কুষ্টিয়া জোনে তুলার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

Friday, September 24, 2010


চলতি মওসুমে কুষ্টিয়া জোনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও তুলার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছে তুলা উন্নয়ন বোর্ড। নানা সমস্যা কাটিয়ে তুলাচাষিরা এ বছর উন্নত হাইব্রিড জাতের তুলাচাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হবে বলে আশা করছে তারা। কুষ্টিয়া জোনে এ মওসুমে ৮ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে তুলা চষের কথা থাকলেও আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৪৭২ হেক্টর জমিতে, উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের আবাদ হয়েছে ৩৮৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলাতে ৮১৫ হেক্টর, মেহেরপুর জেলায় ৮৪৯ হেক্টর ও কুষ্টিয়া জেলায় ৭০২ হেক্টর।

তুলাচাষিদের মধ্যে বিভাগীয় ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ১৫ লাখ টাকা, বিকেবি ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ১০ লাখ টাকা এবং বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি ১৫ লাখ টাকার ওষুধ দিয়েছে। এবার ১৯ হাজার ১শ মেট্রিকটন তুলা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো। অর্জিত হবে ৬ হাজার মেট্রিকটন, যা আঁশ তুলা ১০ হাজার বেল, যার বর্তমান বাজার মূল্য ৩০ কোটি টাকা।

তুলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া জোন অঞ্চলের মাটি তুলাচাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে, উন্নত জাতের তুলাবীজ না পাওয়া ও তুলার সঠিক মূল্য না পাওয়ায় এ অঞ্চলের তুলাচাষিরা তুলাচাষ বাদ দিয়ে অন্যান্য চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।

আশির দশকে এ অঞ্চলে ব্যাপক তুলাচাষ হতো। বর্তমান বাজারে অন্য কৃষি ফসলের দামের তুলনায় তুলার দাম অনেক কম। ব্যাপক সম্ভবনাময় তুলার চাষ হওয়া সত্বেও চাষিরা তুলার আবাদ বাদ দিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে সরকার সঠিক দাম নির্ধারণ করে দিলে এ অঞ্চলের মানুষ আবার তুলাচাষে ঝুঁকে পড়বে।

দামুড়হুদা উপজেলার দেউলী গ্রামের তুলাচাষি নুরুল হক মোল্লা পিটিবি নিউজ ডটকমকে জানান, বর্তমান আধুনিক প্রযুক্তির যুগে কৃষিপণ্যের অনেক জাত কৃষিবিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করছেন। কিন্তু তুলার কোনো উন্নত জাত আজও বের হয়নি, লাগেনি কোনো আধুনিকতার ছোঁয়া। আশির দশকে সিবি-৯ জাতের ছাড়া অন্য কোনো জাত উদ্ভাবন হয়নি।

নুরুল হক আরো বলেন, একই জমিতে একই জাত বারবার আবাদ করলে ভালো ফলন হয় না। এছাড়া অন্য ফসলের তুলনায় তুলার দাম কম। এ বছর দু বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের চায়না রূপালি-১ জাতের তুলা আবাদ করেছি যার গাছ ও গাছের গোড়ার গ্রোথ ফুল ও ফল খুব ভালো হয়েছে। বিঘা প্রতি ১৫/১৬ মন তুলা পাওয়া যাবে। যার খরচ বাদ দিয়ে ৪৫-৫০ হাজার টাকা লাভ হবে।

নুরুল হক মোল্লা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এতো কষ্ট করে তুলার আবাদ করছি আজও পর্যন্ত কোনো তুলা উন্নয়ন অফিসার তুলাক্ষেত দেখতে আসেননি। তবে ইউনিট অফিসার মাঝে মধ্যে তুলা ক্ষেত পরিদর্শন করেন। চুয়াডাঙ্গা জোন অফিস থাকাকালে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বারবার তুলাক্ষেত পরিদর্শনে চাষিদের সুযোগ-সুবিধা ও সহযোগিতা করতেন।

তুলা উন্নয়ন বোর্ডের যশোর অঞ্চলের উপপরিচালক আক্তারুজ্জামান পিটিবি নিউজ ডটকমকে বলেন, চলতি বছর তুলাচাষের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়েছে। দেশি জাতের পাশাপাশি উন্নত হাইব্রিড জাতের তুলার বীজ সরবরাহ দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে রূপালি-১ জাতের তুলা খুবই ভালো ও উন্নতমানের। দেশি জাতের তুলার আগেই রূপালি-১ জাতের তুলা ফুটে যায়। এছাড়া কীটনাশক কম লাগে।

উপপরিচালক আরো বলেন, বর্তমানে তুলার দাম ভালো। তুলার মান উন্নত হলে বিক্রির নিশ্চয়তা আছে। তুলাচাষ বাড়াতে হলে তুলা উন্নয়ন বোর্ড বিটিএমসি এবং তুলাচাষিদের সমন্বয়ে যৌথ পরিকল্পনা গ্রহণ করলে দেশের চাহিদার ৫০ ভাগ তুলা উৎপাদন সম্ভব হবে। তিনি দেশের স্বার্থে কৃষকদের তুলাচাষ বাড়ানোর আহবান জানান।

মনের উঠোনে

সাম্প্রতিক সংযোজন

মোবাইল থেকে দেখুন

আমাদের দেশ এখন আপনার মুঠোফোনে, মোবাইল থেকে লগইন করুন আমাদের দেশ

দ র্শ না র্থী

দ র্শ না র্থী

free counters

কে কে অনলাইনে আছেন