প্যাশন ফল উৎপাদন প্রযুক্তি

Saturday, August 7, 2010


পাহাড়ী কৃষি গবেষণা কেন্দ্র
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা।


ভূমিকা

প্যাশন ফল একটি বহুবর্ষজীবী লতা জাতীয় উদ্ভিদ যার আদি নিবাস হিসেবে ব্রাজিলের আমাজান অঞ্চলের রেইনফরেস্টের এর নিকটবর্তী স্থান প্যারাগুয়ে এবং উত্তর আর্জেন্টিনাকে ধরা হয়। বাংলাদেশের সর্বত্র প্যাশনফলের চাষ হয় না তবে পাহাড়ী এলাকায় প্যাশন ফল চাষের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে পাহাড়ী অঞ্চলে ইহা একটি অত্যন- লাভজনক ফসল হিসেবে সকলে কাছে পরিচিতি লাভ করেছে। প্যাশনফল ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল হিসেবে সমাদৃত হয়ে উঠেছে।

উদ্ভিদতত্ত্ব
প্যাশনফল Passifloraceae পরিবার এবং Passiflora জেনাসের অন্তর্গত। প্যাশনফল সাধারণত তিন ধরনের হয় যেমন বেগুনী (পার্পল) প্যাশন ফল passiflora edulis var edulis , হলুদ প্যাশনফল P. edulis var . flavicarpaএবং হাইব্রিড Tainon No1, পার্পল প্যাশনফল হতে প্রাকৃতিক মিউটেশনের মাধ্যমে হলুদ প্যাশনফল উৎপত্তি হয়েছে যা আকারে ও গুণাগুণে মাতৃপার্পল প্যাশনফল হতে উন্নত। ফুল উভয়লিঙ্গ ধরনের এতে পাঁচটি বৃত্যংশ, পাঁচটি সাদাটে পাপড়ি থাকে, বেগুনী রঙের দুই সারি সুতোর মত পুংকেশর থাকে এবং tripartite ধরনের স্ত্রীকেশর থাকে। ফল গোলাকার, ৪-৬ সেমি লম্বা, পাকলে সবুজাভ হলুদ বা বেগুনী এবং মসৃণ হয়। বীজ কাল বা বাদামী ধরনের হয়, প্রতিটি বীজ হলুদ বা কমলা রঙের সুগন্ধি রসালো পাল্প দ্বারা বেষ্ঠিত থাকে।

পুষ্টিমান
প্যাশনফল ভিটামিন ‘‘সি” সমৃদ্ধ ফল। প্রতি ১০০ গ্রাম ভক্ষণযোগ্য অংশে বিদ্যমান বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ নিম্নের ছকে দেখান হলেঃ
খাদ্যেপাদান পরিমাণ
পানি (গ্রাম) ৮৪.৯
আমিষ (গ্রাম) ০.৭
চর্বি (গ্রাম) ০.২
শর্করা (গ্রাম) ১৩.১
আঁশ (গ্রাম) ০.৫
ক্যালসিয়াম (মিলিগ্রাম) ৩.৮
ফসফরাস (মিলিগ্রাম) ২৪.৬
লৌহ (মিলিগ্রাম) ০.৪
ভিটামিন এ (আ: একক) ২৪১০
রাইবোফ্লোবিন (মিলিগ্রাম) ০.১
নিয়াসিন (মিলিগ্রাম) ২.২
ভিটামিন সি (মিলিগ্রাম) ২০.০
খাদ্যশক্তি (কিলোজুল) ৩৮৫.০

ব্যবহার
প্যাশন ফলের বীজকে আবৃত করে থাকা হলুদ, জিলাটিনাস, সুগন্ধিযুক্ত পাল্পকে পানিতে দ্রবীভূত করে খুবই উপাদেয় শরবৎ প্রস্ত্তত করা যায়। এটিকে অন্যান্য জুসের সাথেও মিশ্রিত করে খাওয়া যায়। পাল্পকে প্রক্রিয়াজাতকরণ করে আইসক্রীম, জুস, স্কোয়াশ, জ্যাম ও জেলি প্রস'ত করা যায় যা আন্তর্জাতিক ভাবে সমাদৃত। বীজ ও খোসা হতে পেকটিন ও উচ্চ মাত্রার লিনোলিক এসিড সমৃদ্ধ তেল আহরণ করা সম্ভব।

জাত
পাহাড়ী কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, খাগড়াছড়ির বিজ্ঞানীগণ বহুবছর ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই প্রক্রিয়ায় হলুদ প্যাশন ফলের একটি জাত উদ্ভাবন করেন যা বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট হতে ‘বারি প্যাশন ফল -১’ নামে ২০০৩ সালে জাতীয় বীজ বোর্ডের মাধ্যমে অনুমোদিত হয়। এ জাত অনুমোদনের মধ্য দিয়ে প্যাশন ফল বাংলাদেশের ফসলে একটি নতুন ফল ফসল হিসেবে অন-র্ভূক্ত হল। বারি প্যাশন ফল ১ এর আকার ৬.৮ সে. মি ী ৬.৩ সে. মি.। ফলের গড় ওজন ৬৮ গ্রাম এবং ৩০ গ্রাম জুস আহরণ করা যায়, জুসের রং হলুদ এবং টিএসএস (%) মান ১৪। এ জাতটি ফিউজেরিয়াম উইল্ট ও নেমাটোড প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন।

জলবায়ু
হলুদ প্যাশন ফল সমুদ্র পৃষ্ঠ হতে ৮০০ মিটার উচ্চতা পর্যন- ভালভাবে জন্মে। প্যাশন ফল প্রচুর বৃষ্টিপাতসহ গ্রীষ্মমন্ডল ও অবগ্রীষ্মমন্ডল অঞ্চলে অভিযোজিত। অত্যধিক ভারি বৃষ্টিপাত প্যাশন ফল চাষের উপযুক্ত নয়। পা্যশন ফল চাষের জন্য অত্যধিক তাপ ও ঠান্ডামুক্ত মৃদু জলবায়ু প্রয়োজন। বছরে ১২০ মিলিমিটার সমভাবে বন্টিত বৃষ্টিপাত প্যাশন ফল চাষের উপযোগী। এই ফল চাষের উপযুক্ত তাপমাত্রা হচ্ছে ২০-৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তাপমাত্রা ১৫-১৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর কম হলে দৈহিক বৃদ্ধি এবং ফুল আসা বাঁধাগ্রস' হয় এমনকি কম তাপমাত্রায় পরাগায়ন ও ব্যাহত হয়। প্যাশন ফল লতানো হওয়ায় বাতাসের প্রতি খুবই সংবেদনশীল। ঝড়ো বাতাসে এর শাখা ভেঙ্গে যায়, ফল এবং ফুল ঝরে পড়ে এবং কখনও শাখা-প্রশাখা মারা যায় তাই স'ায়ীভাবে বায়ুরোধী এলাকায় এটা চাষ করতে হয়। প্যাশন ফল একটি দীর্ঘদিবসী উদ্ভিদ যার ফুল ফল ধারনের জন্য ১০.৫ ঘন্টার চেয়ে বেশি দিবস দৈর্ঘ্যের প্রয়োজন হয়।

বংশবিস্তার
সাধারণত দুই ভাবে প্যাশন ফলের বংশবিস্থার করা যায়।

বীজ দ্বারা
প্যাশন ফল সাধারণতঃ বীজ থেকে বংশ বিস্তার করা হয়। পাল্প থেকে বীজ আলাদা করে পানি দ্বারা ধৌত করে ছায়ায় শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়। সংরক্ষিত বীজের সজীবতা ৩-৪ সপ্তাহ থাকে। তাই এ সময়ের মধ্যে বীজ তলায় ১০-১২ সে.মি. ১০-১২ সে.মি. দূরত্বে ১ সে.মি. গভীরে বীজ বপন করে খড় দ্বারা মালচ্‌ করে বা ছায়ার ব্যবস্থা নিতে হবে। দুই থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে বীজ অংকুরিত হয়। চারা ২-৩ টি পাতা উৎপন্ন করলে বীজতলা থেকে তুলে পলিথিন ব্যাগে স্থানান্তার করতে হবে। চারা ধীরে ধীরে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এবং ৩-৪ মাস পর ২০-২৫ সে.মি. লম্বা হলে মূল জমিতে রোপনের উপযুক্ত হয়।

অংগজ বংশবিস্তার


কাটিং দ্বারা
পেন্সিল আকৃতির ৩-৪ পর্ব বিশিষ্ট শাখা কাটিং এর মাধ্যমে বংশবিস-ার করা যায়। কাটিং এ নিচের পর্ব হতে ১-২ সে.মি. নিচে তেরসা কাট দিয়ে এর নিচের পর্বসহ বীজতলার মাটিতে ৪৫ ডিগ্রী কোণ করে পুঁতে চারা তৈরী করা যায়। শাখা রোপণের সময় ১/২টি পাতা রেখে বাকি পাতা ফেলে দিতে হয়। তিন মাস সময়ের মধ্যে চারা পলিব্যাগে
স্থানান্তার করে লাগানোর উপযুক্ত হয়। কাটিং দ্বারা চারা তৈরীর উপযুক্ত সময় হচ্ছে আষাঢ়-শ্রাবণ (মধ্য জুন-মধ্য আগস্ট) মাস।

গ্রাফটিং
চারার উচ্চতা ৩০-৪০ সে.মি. হলে সাধারণত ক্লেফট গ্রাফটিং করা হয়। মাটি থেকে ১৫-২০ সে.মি. উপরে চারার মাথা কেটে স্টক তৈরী করা হয় এবং স্টকের মাথার মাঝখান দিয়ে ১-২ সে.মি. উলম্বভাবে কাটা হয়, পরবর্তীতে ৮-১০ সে.মি. লম্বা সায়নের নিচের দিক কেটে চিকন করে স্টকের ভিতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় এবং পাতলা প্লাস্টিক টেপ দিয়ে জোড়া দেওয়া অংশটি বেঁধে দেওয়া হয়। গ্রাফটিং করার ৪-৫ সপ্তাহ পর গ্রাফটেড চারা মাঠে লাগানোর উপযুক্ত হয়।


উৎপাদন কলাকৌশল

জমি তৈরী
প্যাশন ফল চাষাবাদের জন্য অবশ্যই সুনিষ্কাশিত জমি নির্বাচন করতে হবে । নির্বাচিত জমির ভালভাবে আগাছা পরিষ্কার করে নিতে হবে।

গর্ত প্রস্ত্ততি
চারা রোপনের গর্তের আকার হচ্ছে ৪৫ সে.মি. x ৪৫ সে.মি. x ৪৫ সে.মি. । গর্তের উপরের ২০ সে.মি. মাটি আলাদা রেখে তার সাথে নিম্নলিখিত হারে সার মিশ্রিত করতে হবে।
১. গোবর বা কম্পোস্ট ১০ কেজি
২. টি এস পি ২০০ গ্রাম
৩. এম পি ২০০ গ্রাম
সার মিশ্রিত উপরের মাটি গর্তের নিচে এবং নিচের মাটি উপরে দিয়ে গর্ত ভরাট করে ৭-১০ দিন রেখে দিতে হবে।

চারা রোপন
বীজের চারা বা কাটিং বা গ্রাফটিং মধ্য বৈশাখ থেকে মধ্য ভাদ্র (মে থেকে আগস্ট) মাস পর্যন্ত রোপনের উপযুক্ত সময়। চারা ৩ মি.x ৬ মি. দূরত্বে রোপন করা হয়।

মাচা তৈরী ও প্রুনিং
প্যাশন ফল বানিজ্যিক ভাবে চাষের জন্য বিভিন্ন ধরনের মাচা তৈরী করা হয়। একক তার বিশিষ্ট মাচা তৈরীর জন্য চারা হতে ৩ মি. দূরে ২.৭৫ মি. লম্বা খুঁটি ৭৫ সে.মি. গভীরে পুঁতে খুঁটির মাথায় ১৪ গজের গ্যালভানাইজড তার বেঁধে দেয়া হয়। চারার গোড়ায় একটি খুঁটি পুতে তার পর্যন্ত দেয়া হয়। গাছ তার পর্যস্ত পোঁছিলে অগ্রভাগ কেটে দিয়ে দুদিক তারের উপর শাখা বিস্ততে করা হয়। তারের নিচের কান্ড হতে কোন শাখা বের হলে তা কেটে ফেলা হয। মাঝে মাঝে পুরাতন ও মরা ডাল কেটে দিতে হয়। এছাড়া বাড়ির পাশে মাচা করে বা বিভিন্ন ফল সবজির বেড়ায় গাছ উঠিয়ে দেয়া যায়।

সার প্রয়োগ
প্যাশন ফলের গাছের বৃদ্ধি ও ফলনের জন্য সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন। গাছের বৃদ্ধির জন্য নাইট্রোজেন অন্যতম পুষ্টি উপাদান হিসাবে বিবেচিত হয় এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের মধ্যে রয়েছে ফসফরাস, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি। বর্ষার আগে ও পরে দু’ কিস্তিতে নিম্নের ছক অনুযায়ী সার প্রয়োগ করতে হবে।

বয়স অনুপাতে গাছ প্রতি সারের পরিমাণ


গাছের বয়স (বছর) গোবর/কম্পোস্ট (কেজি) ইউরিয়া (গ্রাম) টি এস পি (গ্রাম) এম পি (গ্রাম)
১-৩ ১০ ৪০০ ৩০০ ৫০০
৪-৬ ১২ ৮০০ ৫০০ ১০০০
৭ বা তদুর্ধ্ব ১৫ ১২০০ ৮০০ ১৪০০

সেচ প্রয়োগ
চারা রোপণের পর ঝরণা দ্বারা বেশ কিছুদিন পর্যন- সেচ দিতে হয়। সর্বোচ্চ ফলনের জন্য ফুল আসা ও ফলের বিকাশের সময় মাটিতে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা থাকা আবশ্যক। এ জন্য খরার মৌসুমে প্যাশন ফলে সেচ দেওয়া প্রয়োজন। বর্ষাকালে গাছের গোড়ায় যাতে পানি না জমতে পারে সেজন্য নিষ্কাশনের সুবন্দোবস- করতে হবে।

আগাছা দমন
গাছের গোড়া সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। পাহাড়ী এলাকায় আগাছা দমনে তৎপর থাকতে হবে।

ফুল আসার সময়
চারা রোপণের ১৫-১৮ মাসের মধ্যে ফল পাওয়া যাবে। মার্চ মাস ফুল আসার প্রধান মৌসুম এবং জুন-জুলাই মাসে ফল পাওয়া যায়। জুলাই-আগস্ট মাসেও কিছু ফুল আসে এবং ডিসেম্বর মাসে ফল দেয়।

পরাগায়ন
প্যাশন ফলের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় স্ব-পরাগায়ন হয় না এবং সফলভাবে ফল ধারনের জন্য পর-পরাগায়ন সংঘটিত হয়। পর- পরাগায়নের ফলে উৎপাদিত ফলের ওজন, রসের পরিমান এবং বীজের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। সাধারণত কার্পেন্টার মাছি, মৌমাছি, বোলতা দ্বারা পর পরাগায়ন সম্পন্ন হয়। হলুদ প্যাশন ফলের ফুল দুপুরে উন্মুক্ত হয় এবং সন্ধ্যায় বন্ধ হয়ে যায়। হস্ত- পরাগায়নে উৎপাদন বেশি হয়।

ফল ধারন

পরাগায়নের পরপরই ফলধারন প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং পরাগায়নের ২০-৪০ দিনের মধ্যে ফলের বৃদ্ধি সর্বোচ্চ হয়। তাছাড়া তাপমাত্রা বেশি থাকলেও ফলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়। নিষেক প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে ফলের পরিপক্কতা আসতে প্রায় ৯০ দিন সময় লাগে।


ফল সংগ্রহ
হলুদ প্যাশন ফল সাধারণত বাগানের নিচে পতিত হলে তা ১/২ দিন পর পর সংগ্রহ করা যায়। তাছাড়া সম্পূর্ণ হলুদ ফল গাছ হতে হাত দ্বারা সংগ্রহ করা উত্তম।


ফল সংরক্ষণ
প্যাশন ফল সংগ্রহের পর কয়েকদিন রেখে দিলে চামড়া কুচকে যায় এবং সুগন্ধি কিছুটা নষ্ট হয়। অপরপক্ষে ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং ৮০-৯০% আপেক্ষিক আর্দ্রতায় প্যাশন ফল খুব সহজেই ৪-৫ সপ্তাহ সংরক্ষণ করা যায়।

রোগ বালাই দমন
হলুদ প্যাশন ফলে রোগের আক্রমণ কম হয়। তবে নিম্নলিখিত রোগের প্রাদুর্ভাব হতে পারে ।


১। বাদামী দাগ রোগ
অষঃবৎহধৎরধ ঢ়ধংংরভষড়ৎধব নামক এক ধরনের ছত্রাক এই রোগের জন্য দায়ী। পাতা, কান্ড ও ফলে এটি আক্রমণ করে। প্রথমে পাতায় ছোট ছোট বাদামী দাগ দেখা যায় যা ক্রমান্বয়ে বড় হয়। কান্ডে গাঢ় বাদামী ধরনের লম্বালম্বি ক্ষত দেখা যায়। ফলেও গভীর বাদামী কেন্দ্র বিশিষ্ট গোলাকার ক্ষত দেখা যায়। অবশেষে ফল কুঁচকে যায় এবং ঝরে পড়ে।

প্রতিকার
* প্যাশন ফলের মাচার চারিপাশ সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
* শুকনো ও মরা লতাপাতা নিয়মিত সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে।
* আক্রমণ বেশি হলে রোভরাল ১ লিটার পানিতে ২ গ্রাম পরিমাণ মিশিয়ে ১৫ দিন অন-র অন-র ৩-৪ বার সেপ্র করে দিতে হবে।


২। উডিনেস
এটি কিউকুমবার মোজাইক ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়। এ রোগে আক্রান্ত পাতায় হলুদ দাগ দেখা যায় এবং পাতা চর্মবৎ ও বিবর্ণ হয়ে পড়ে। কান্ডের পর্বমধ্যগুলো ছোট হয়ে আসে। ফল আকারে ছোট হয়, ফলের খোসা মোটা ও শক্ত হয় এবং অল্প পাল্প উৎপন্ন হয়। এফিড পোকা দ্বারা এ রোগ ছড়ায়।

প্রতিকার
* বাহক পোকা দমনের জন্য ম্যালাটাফ/ম্যালাথিয়ন/ম্যালাটক্‌্র (প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি) নিয়মিতভাবে সেপ্র করতে হবে।

ক্ষতিকর পোকা দমন
এ পর্যন্ত প্যাশন ফলে পোকামাকড় এর আক্রমন তেমনভাবে লক্ষ্য করা যায়না। তবে নিম্নলিখিত পোকামাকড়ের উপদ্রব হতে পারে ।

ফলের মাছি

ক্ষতির প্রকৃতি
পূর্নাঙ্গ স্ত্রী পোকা সাধারনতঃ আধা পাকা ফলের গায়ে ছিদ্র করে ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে ম্যাগট ফলের পাল্প খেতে থাকে। ডিম পাড়ার ছিদ্র স্থানে ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে ফলকে পঁচিয়ে ফেলে। আক্রান্ত ফল সহজেই ঝরে পড়ে।

প্রতিকার
* আক্রান্ত পতিত ফল কুড়িয়ে ধ্বংস করে ফেলতে হবে।
* সেক্স ফেরোমোন (মিথাইল ইউজিনল) ফাদঁ ব্যবহার করে পুরুষ পোকা আকৃষ্ট করে দমন করা যায়।
* সেকুফন ৮০ এস পি (ট্রাইক্লোরোফন) ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে সেপ্র করতে হবে। তবে সেপ্র করার ১৫ দিনের মধ্যে ফল খাওয়া যাবেনা ।

তথ্যসূত্র : দি-এডিটর

মনের উঠোনে

সাম্প্রতিক সংযোজন

মোবাইল থেকে দেখুন

আমাদের দেশ এখন আপনার মুঠোফোনে, মোবাইল থেকে লগইন করুন আমাদের দেশ

দ র্শ না র্থী

দ র্শ না র্থী

free counters

কে কে অনলাইনে আছেন