হাজার হেক্টরে বোরোর আবাদ নিয়ে সংশয়

Friday, November 26, 2010


বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের পশ্চিমপাড় নিলার খালের মুখের স্লুইসগেট থেকে বড়ইভিটা পর্যন্ত খালের নিলার এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করছে আওয়ামী লীগ-বিএনপির নেতাদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটি। প্রতিবাদে শত শত কৃষক বিক্ষোভ করেছেন। বাঁধটি নির্মিত হলে সাতলা ইউনিয়নের চারটি গ্রামের প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবদুর রহমান মোল্লা, আওয়ামী লীগের নেতা রতন সমাদ্দার, টুটুল হাওলাদার, টুটুল বিশ্বাস, ইদ্রিস আলী, সাতলা ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস হাওলাদারসহ শতাধিক প্রভাবশালী পশ্চিম সাতলা মৎস্য সমিতি-২ গঠন করে গত জুলাইয়ে সাতলা এলাকার প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে মাছ চাষ শুরু করেন। এ জন্য বিএনপির নেতা ইলিয়াছ হাওলাদারকে সভাপতি ও আওয়ামী লীগের নেতা রতন সমাদ্দারকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাঁরা মৎস্য ঘেরে ৬০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। পাঁচ মাসের ব্যবধানে ওই ঘের থেকে এক কোটি ৪৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করা হয়েছে।

ঘেরের আওতায় থাকা ভুক্তভোগী কৃষক ফারুক মোল্লা, রফিকুল ইসলাম, কাইয়ুম ভাদ্রিসহ সাধারণ কৃষকেরা অভিযোগ করেন, পশ্চিম সাতলা মৎস্য সমিতি-২-এর নামে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা প্রায় ৮০০ হেক্টর জমির ১০ হাজার কৃষককে ভয়ভীতি দেখিয়ে মৎস্য চাষে বাধ্য করেছেন। ঘেরের জমিতে শুধু বোরোর আবাদ হয়। এই আবাদই এ অঞ্চলের কয়েক হাজার কৃষকের একমাত্র ভরসা। বোরোর বীজতলা তৈরির উপযুক্ত সময় এখনই। কিন্তু প্রভাবশালীরা সাতলা ইউনিয়নের পশ্চিমপাড় নিলার খালের মুখে স্লুইসগেট থেকে বড়ইভিটা পর্যন্ত খালের নিলার এলাকায় বাঁধ নির্মাণ শুরু করেছেন। এটি নির্মিত হলে ঘেরের মধ্যে থাকা জমির পানি নামতে দেরি হবে। ফলে বীজতলা তৈরি করা যাবে না। তাছাড়া বোরো চাষের মৌসুম শুরু হলে সেচের অভাব দেখা দেবে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা জানান, গত ২৩ নভেম্বর মৎস্য কমিটির নেতারা বাঁধ তৈরির কাজ শুরু করলে শত শত সাধারণ কৃষক প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এতে কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ করা হলেও নতুন করে বাঁধ নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন মৎস্য কমিটির নেতারা। সাতলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল হক হাওলাদার জানান, এ বাঁধ নির্মিত হলে হাজার হাজার কৃষকের সর্বনাশ হয়ে যাবে। বোরোর চাষ করতে না পারলে শত শত কৃষক পরিবারকে অর্ধাহার-অনাহারে থাকতে হবে।

পশ্চিম সাতলা মৎস্য সমিতি-২-এর সভাপতি বিএনপির নেতা ইলিয়াছ হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগের নেতা রতন সমাদ্দার কৃষকদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জোরপূর্বক নয়, অধিক মুনাফা পেয়ে কৃষকেরা নিজেদের ইচ্ছায় মাছ চাষে যুক্ত হয়েছেন। একটি মহল অনৈতিক আর্থিক সুবিধা না পেয়ে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার চালাচ্ছে। বাঁধ নির্মাণ শুরুর কথা স্বীকার করে তাঁরা বলেন, কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। কৃষকেরা বাধা দিলে বাঁধ নির্মাণ করা হবে না।
উজিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বিশ্বাস বলেন, মহল বিশেষের বাঁধ নির্মাণের প্রচেষ্টার কথা তিনি শুনেছেন, কিন্তু এখনো কোনো অভিযোগ পাননি। একই কথা বলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয় সিন্ধু তালুকদার।

তথ্য সূত্রঃ প্রথম আলো, তারিখ: ২৬-১১-২০১০

মনের উঠোনে

সাম্প্রতিক সংযোজন

মোবাইল থেকে দেখুন

আমাদের দেশ এখন আপনার মুঠোফোনে, মোবাইল থেকে লগইন করুন আমাদের দেশ

দ র্শ না র্থী

দ র্শ না র্থী

free counters

কে কে অনলাইনে আছেন