মরিচ বাংলাদেশের একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ মসলা জাতীয় ফসল। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং ফসফরাস রয়েছে। বাংলাদেশের প্রায় ১.৫০ লাখ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ হয় এবং মরিচের গড় উৎপাদন প্রায় ১.৩৮ টন/হেক্টর। মরিচ গাছ বিভিন্ন প্রকার পোকামাকড় দ্বারা আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে মাইট একটি অত্যন্ত ক্ষতিকর পেস্ট। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক হারে মাইটের আক্রমণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ পোকা গাছ থেকে রস শোষণ করে মরিচের মোট উৎপাদন এবং গুণগত মান কমিয়ে দেয়।
মাইটের বৈশিষ্ট্য : মাইট অত্যন্ত ছোট, সাধারণত হাত লেন্সের সাহায্য ব্যতীত দেখা যায় না। এ পোকা উপবৃত্তাকার, উজ্জ্বল, হলদে সবুজ বর্ণের। তবে মৃত মাইটগুলো হলদে বাদামি বর্ণের হয়ে থাকে। স্ত্রী মাইটের পেছনের অংশে লম্বালম্বি হালকা সাদা দাগ দেখা যায়। পূর্ণ বয়স্ক স্ত্রী মাইট লম্বয় প্রায় ০.২ মি.মি. এবং পুরুষ প্রায় ০.১১ মি.মি.। এর চার জোড়া সাদাটে পা আছে। পুরুষ মাইটের চতুর্থ জোড়া পা বর্ধিত এবং স্ত্রীর ক্ষেত্রে এটি খুবই ছোট আকৃতির। লার্ভা তিন জোড়া পা-বিশিষ্ট, প্রায় ০.১ মি.মি. থেকে ০.২ মি.মি. লম্বা ডিম থেকে বের হওয়ার পর লার্ভাগুলো বেশ লম্বা দেখায়, পরে স্ত্রী লার্ভা হলদে সবুজ বা ঘন সবুজ বর্ণের এবং পুরুষ লার্ভাগুলো হলদে বাদামি বর্ণ ধারণ করে। লার্ভাগুলো খুব আস্তে আস্তে চলাচল করে, খুব একটা দূরে যায় না।
ক্ষতির প্রকৃতি : লার্ভা এবং পূর্ণ বয়স্ক মাইট গাছের কোষ ছিদ্র করে রস শোষণ করে এবং বিষাক্ত পদার্থ নিঃসৃত করে। গাছে খাদ্য তৈরি এবং পানি স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘি্নত হয়। পাতা সরু, ফ্যাকাশে, মোচড়ানো এবং নিচের দিকে বাঁকানো হয়। পাতা চামড়ার মতো হয়ে যায় এবং শিরাগুলো মোটা হয়। পাতা এবং কচি কাণ্ড লালচে বর্ণের হয়। ফুলের কুঁড়ি বাঁকানো এবং মোচড়ানো হয়। গাছের বৃদ্ধি বিঘি্নত হয়, কচি গাছের আকার ছোট হয় এবং বয়স্ক গাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে ফুল ঝরে পড়ে। ফল বিকৃত, ক্ষতবিশিষ্ট, অপরিপক্ব এবং অসম আকৃতির হয়। ফলের উৎপাদন এবং বাজার মূল্য কমে যায়। সাধারণত নতুন পাতা এবং ছোট ফলে মাইট বেশি দেখা যায় কারণ এ পোকা শক্ত টিস্যু খেতে পারে না। লার্ভা এবং পূর্ণ বয়স্ক মাইটগুলো পাতার নিচের দিক খেতে বেশি পছন্দ করে। এ পোকা মরিচ ছাড়াও তুলা, বেগুন, পেয়ারা, লেবু জাতীয় ফসল, পাট, পেঁপে, আলু, টমেটো, আম, বরবটি, তিল, আঙ্গুরসহ বিভিন্ন ফসল এবং বিভিন্ন শোভা বর্ধনকারী গাছেও আক্রমণ করে থাকে।
জীবনচক্র : এ পোকার জীবনচক্রের চারটি ধাপ_ ডিম, লার্ভা, পিউপা (নিম্ফে) এবং পূর্ণ বয়স্ক। মাত্র ৪-৬ দিনে এ পোকা ডিম থেকে পূর্ণ বয়স্ক মাইটে পরিণত হয়। পূর্ণ বয়স্ক স্ত্রী মাইট নতুন বৃদ্ধিপ্রাপ্ত পাতার নিচে একটি একটি করে (প্রতিদিনে ২-৫টি) প্রায় ২০-৫০টি ডিম পাড়ে। এভাবে ৮-১৩ দিন ডিম দেওয়ার পর এ পোকা মারা যায়। ডিমগুলো অত্যন্ত ক্ষুদ্র, প্রায় ০.৭ মি.মি. লম্বা, ২-৩ দিন পর ডিম ফুটে লার্ভা বের হয়। এরা যৌন মিলন ছাড়াও ডিম দেয়, তবে সে ডিম থেকে শুধু পুরুষ বাচ্চা হয়। লার্ভাগুলো ২-৩ দিন খাওয়ার পর পিউপায় পরিণত হয়। পিউপাগুলো স্থির অবস্থায় থাকে। কোনো খাদ্য গ্রহণ করে না। এ ধাপে এর চার জোড়া পা থাকে। ২-৩ দিন পর পোকা পূর্ণ বয়স্ক মাইটে পরিণত হয়। স্থির স্ত্রী পিউপগুলো পুরুষ মাইটের কাছে খুবই আকর্ষণীয়। এ পোকা স্ত্রী পিউপাকে (নিম্ফ) বহন করে নতুন পাতায় নিয়ে যায়। ধারণা করা হয় পুরুষ মাইট স্ত্রী মাইটকে মিলন পূর্ববর্তী পাহারা প্রদান করে। যখন পিউপা ধাপ থেকে পূর্ণ বয়স্ক স্ত্রী পোকায় পরিণত হয় তখনই পুরুষটি এর সঙ্গে মিলিত হয়।
দমন ব্যবস্থাপনা : মরিচ উৎপাদনের জন্য ছায়ামুক্ত স্থান নির্বাচন করতে হবে। ফল সংগ্রহের সময় অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে যাতে সংগ্রহকারীর কাপড় এবং শরীর দ্বারা মাইটগুলো আক্রান্ত গাছ থেকে অনাক্রান্ত গাছ বা ক্ষেতের মধ্যে ছড়াতে না পারে। বিভিন্ন অপোষক ফসলের সঙ্গে আন্তঃফসল করতে হবে এবং এর শস্য পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সেচ প্রয়োগের মাধ্যমে এর আক্রমণ কমানো সম্ভব।
তথ্য সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন, তারিখ: ২৭-১১-২০১০
মাইটের বৈশিষ্ট্য : মাইট অত্যন্ত ছোট, সাধারণত হাত লেন্সের সাহায্য ব্যতীত দেখা যায় না। এ পোকা উপবৃত্তাকার, উজ্জ্বল, হলদে সবুজ বর্ণের। তবে মৃত মাইটগুলো হলদে বাদামি বর্ণের হয়ে থাকে। স্ত্রী মাইটের পেছনের অংশে লম্বালম্বি হালকা সাদা দাগ দেখা যায়। পূর্ণ বয়স্ক স্ত্রী মাইট লম্বয় প্রায় ০.২ মি.মি. এবং পুরুষ প্রায় ০.১১ মি.মি.। এর চার জোড়া সাদাটে পা আছে। পুরুষ মাইটের চতুর্থ জোড়া পা বর্ধিত এবং স্ত্রীর ক্ষেত্রে এটি খুবই ছোট আকৃতির। লার্ভা তিন জোড়া পা-বিশিষ্ট, প্রায় ০.১ মি.মি. থেকে ০.২ মি.মি. লম্বা ডিম থেকে বের হওয়ার পর লার্ভাগুলো বেশ লম্বা দেখায়, পরে স্ত্রী লার্ভা হলদে সবুজ বা ঘন সবুজ বর্ণের এবং পুরুষ লার্ভাগুলো হলদে বাদামি বর্ণ ধারণ করে। লার্ভাগুলো খুব আস্তে আস্তে চলাচল করে, খুব একটা দূরে যায় না।
ক্ষতির প্রকৃতি : লার্ভা এবং পূর্ণ বয়স্ক মাইট গাছের কোষ ছিদ্র করে রস শোষণ করে এবং বিষাক্ত পদার্থ নিঃসৃত করে। গাছে খাদ্য তৈরি এবং পানি স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘি্নত হয়। পাতা সরু, ফ্যাকাশে, মোচড়ানো এবং নিচের দিকে বাঁকানো হয়। পাতা চামড়ার মতো হয়ে যায় এবং শিরাগুলো মোটা হয়। পাতা এবং কচি কাণ্ড লালচে বর্ণের হয়। ফুলের কুঁড়ি বাঁকানো এবং মোচড়ানো হয়। গাছের বৃদ্ধি বিঘি্নত হয়, কচি গাছের আকার ছোট হয় এবং বয়স্ক গাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে ফুল ঝরে পড়ে। ফল বিকৃত, ক্ষতবিশিষ্ট, অপরিপক্ব এবং অসম আকৃতির হয়। ফলের উৎপাদন এবং বাজার মূল্য কমে যায়। সাধারণত নতুন পাতা এবং ছোট ফলে মাইট বেশি দেখা যায় কারণ এ পোকা শক্ত টিস্যু খেতে পারে না। লার্ভা এবং পূর্ণ বয়স্ক মাইটগুলো পাতার নিচের দিক খেতে বেশি পছন্দ করে। এ পোকা মরিচ ছাড়াও তুলা, বেগুন, পেয়ারা, লেবু জাতীয় ফসল, পাট, পেঁপে, আলু, টমেটো, আম, বরবটি, তিল, আঙ্গুরসহ বিভিন্ন ফসল এবং বিভিন্ন শোভা বর্ধনকারী গাছেও আক্রমণ করে থাকে।
জীবনচক্র : এ পোকার জীবনচক্রের চারটি ধাপ_ ডিম, লার্ভা, পিউপা (নিম্ফে) এবং পূর্ণ বয়স্ক। মাত্র ৪-৬ দিনে এ পোকা ডিম থেকে পূর্ণ বয়স্ক মাইটে পরিণত হয়। পূর্ণ বয়স্ক স্ত্রী মাইট নতুন বৃদ্ধিপ্রাপ্ত পাতার নিচে একটি একটি করে (প্রতিদিনে ২-৫টি) প্রায় ২০-৫০টি ডিম পাড়ে। এভাবে ৮-১৩ দিন ডিম দেওয়ার পর এ পোকা মারা যায়। ডিমগুলো অত্যন্ত ক্ষুদ্র, প্রায় ০.৭ মি.মি. লম্বা, ২-৩ দিন পর ডিম ফুটে লার্ভা বের হয়। এরা যৌন মিলন ছাড়াও ডিম দেয়, তবে সে ডিম থেকে শুধু পুরুষ বাচ্চা হয়। লার্ভাগুলো ২-৩ দিন খাওয়ার পর পিউপায় পরিণত হয়। পিউপাগুলো স্থির অবস্থায় থাকে। কোনো খাদ্য গ্রহণ করে না। এ ধাপে এর চার জোড়া পা থাকে। ২-৩ দিন পর পোকা পূর্ণ বয়স্ক মাইটে পরিণত হয়। স্থির স্ত্রী পিউপগুলো পুরুষ মাইটের কাছে খুবই আকর্ষণীয়। এ পোকা স্ত্রী পিউপাকে (নিম্ফ) বহন করে নতুন পাতায় নিয়ে যায়। ধারণা করা হয় পুরুষ মাইট স্ত্রী মাইটকে মিলন পূর্ববর্তী পাহারা প্রদান করে। যখন পিউপা ধাপ থেকে পূর্ণ বয়স্ক স্ত্রী পোকায় পরিণত হয় তখনই পুরুষটি এর সঙ্গে মিলিত হয়।
দমন ব্যবস্থাপনা : মরিচ উৎপাদনের জন্য ছায়ামুক্ত স্থান নির্বাচন করতে হবে। ফল সংগ্রহের সময় অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে যাতে সংগ্রহকারীর কাপড় এবং শরীর দ্বারা মাইটগুলো আক্রান্ত গাছ থেকে অনাক্রান্ত গাছ বা ক্ষেতের মধ্যে ছড়াতে না পারে। বিভিন্ন অপোষক ফসলের সঙ্গে আন্তঃফসল করতে হবে এবং এর শস্য পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সেচ প্রয়োগের মাধ্যমে এর আক্রমণ কমানো সম্ভব।
তথ্য সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন, তারিখ: ২৭-১১-২০১০