য করে রামচরণ বাজারের পরিবর্তে কেন আফাজিয়ায় সার বিক্রি করছেন, জানতে চাইলে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি।

সূত্রঃ প্রথম আলো (তারিখ: ০৮-১০-২০১০)

বিলিম্বি

Thursday, October 7, 2010


বিলিম্বি ফলের সাথে বা এই নামের সাথে অনেকেই পরিচিতনয়।স্থানভেদে এ নামের ভিন্নতা আছে।যেমন- সিলেটে এটাকেবলা হয় ‘বেলেম্ব’এর গুণাগুণ ওউপকারিতা বহুমাত্রিক
বেলেম্বু গাছ দেখতে অনেকটা লেবুর গাছের মত।কামরাঙ্গা পরিবারেরএ গাছের পাতা, ফুল ও ফল দেখতে খুবই সুন্দর।গাছে নতুন পাতাগজালে সে পাতাকেও আবার ফুলের মত মনে হয়।গাছ প্রায় একই রকমতবে ফল আকারে লম্বা-২/৩ ইঞ্চি, রঙ সবুজ।দেখতে আঙুরের মত হলেও সুন্দর।এ ফলটি কাঁচাঅবস্থায় খুব টক হলেও রান্নার পর বা চাটনি কিংবা আচার তৈরি করার পর টক থাকেনা।পুষ্টিমানে আমিষ, শ্বেতসার, চর্বি, খনিজ, ভিটামিন, কারোটিন, ক্যালোরি সবইআছে।রক্তচাপ ও ডায়াবেটিকসের ঝুঁকি কমাবার প্রতিশ্র“তিও রয়েছেএতে।বীজথেকে এর বি¯-ার ঘটে।এপ্রিল থেকে নভেম্বরপর্যন্ত- এ গাছে প্রচুর ফল আসে।নিয়মিত পাতা ওডালপালা পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখলে সারা বছরই এ গাছ থেকে ফল পাওয়া যায়।শীতকালে বিলিম্বিগাছের পাতা ঝরে পড়ে তবে বসšে-র আগমণে আবার নতুন কুঁড়ি ও পাতা গজাতে থাকে।একটি পূর্ণ গাছেবছরে প্রায় ৩০০ কেজি বিলিম্বির ফলন হয়।
বিলিম্বি দেশের বিভিন্ন জেলায় পাওয়া যায় তবেকুমিল¬া, চট্টগ্রাম অঞ্চলে এর ফলন বেশি।ইদানিং সিলেটঅঞ্চলেও এর প্রচুর ফলন হয়।বিলিম্বি ছোট মাছ, বড় মাছের মাথা বা মাছের ডিম দিয়ে রান্না করেখেলে স্বাদ অনেকগুণ বেড়ে যায়।ডাল বা মাংশতেও বিলিম্বি ব্যবহার করা যায়।একটি বিলিম্বি গাছবাড়িতে থাকলে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে সারা বছরই পাড়া প্রতিবেশীদের মধ্যে বিলি করাযায়।অপ্রচলিত এ ফলটি এখন বাজারে প্রচুর পরিমাণে পাওয়াযায়।বিক্রিও হয় বেশ চড়া দামে।পরিচিতি বৃদ্ধিরসঙ্গে সঙ্গে এর চাহিদাও বাড়ছে দিনে দিনে।
বীজ থেকে চারা উৎপাদনকরে তা রোপণ করলেই খুব স্বল্প সময়ে বড় হয়েথাকে।দো-আঁশ মাটিতে অবশ্য ভাল জন্মে।বছরের যেকোন সময়েবিলিম্বি চারা রোপণ করা যায় তবে বর্ষাকালেই রোপণ করা উত্তম।চারা রোপণের জন্য ১ী ১ ী ১ গর্ত করে কিছু পচা গোবর বা পচন সার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে রোপণ করাভাল।
বাণিজ্যিকভাবে বিলিম্বি চাষ করতে হলে ৫ থেকে ৬ মিটার দূরদূর চারা রোপণ করতে হবে।ফ্রেব্র“য়ারি মার্চ মাসে গাছের চারদিকে রিং করে একবার সার প্রয়োগকরলেই ফলন অনেক বেড়ে যায়।একটি পূর্ণ গাছের চারদিকে আধা মিটার দূর রিং করে ১০ কেজিপচা গোবর তার সঙ্গে ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম এমপি ও ইউরিয়া এক সাথে মিশিয়ে প্রয়োগ করতেহয়।ফলখুব সাবধানে সংগ্রহ করতে হয়, কারণ ডালপালা খুবই নরম হয়ে থাকে।এ গাছের রোগবালাই বাপোকা মাকড়ের আক্রমণের সম্ভবনা নেই বললেই চলে।

লেখকঃ আফতাব চৌধুরী - সিলেট

এলাচ

এলাচ ফুল

এলাচি এক প্রকার মসলা জাতীয় সুগন্ধি ভেষজ গাছ। এলাচ শুধু রান্নার স্বাদই বাড়ায় না৷ পানের স্বাদও বাড়ায়৷ তাছাড়া এলাচের অনেক ভেষজ গুণ রয়েছে৷ যা আমাদের শরীরে নানা সমস্যা দূর করে৷ চলুন এলাচ দু রকমের হয়৷ বড় এলাচ ও ছোট এলাচ৷ বড় আর ছোট দুই প্রকারের এলাচই শারীরিক নানা সমস্যা দূর করে৷ এলাচ খেলে কি লাভ হবে তা জেনে নিই৷

* চোখ জ্বালা: চোখ জ্বালা হলে এলাচের দানার সঙ্গে সম পরিমাণ চিনি মিশিয়ে পিষে ঐ গুড়োটা খান উপকার পাবেন৷
* প্রস্রাবে দোষ: যদি আপনর ঠিকমত প্রস্রাব না হয় তাহলে এলাচ গুড়োর সঙ্গে মধু মিশিয়ে খান সুফল পাবেন৷
* বমি কমায় : যদি অনরবত বমি হয় তাহলে এলাচের চোকলা পুড়িয়ে ঐ ছাইটা মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খান উপকার পাবেন৷
* কৌষ্ঠকাঠিন্য ও জ্বর কমায়: এলাচ, বেল, দুধ জলের মধ্যে মিশিয়ে ভাল করে গরম করুন৷ দুধটা গরম করতে করতে যখন অর্ধেক হয়ে যাবে৷ তখন গ্যাস বন্ধ করুন৷ ঐ দুধটা উপকার পাবেন৷ কৌষ্ঠকাঠিন্য কমবে৷ জ্বরও সেরে যাবে৷
এছাড়া এলাচ হিং এর সঙ্গে মিশিয়ে ওর মধ্যে সন্ধক নুন এর জল, এরেন্ডীর তেলের সঙ্গে মিশিয়ে যন্ত্রনার স্থানে লাগান৷ ব্যথা কমে যাবে৷


অন্যান্য স্থানীয় নাম-
বাংলা: এলাচি,
ইংরেজী: Cardamom, Malabar cardamom, Ceylon cardamom
বৈজ্ঞানিক নামঃ Elettaria cardamomum
পরিবারঃ Zingiberaceae (Ginger family)
বৈজ্ঞানিক শ্রেনী বিন্যাস এইভাবে -
Scientific classification
Kingdom: Plantae
(unranked): Angiosperms
(unranked): Monocots
(unranked): Commelinids
Order: Zingiberales
Family: Zingiberaceae
Genus: Elettaria Maton
Species: E. cardamomum
Binomial name :Elettaria cardamomum (L.) Maton

টালি পাম


টালি পাম গাছটি দেখতে তাল গাছের মতো। একে ইংরেজী নাম Arecaceae বা Palmae বৈজ্ঞানিক নাম কোরিফা টালিরিয়া রক্সব (Corypha taliera)। এ গাছের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি জীবনে একবারই ফুল-ফল দেয়। এ জন্য ৫০ বছরের কাছাকাছি সময় নেয়। ফুল থেকে হবে ফল। ফল থেকে বীজ। তারপর মারা যায় গাছটি।
ঢাকা ইউনিভার্সিটির ফুলার রোডে বৃটিশ কাউন্সিল ভবনের উল্টো দিকে ইউনিভার্সিটির প্রোভিসির বাসভবন। সেখানে রয়েছে নিঃসঙ্গ একটি টালি পাম বৃক্ষ, এ পৃথিবীতে যার কোনো সঙ্গী নেই। ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমানে টালি গাছটির বয়স ৫০ বছরের কাছাকাছি। সে হিসেবে কিছুদিনের মধ্যে গাছটি ফুলে ভরে উঠবে। আর তখনই বীজ সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা যাবে হারিয়ে যেতে বসা এ প্রজাতিটি। গাছটি জীবনে একবারই ফুল দেয় এবং এরপরই মারা যায়।

টিসু কালচারের মাধ্যমেও গাছটি বিলুপ্তির দুয়ার থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে ধারণা করা হতো। বাংলাদেশের উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণা করে এমন দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, এ প্রজাতিটির টিসু কালচার হয় না।
কোরিফা টালিরিয়া ভারত উপমহাদেশের স্থানীয় প্রজাতি। আগে শ্রীলংকা, সাউথ ইনডিয়াতে এ গাছটি দেখা যেতো। ১৯১৯ সালে বিখ্যাত বৃটিশ উদ্ভিদবিজ্ঞানী ডাবলিউ রক্সবার্গ এ প্রজাতিটি প্রথমবারের মতো বৈজ্ঞানিক উপায়ে তালিকাভুক্ত করেন।
এর আগ পর্যন্ত প্রজাতিটি উদ্ভিদবিজ্ঞানের জগতে অনাবিষ্কৃত ছিল। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এই টালি পাম বৃক্ষটিকে শনাক্ত করেন বিশ্বখ্যাত প্রয়াত উদ্ভিদবিদ, ঢাকা ইউনিভার্সিটির উদ্ভিদবিজ্ঞানের শিক্ষক প্রফেসর ড. আবদুস সালাম। গত শতাব্দীর ৫০ দশকে তিনি এ গাছটি প্রথম দেখতে পান।
কিন্তু গাছটি কোন প্রজাতির তা তিনি শনাক্ত করতে পারেননি। তবে এটি যে বিরল ও দুর্লভ প্রজাতির গাছ, তা তিনি বুঝতে পারেন এবং কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন গাছটি যেন না কেটে ফেলা হয়। মূলত তার একক প্রচেষ্টার ফলেই গাছটিকে প্রোভিসির বাসভবনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
কিছুদিন আগ পর্যন্ত এ প্রজাতিটির আরেকটি গাছ ছিল পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রামে। এ গাছের ফুল দেখতে খেজুরের ছড়ার মতো। সেখানে যখন ফুল ফোটে তখন গ্রামের মানুষ ধারণা করলো এটি ভূতপ্রেতের কাজ।
ড. শ্যামল কুমার বসু নামে বিখ্যাত এক পাম বিশেষজ্ঞ এ খবর শুনে প্রচ- কৌতূহল বোধ করেন এবং গাছটি দেখতে সেই গ্রামে যান।
তিনি অপার বিস্ময়ে লক্ষ করেন, গ্রামবাসী যাকে তাল গাছ বা খেজুর গাছ বলে ধারণা করছে সেটি আসলে একটি টালি পাম গাছ। ড. বসু এ গাছটি শনাক্ত করার আগ পর্যন্ত ধারণা করা হতো, প্রজাতিটি পৃথিবী থেকে চিরবিলীন হয়ে গেছে।
তিনি গ্রামবাসীকে প্রকৃত বিষয় খুলে বলে অনুরোধ জানান, যাতে গাছটিকে রৰা করা হয়। কিন্তু কিছুদিন পরেই গ্রামবাসী গ্রাম থেকে ‘ভূত তাড়ানোর উদ্দেশ্যে’ গাছটি কেটে ফেলে।
এ ঘটনা ১৯৭৯ সালের। এরপরই বিজ্ঞানীদের বদ্ধমূল ধারণা জন্মে, এ প্রজাতিটি হারিয়ে গেছে বিশ্ব থেকে। ২০০১ সালে সেই শ্যামল বসু বেড়াতে আসেন বাংলাদেশে এবং সৌভাগ্যক্রমে টালি পাম গাছটির সংস্পর্শে আসেন। তিনি জানালেন, এটিই এ প্রজাতিটির পৃথিবীর একমাত্র গাছ। এরপর এ দেশের উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করে জানতে পারেন তার কথা সর্বাংশে সঠিক। বর্তমানে গাছটিকে একটি কংকৃটের দেয়ালের মাধ্যমে ঘিরে রাখা হয়েছে। এটিকে রক্ষা করার জন্য চলছে ব্যাপক প্রচেষ্টা। রাখা হয়েছে একজন মালি, যিনি গাছটি দেখাশোনা করেন।
ইউনিভার্সিটির প্রোভিসি প্রফেসর আ ফ ম ইউসুফ হায়দার বলেন, তিনিও উন্মুখ হয়ে আছেন কখন গাছটি ফুল দেয়।

সূত্র: দৈনিক যায়যায়দিন, ১৮ এপ্রিল ২০০৭

মাশরুম


কয়েক হাজার মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে জন্ম নেওয়া ব্যাঙের ছাতা বা মাশরুমকে নিয়ে কিন্তু মিথের অভাব নেই। এমনও শোনা যায়, চাঁদের গ্রহণ কিংবা শিখার রসায়নে পৃথিবীতে জন্ম নেয় বৈচিত্র্যময় মাশরুম। মিথ যতই থাকুক, একটা ব্যাপারে ভোজন রসিকেরা একমত, মাশরুম জাতীয় ছত্রাক খেতে খুব মজা।

সব ছত্রাকই যে সুস্বাদু তা নয়। ছত্রাকের আসল আকর্ষণই হচ্ছে তার বৈচিত্র্য। কোনো ছত্রাক মানুষের জীবন বাঁচায় আবার কোনোটা সৃষ্টি করে বিষময় বিভ্রম। কোনো কোনো ছত্রাক ফাইভ স্টার হোটেলের ডিনারের মেন্যুতে অন্যতম আকর্ষণীয় পদ আবার কোনোটা সিদ্ধই হয় না!

আধুনিক মাশরুম কালচার পরিণত হয়েছে একটি লাভজনক ব্যবসায়। অবশ্য অনাদিকাল থেকেই প্রকৃতি উদারভাবে জন্ম দিয়েছে অসংখ্য মাশরুমের। এসব বন্য অথচ প্রায় বিশুদ্ধ মাশরুম সাধারণত জন্ম নেয় স্যাঁতসেঁতে জলময় জায়গায়।

গত দশকে খুব কম শস্যই মাশরুমের মতো সুপারসনিক দ্রুততায় বেড়েছে। বিশেষত পূর্ব ইউরোপ, জার্মানি, ফ্রান্স আর ইতালিতে মাশরুম চাষ বেড়েছে অবিশ্বাস্য হারে। এই দেশগুলোতে জন্ম নিয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় পেশাদার নার্সারি। এদের কাজই হচ্ছে পরিকল্পিত মাশরুম চাষ। এদের মধ্যে প্রতিযোগিতাটাও হচ্ছে সোজা বাংলায় হাড্ডাহাড্ডি। আমাদের বাংলাদেশেও আজকাল বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মাশরুমের চাষ হচ্ছে। স্যাঁতসেঁতে ভেজা আবহাওয়ায় জন্মালেও মাশরুমের প্রয়োজন একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ উষ্ণতা এবং আলো। যারা পেশাদার মাশরুম বিশেষজ্ঞ, তাদের বলা হয় মাইকোলজিস্ট। ইউরোপের অনেক জায়গায়ই এরা স্থানীয় ফার্মাসিস্টদের সঙ্গে একযোগে গবেষণা করছেন। তাদের কাজের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে, বিষাক্ত ছত্রাক চিহ্নিত করা।

মাশরুম জিনিসটা আসলে কি সেটা একটু জেনে নেওয়া যাক। মাশরুম হচ্ছে একধরনের স্বল্পস্থায়ী কিন্তু জটিল ছত্রাকদেহের ফলবতী অংশ। অন্যসব পরিচিত সাধারণ ফলের মতো এটাও পাকে, তবে সময় নেয় যথারীতি অল্প। অন্যসব ছত্রাকের মতো এটাও অবশ্যই পরজীবী। নিজ প্রয়োজনে পুষ্টিরস টেনে নেয় অন্য জীবদের থেকে।

অণু আকৃতির অনেক ছত্রাকই আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার প্রাথমিক উপাদান। এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হচ্ছে পেনিসিলিয়াম। বিখ্যাত অ্যান্টিবায়োটিক পেনিসিলিন সৃষ্টিতে পেনিসিলিয়ামের প্রয়োজনীয়তা সর্বাধিক। এছাড়া মদ তৈরির সময় যখন চিনিকে অ্যালকোহলে পরিণত করতে হয় তখন এক ধরনের ক্ষুদ্র ছত্রাকই আসল কাজটা করে দেয়।

মাশরুম গোত্রের সবচাইতে অভিজাত শ্রেণীটির নাম পযধসঢ়রমহড়হ। সেই চতুর্দশ লুইয়ের আমল থেকে ফ্রান্সে এর ব্যাপক আবাদ হচ্ছে, কিন্তু জনপ্রিয়তা কমেনি এতটুকু। বিশেষজ্ঞরা চেষ্টা করছেন মাশরুমের আরও কিছু উন্নত প্রজাতি আবিষ্কার করতে। মাশরুমের কোনো প্রজাতি কিন্তু সব জায়গায় জন্মে না। এক্ষেত্রে অয়েস্টার মাশরুম একমাত্র ব্যতিক্রম। আজকাল সাফল্যের সঙ্গে এই সুস্বাদু মাশরুম পৃথিবীর অনেক জায়গায় চাষ করা হচ্ছে। সারা ইউরোপে বন্য মাশরুমের প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার। ধারণা করা হয়, এদের মধ্যে মাত্র ১ হাজার ২০০ প্রজাতি খাবার উপযোগী। অবশ্য এর মানে এটা নয় যে, বাকি আর সবই বিষাক্ত। আসলে এদের তুলে এনে কেটেকুটে খাওয়াটা খুব সহজসাধ্য কাজ নয়। যেমন ফিল্ড মাশরুম আর হর্স মাশরুম শুধুমাত্র ব্রিটিশরাই হজম করতে পারে।

না জেনে, না চিনে মাশরুম খাওয়টা ভীষণ বিপজ্জনক। কিছু মাশরুম দেখতে সুন্দর আর আকর্ষণীয় হলেও কিন্তু বিষাক্ত। মোরেলস পাফবলস প্রজাতি এর ভিতরে পড়ে। কিছু মাশরুম আবার দেখতে ভীতিকর তবে স্বাদ অপূর্ব, যেমন সেপস্, চ্যানট্যারেলস। মেদ নিয়ে যারা অতিরিক্ত মাথা ঘামান, তাদের জন্য সুসংবাদ হচ্ছে, প্রায় সব মাশরুমই ক্যালরি ফ্রি। এদের অনেকেই ভিটামিন সি আর উদ্ভিজ আমিষে সমৃদ্ধ। স্বাদ বাড়াবার জন্য অনেকেই এদের চুবিয়ে রাখেন অলিভ অয়েলে। দুধ সংযোগে সিদ্ধ অথবা ঝলসানো মাশরুম এক কথায় অসাধারণ।

গ্রীন টি ( সবুজ চা )

Friday, October 1, 2010


১৮৫৫ সালে বাংলাদেশের সিলেটের টিলাতে প্রথম চা গাছ দেখা যায়। দেশে প্রথম চা বাগান করা হয় মালনীছড়িতে (সিলেট)। নাম ডৌনকান ব্রাদার্স লিঃ।১৮৫৭ সালে বাংলাদেশে চা চাষ শুরম্ন করে ব্রিটিশরা। ব্রিটিশরা প্রথমে বাঙালীদের চা তৈরি করে ফ্রি পান করাত। ১৮৩৯ সালে ‘অসম চা কোম্পানি’ নামে পৃথিবীর প্রথম চা কোম্পানি স্থাপিত হয়।

চা মূলত ক্যামেলিয়া সিনেনসিন উদ্ভিদের পাতা, পর্ব ও মুকুলের কৃষিজাত পণ্য যা বিভিন্ন উপায়ে প্রস্তুত করা হয়। এছাড়া “চা” বলতে এক ধরণের সুগন্ধযুক্ত ও স্বাদবিশিষ্ট পানীয়কেও বোঝানো হয়। চা’র নামকরণ করা হয় গ্রীকদেবী ‘থিয়া’ (Thea) এর নামানুসারে। এর জন্মস্থান চীনদেশে। চা’র বৈজ্ঞানিক নাম Thea Sinensis I Camellia Sinensis। চা Theaceae পরিবারের সদস্য। চা প্রধানত ৩ ধরনের যথা- চীনা চা, আসামী চা ও ইন্দো-চীনা-চা।

১৬৫০ সালে চা প্রথম বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হয়। ১৮১৮-১৮৩৪ সালে ভারতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়। প্রথম চা ব্যাগ চালু করে আমেরিকা। ২-৩টি কুঁড়ি থেকে চা তৈরি করা হয়। বাংলাদেশ থেকে ২৫টি দেশে চা রফতানি হয়।
দেশে চা’র চাহিদা বছরে ৮ হাজার টন। দেশের একমাত্র চা গবেষণা প্রতিষ্ঠান শ্রীমঙ্গলে।

দেশে চা চাষের জমির পরিমাণ ১১৮ হাজার একর। চা উৎপাদনে সরাসরি নিযুক্ত দেশে শ্রমিকের সংখ্যা ১ লাখ ২৫ হাজার। দেশে গড়ে বছরে চা উৎপাদন হয় ৪ কোটি ৫০ লাখ কেজি। বিশ্বে চা রফতানিকারক দেশের মধ্যে বাংলাদেশের স্থান অষ্টম। চা বাগান সিলেটে ২০টি, মৌলভীবাজারে ৯১টি-হবিগঞ্জে ২৩টি, চট্টগ্রামে ২২টি, রাঙ্গামাটিতে ১টি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১টি।

প্রধান চা উৎপাদনকারী দেশ হচ্ছে ভারত, শ্রীলঙ্কা, চীন, কেনিয়া, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, রাশিয়া ও বাংলাদেশ।

দেশে ১৫৮টি চা বাগান আছে। দেশের মোট চা উৎপাদনের ৯৩% সিলেটে, ০•১৩% পাবর্ত্য চট্টগ্রামে, ৬•৫৩% চট্টগ্রামে এবং ০•১২% কুমিলস্নায় চাষ হয়। দেশে উদ্‌ভাবিত ৩টি জাত হলো- বিটি ১, বিটি ২ ও বিটি ৩। ক্লোনিং পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করা হয়।

লেবু চা’র উৎপত্তি রাশিয়ায়। এর আরেক নাম রাশিয়ান চা। সবচেয়ে বেশি চা পান করে আয়ারল্যান্ডের মানুষ। সর্বোচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন চা হলো ‘পিকো’।

প্রতিদিন সারা বিশ্বে গড়ে দুই বিলিয়ন কাপ চা পান করা হয়। সারা বিশ্বে শুধু চা পাতা ও ফুল থেকে তিন হাজার রকমের চা হয়। পুরম্নষের চেয়ে মেয়েদের চা পানের নেশা বেশি। চা তিনভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয়- কালো চা, সবুজ চা ও উনং চা। এক বাগান থেকে বছরে ৩০-৩৫ বার চা পাতা তোলা হয়। একজন শ্রমিক দিনে ১৫-৪০ কেজি চা পাতা তুলতে পারে। এক কেজি চা পাতা থেকে ৪৫০-৫০০ কাপ চা তৈরি হয়।

সবুজ চা হৃদরোগীদের জন্য উপকারী। হাঁপানি রোগীদের জন্য চা পান উপকারী।

চা-এর রকমফের

হার্বাল চা
গরম জলে হার্ব মিশিয়ে এ চা হয়। যেমন ধরুন সবুজ চা। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। মেটাবলিক রেট বাড়িয়ে ফ্যাট কমায়। দাঁতের ক্যাভিটি রক্ষা করে, ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমায়। তবে সব হার্ব বা ভেষজ উপাদান সবাইকে সুট নাও করতে পারে, যেমন গর্ভবতী মহিলা বা বয়স্কদের।

চাইনিজ চা

চীনে যে পদ্ধতিতে চা পাতা পান করার জন্য তৈরি করা হয় সেটাই চাইনিজ টি। অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে এবং জীবাণু ধ্বংস করে। ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে, ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

ব্ল্যাক টি_ এই চা-এর ফ্লেভার বেশি স্ট্রং এবং ক্যাফিন-এর মাত্রা অন্য চায়ের তুলনায় বেশি। চীনে ব্ল্যাক টি-কে রেড টিও বলে। এর মধ্যে ফ্লেভনোয়েড-এর মাত্রা বেশি। কোলেস্টেরল কমায়, রক্ত সঞ্চালন ভালো রাখে, ইনফ্লামেশন কমায়, ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে।

গ্রিন টি

হাতে চা পাতা তুলে, শুকিয়ে বেক করে এই চা পাতা তৈরি করা হয়। এবং যে পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় তাতে এর গুণাগুণ অনেকটাই অক্ষত থাকে। ক্যান্সার, রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস, হাইকোলেস্টেরল, কার্ডোভাসকিউলার ডিজিজ অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রণে থাকে, যদি ছোট থেকে নিয়মিত পান করা যায়।

ছত্রাক


আমাদের বাড়ির আশপাশে কিংবা পথে-ঘাটে চলতে মাঝে মাঝেই তুলার মতো সাদা আর ছাতা আকৃতির এক ধরনের ছত্রাক দেখতে পাই। আমরা এটাকে অনেকেই ব্যাঙের ছাতা বলে চিনি। আর আমাদের অতি পরিচিত এই ছত্রাক শিকার ধরার দক্ষতায় অন্ধকারে চিতা কিংবা সাগর জলের তিমির চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। নির্দয়তার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে ছত্রাক এক ভয়ঙ্কর শিকারি! ব্যাঙের ছাতার মতো এমন একটি ছত্রাক কি করে শিকারি হতে পারে তা ভেবে সত্যি অবাক হতে হয়। ওর তো আর চিতার মতো হিংস্র থাবা কিংবা তিমির মতো বিশাল হাঁ নেই, তা হলে ও কি করে শিকার করে? এ কথা সত্য যে, ছত্রাকের বাঘের মতো কোনো ধারাল দাঁত বা হিংস্র থাবা নেই, যার সাহায্যে কোনো কিছুকে শিকার করে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। এরপরও এরা অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জীবনকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। যেমন : পিঁপড়ার কথাই ধরা যাক। Cordyceps ¸rmecophila নামের যে ছত্রাক আছে শিকারের ক্ষেত্রে এটি খুবই নির্দয় প্রকৃতির। ছত্রাকটির গোড়ার চারপাশে ফিলামেন্ট থাকে তাতে প্রচুর স্পোর আছে। খাবারের সন্ধানে কোনো পিঁপড়া যখন এই ছত্রাকটির আশপাশ দিয়ে যায় তখন সে তার সুতাকৃতির এই ফিলামেন্ট থেকে পিঁপড়ার গায়ে ওই স্পোর নিক্ষেপ করে। বলা যায়, পিঁপড়ার এই স্পোর পড়ার পরপরই তার মৃত্যু ঘনাতে শুরু করে। আগেই বলেছি ছত্রাক এক নির্দয় প্রকৃতির শিকারি। এর কারণ হচ্ছে, শিকারকে সে একবারে না মেরে বরং ধীরে ধীরে শাস্তি দিয়ে মারে। এ ক্ষেত্রে সে তার স্পোরকে কাজে লাগায়।

মনের উঠোনে

সাম্প্রতিক সংযোজন

মোবাইল থেকে দেখুন

আমাদের দেশ এখন আপনার মুঠোফোনে, মোবাইল থেকে লগইন করুন আমাদের দেশ

দ র্শ না র্থী

দ র্শ না র্থী

free counters

কে কে অনলাইনে আছেন