আর নয় যশোর, নবিনগর ও সাভার। এখ বানিজ্যিক ভাবে ঘোড়াঘাটের চরাঞ্চলে চাষ হচ্ছে বিদেশী ফুল গ্যালারিয়াস। দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার সর্ববৃহত গ্রাম কুলানন্দপুর। একটি গ্রামই একটি ওয়ার্ড। গ্রামটি করতোয়া নদীর অববাহিকায় অবস্থিত। পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদীর ভাঙ্গনে গ্রামের বেশির ভাগ অংশই নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। বাস্তহারা পরিবার গুলো বেশি ভাগই নরসুন্দরী (নাপিত)। এই গ্রামে অধিকাংশ জমাজমি ভাঙ্গন কবলিত হয়ে দীর্ঘ দিন বালুচরে পরিনত ছিল। বছর বছর বন্যায় পলিমাটি পড়ে এখন অনেক জমি ফসলি জমিতে পরিনত হয়েছে। তবে বর্তমান কুলানন্দপুর গ্রাম থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দুরে গ্রামের সিমানা। এই গ্রামের রফিকুল ইসলাম ঢাকার সাভারে গ্যালারিয়াস ফুলের চাষ এবং সেখানকার মাটির রকম দেখে চিন্তা করে তার চর এলাকার জমিতে এ ফুলের চাষ সম্ভব। তাই সে সাভার থেকে সাহাবুদ্দিন নামের এক ফুল চাষীর সাথে চুক্তি বদ্ধ হয়ে মাঘ মাসে তার ৮০ শতক জমিতে বীজ বপন করে প্রথম বারই সে এ ফুল চাষে সফলতা পায়। ফুল চাষ সম্পর্কে রফিকুল ইসলামের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তার ৮০ শতক জমিতে বীজ লাগে ৭০ হাজার টাকা। তার বীজ ও অন্যান্য খরচ সহ মোট ব্যায় হয় প্রায় ১ লাখ টাকা। গত ৪ সপ্তাহ থেকে সে ঢাকারসাভারে ফুল বিক্রি শুরু করেছে। তার জমিতে ফুল আসা শুরু হয়েছে চৈত্র মাস থেকে। সে আরও জানায়, ফুলের গাছ থেকে ফুল ভাঙ্গার পর গাছের যে গুটি থাকে ১৫ দিন পর গোড়া সহ গুটি গুলি তুলে শুকিয়ে হিমাগারে রাখতে হবে। আগামী বছর হিমাগার থেকে বীজ গুলো এনে এ ফুল চাষ করা যাবে। প্রথম বারে রফিকুল ইসলাম ঠিক ভাবে বীজ কিনতে পারেনি বলে জানান। কারন এর আলাদা আলাদা রং এর বীজ পাওয়া যায়। লাল ও সাদা ফুলের কদর বেশী ও দামও বেশী। প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে রফিকুলের এ ফুল চাষের সাফল্য দেখতে প্রতিদিন লোকজন আসছে তার জমিতে। করতোয়া নদীর অববাহিকায় প্রায় ২০/২৫ টি গ্রাম রয়েছে। এ সব গ্রামের অনেকেরি জমিজমা চরাঞ্চলে রয়েছে। তারা রফিকুলের এ সাফল্য দেখে আগামীতে অনেকেই এ ফুলচাষে আগ্রহ প্রকাশ করছে। ঘোড়াঘাটে আগামীতে এ ফুল চাষ সারা দেশের চাহিদা মিটাতে সক্ষম হবে বলে তারা জানান। রফিকুল ইসলাম এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা ফুল বিক্রি করেছে বলে জানা যায়। সে আশা প্রকাশ করছে যে এ বছর সে আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকা ফুল বিক্রি করতে সক্ষম হবে।
তথ্যসূত্র : করতোয়া