বগুড়ায় সৌদি খেজুরের বাগান

Wednesday, May 25, 2011


ময়মনসিংহের পর এবার বগুড়ায় সৌদি আরবের খেজুরও চাষ শুরু হয়েছে। দুই দেশের বিপরীত আবহাওয়ার মধ্যেও খেজুর চাষ সম্ভব এমন অদম্য উৎসাহ নিয়ে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বড়ুইল ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম তুলাসন ধুন্ধারে সৌদি আরবের নানা জাতের খেজুরের বাগান গড়ে তুলেছেন আবদুর রউফ হিরো। প্রায় তিন বিঘা জমিতে গড়া বাগানটিতে সাড়ে ৪০০ খেজুরের গাছ ও প্রায় ২৫ হাজার নানা জাতের খেজুর গাছের চারা রয়েছে। বেশকিছু গাছে খেজুর আসতে শুরু করেছে।

খেজুর চাষি আবদুর রউফ জানান, তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৬ সালে চারুকলা বিভাগ থেকে বিএফএ পাস করেন। এরপর ১৯৯৯ সালে সৌদি আরবের একটি বেসরকারি কোম্পানিতে ডিজাইনার হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। সেখানে মরু ভূমিতে খেজুরের চাষ দেখে তিনি পরিকল্পনা করেন দেশের মাটিতে খেজুরের চাষ করার। এক্ষেত্রে ময়মনসিংহের ভালুকাতে গড়ে ওঠা মোতালেব হোসেনের খেজুর বাগান তাকে অনুপ্রাণিত করে। ২০০৮ সালে দেশে ফেরার সময় তিনি উন্নত জাতের খেজুর নিয়ে এসে তার বীজ থেকে শুরু করেন খেজুরের বাগান। নাম দেন 'মা সৌদি খেজুরের বাগান ও নার্সারি'। গত বছর বাগানে ২০-২২টি গাছে খেজুর ধরে। এ বছর আড়াই বছর বয়সী শতাধিক গাছে খেজুর আসবে বলে আশা করছেন তিনি। তিনি জানান, বাগানের কাজে তাকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেন স্ত্রী আসমা খানম। বাগান করতে তাদের অনেক টাকাও খরচ হয়েছে। এরজন্য মাঝেমধ্যেই চিন্তিত হতেন। কিন্তু গত বছর বাগানের বেশ কিছু গাছে ফল আসায় আশার সঞ্চার হয়েছে। তবে এলাকায় খেজুর চারার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। গত বছর বৃক্ষমেলায় ও আগ্রহীদের মধ্যে একেকটি খেজুর চারা ২০০ থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। বর্তমানে বাগানে শাখাই, মগরুম ও সুপ্রি তিনটি জাতের ছোটবড় খেজুর গাছের চাষ হচ্ছে। সবচেয়ে উন্নতমানের খেজুর হলো মগরুম। বাগানটি সবসময় পরিচর্যা করেন ৩-৪ জন শ্রমিক। নন্দীগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, মরুভূমির এ ফসল বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়ার সঙ্গে খাপখেয়ে কতটুকু ফলানো সম্ভব তারই ওপর নির্ভর করছে অদম্য উৎসাহী আবদুর রউফের স্বপ্নের বাস্তবায়ন।


তথ্য সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন, তারিখ: ২৫ মে ২০১১




চিবিয়ে খাওয়া জাতের আখ চাষ

Saturday, May 21, 2011


চিবিয়ে খাওয়ার আখ বসতবাড়ির আশপাশে সীমিত উর্বর জমিতে চাষ হয়ে থাকে। চিবিয়ে খাওয়ার আখ চাষ খুবই লাভজনক। যথাযথ যত্ন সহকারে চাষাবাদ করা হলে অন্য যে কোনো ফসলের তুলনায় চিবিয়ে খাওয়া আখ থেকে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। তুলনামূলক চিবিয়ে খাওয়া আখের ফলন জাতীয় গড় ফলনের (৪০.২১ মে. টন/হেক্টর) তুলনায় অনেক বেশি। প্রতি ১০০ গ্রাম আখের রসে ৩৯ ক্যালরি, ৯.১ গ্রাম শর্করা, আমিষ চর্বি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহ পাশাপাশি রিবোফ্লোবিন এবং ক্যারোটিন বিদ্যমান। পরিপক্ব আখে শতকরা ৮০ ভাগ পানি, ৮-১৬ ভাগ সুক্রোজ, ০.৫-২ ভাগ রিডিউসিং সুগার এবং ০.৫-১ নন সুগার থাকে।

আখের অভ্যন্তরীণ বৈশিষ্ট্যের মধ্যে মিষ্টতা, ছোবড়ার হার ও মসৃণতা, কম আঁশযুক্ত, নরম রসালো, কম মিনারেল ও অধিক চিনিযুক্ত। আখ জাতসমূহই চিবিয়ে খাওয়া আখের আঁশের পরিমাণ নরম এবং রসের পরিমাণ বিভিন্ন জাত বিভিন্ন রকম হয়। আবাদকৃত জাতসমূহের মধ্যে উৎকৃষ্ট সিও-২০৮, বনপাড়া গেন্ডারি, অমৃত, সিও-৫২৭, মিশ্রিমালা ও কাজলাজাত। স্বল্প আয়ের লোকদের অপুষ্টিরোধে আখের রসের ব্যাপক ব্যবহারে অত্যন্ত সহায়ক। উপজেলার বামনীকাঠী গ্রামের গনি শিকদার ৫ একর জমিতে আখ চাষ করে ৫ লাখ টাকা বিক্রি করেন। ওই বছর তার আখ চাষে ২ লাখ টাকা খরচ শেষে তার লাভ হয়েছে ৩ লাখ টাকা। ১৯৯৬ সাল থেকে আখ চাষ করে আসছেন তিনি। ব্যবসার উদ্দেশ্যে যশোর গেলে সেখানকার আখ চাষ দেখে বসতভিটায় ৫ শতাংশ জমিতে আখ চাষ শুরু করেন। এলাকার মালেক মৃধা, ছিদ্দিক সিকদার, শাহ আলম মৃধা, আবু তাহের প্যাদাও আখ চাষ করছেন। চাষি গনি মলি্লক আখ চাষ সম্পর্কে জানান, আখ চাষ শুধু চিনির জন্য নয়, চিবিয়ে খাওয়ার জন্য। প্রতিজন কৃষক ১০ থেকে ১৫ শতাংশ আখ চাষ করে আসছেন। আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র মাসে উপজেলার হাটবাজারে আখ বিক্রি করে থাকেন। ২৫টি করে আখের আঁটি বাধা হয়। ৪টি আঁটি অর্থাৎ ১শ আখ ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা বিক্রি করা হয়। আখ চাষের জমি নির্বাচনের পর ভালোভাবে জমি চাষ করে উপযুক্ত বীজতলা তৈরি করতে হবে। শেকড় যাতে অবাধে বিস্তার লাভ করে প্রচুর খাদ্যরস গ্রহণ করতে পারে সেজন্য জমি উত্তম ও গভীরভাবে চাষ করতে হবে। জমি চাষের গভীরতা কমপক্ষে ৮ ইঞ্চি হওয়া দরকার। তিন খণ্ড চোখবিশিষ্ট বীজখণ্ড নালার মধ্যে একই লাইনের মাথায় স্থাপন করে আখ চাষ করা হয়। হেক্টর প্রতি ৬-৭ মে: টন বীজের আখের প্রয়োজন। চারা ৪ পাতা বিশিষ্ট হলে জমিতে রোপণ করা উপযোগী হবে। সাধারণত কমপক্ষে ১ মাস বা ততোধিক যে কোনো বয়সের চারা রোপণ করা যেতে পারে। তবে ৪-৮ সপ্তাহ বয়সের চারা রোপণ করা ভালো। সরাসরি জমিতে বীজখণ্ড রোপণ বা সরাসরি চারা রোপণ করা যেতে পারে। ফাঁকা জায়গা পূরণ, মাটি আলগা করে দেওয়া, আগাছা পরিষ্কারকরণ, সার প্রয়োগ, চারার গোড়ায় মাটি দেওয়া, আখ বাঁধা দেওয়ার মাধ্যমে পরিচর্যা করা। মারাত্মক ক্ষতিকারক মাজরা পোকা, শুষক পোকা, মাটিতে বসবাসকারী পোকা চিহ্নিত করে কীটনাশক প্রয়োগের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় রোগ বালাই দমনের ব্যবস্থা করা। আখ বাণিজ্যিকভাবে ও ব্যবহারের দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিধায় এটি গবেষকদের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। আখের উচ্চ ফলনশীল ও প্রতিকূল পরিবেশ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন জাত উন্নয়নের জন্য বিজ্ঞানীরা নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয় অর্থনীতি শক্তিশালী করার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশস্ত হবে। সবকিছু মিলিয়ে বিএসআরআই উদ্ভাবিত আধুনিক প্রযুক্তি ও জাতগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে আখের উৎপাদন বাড়ানো এখন সময়ের চাহিদা।


তথ্য সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন, তারিখ: ২১ মে ২০১১

ঝলকে উঠেছে ঝলক ধান


শস্যভাণ্ডারখ্যাত চলনবিলে চলতি বোরো মৌসুমে বিআর-২৮, মিনিকেট, বিআর হীরা ও বোরো ধানের পাশাপাশি উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড ধান ঝলকেরও বাম্পার ফলন হয়েছে। এবারই প্রথম ঝলক ধান চাষ করেছে এ অঞ্চলের কৃষকরা। সময়মতো বৃষ্টিপাত ও প্রকৃতির অনুকূল পরিবেশ থাকায় ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। পাকা ফসলগুলো এখন সোনালি আভায় ঝলমল করছে। সিরাজগঞ্জে কয়েকশ কৃষক এবার ঝলক ধান চাষ করেছে। বীজ কোম্পানি এনার্জি প্যাক এগ্রো লিমিটেড চীনের উইনেক হাইটেড সিড কোম্পানি উৎপাদিত ঝলক নামের এ বীজ বাজারজাত করে। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চন্ডিদাসগাতী গ্রামের কৃষক হায়দার আলী, শালুয়াভিটা গ্রামের সুমন আলী, জাহাঙ্গীর হোসেন, উল্লাপাড়া উপজেলার বালসাবাড়ীর কৃষক হেলাল উদ্দিন, মোখলেসুর রহমান, এমদাদুল হক, জাফর শেখ, শাহজাদপুর উপজেলার কৃষক রুবেল খন্দকার, মাহবুব আলম, আলিম শেখ, কামারখন্দ উপজেলার কৃষক মোতালেব হোসেন, ফারুক ইসলাম, বেলকুচি উপজেলার সবুর হোসেন, আলী মাস্টার, ইব্রাহীম হোসেন, রায়গঞ্জ উপজেলার কৃষক মঞ্জুরুল ইসলাম, কালাম মাস্টার, হাই তালুকদার, তাড়াশ উপজেলার কৃষক খলিকুর রহমান, মোখলেস হোসেন, আইয়ুব আলী, সোবহান শেখ, আবু বকর শেখ সবাই ৩-৪ বিঘা জমিতে ঝলক ধান চাষ করেছেন। শাহজাদপুর উপজেলার কৃষক রুবেল খন্দকার জানান, এবারই প্রথম সে তার ৪ বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ঝলক ধান চাষ করেছেন। ফলনও বেশ ভালো। প্রতি শতকে প্রায় ১ মণের বেশি ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

এনার্জি প্যাক এগ্রো লিমিটেড কোম্পানির সিরাজগঞ্জের মার্কেটিং অফিসার মিন্টু মিয়া জানান, সিরাজগঞ্জ জেলায় মোট সাড়ে ১০ হাজার কেজি ঝলক ধানের বীজ বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জ সদরে ২ হাজার, শাহজাদপুরে ২ হাজার ৫০০ কেজি, উল্লাপাড়ায় ২ হাজার কেজি, কামারখন্দে ৫০০ কেজি, বেলকুচি ৫০০ কেজি, তাড়াশে ৩ হাজার কেজি বীজ বিক্রি হয়েছে। ঝলক ধান বোরো মৌসুমে সবচেয়ে আগাম জাতের ধান। জেলায় কয়েকশ কৃষক ঝলক ধান চাষ করেছেন। আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলনও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সিরাজগঞ্জ কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দুলাল চন্দ্র রায় জানান, এ বছর সিরাজগঞ্জে প্রায় সাড়ে ৭শ হেক্টর জমিতে ঝলক ধান চাষ করা হয়েছে। কৃষকরা টিএসপি ও পটাশ সার সুষমভাবে ব্যবহার করায় এ ফলন সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও পরিবেশ অনুকূলে ছিল।


তথ্য সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন, তারিখ: ২১ মে ২০১১

তরমুজের বাম্পার ফলন


গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় এ বছর তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর জেলায় প্রায় ৬শ' হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ করেছে কৃষকরা। জমি থেকে তুলে তরমুজ বিক্রির জন্য নৌকা করে কালীগঞ্জের পাইকারী বাজারের আড়তদারের কাছে আনা হচ্ছে। এখান থেকে তরমুজ ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে। এখানে উৎপাদিত তরমুজ আকারে বড়, খেতে সুস্বাদু ও মিষ্টি হওয়ায় দিনদিন এ এলাকার তরমুজের চাহিদা বাড়ছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার শেওড়াবাড়ী, পিঠাবাড়ি, ডোমরাশুর, ডেমাকুড়, পানাইল, পুইশর এলাকায় তরমুজ চাষ হয়েছে। প্রতি কেজি তরমুজ পাইকারী ১০-১২ টাকায় এবং খুচরা প্রতি কেজি ১৩-১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব তরমুজ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ও বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। তরমুজচাষি চিন্ময় হাজরা জানিয়েছেন, এ এলাকার কৃষকরা তরমুজ চাষ করে লাভবান হয়েছেন। গোপালগঞ্জ কৃষি-সমপ্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ভাস্কর চক্রবর্তী জানান, আমরা তরমুজচাষিদের আধুনিক প্রযুক্তিতে চাষাবাদের জন্য সব ধরণের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। ওই এলাকায় একটি বিশেষ টিম কৃষকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক কাজ করছে। এ বছর প্রতি হেক্টর জমিতে প্রায় ৫০-৬০ টন তরমুজের ফলন হয়েছে। তরমুজচাষিদের জন্য পর্যাপ্ত ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করলে তরমুজ চাষ আরও সমপ্রসারিত হবে।


তথ্য সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন, তারিখ: ২১ মে ২০১১

মনের উঠোনে

সাম্প্রতিক সংযোজন

মোবাইল থেকে দেখুন

আমাদের দেশ এখন আপনার মুঠোফোনে, মোবাইল থেকে লগইন করুন আমাদের দেশ

দ র্শ না র্থী

দ র্শ না র্থী

free counters

কে কে অনলাইনে আছেন