কৃষিতে বছরে আয় ৩০ লক্ষ টাকা

Monday, August 2, 2010


মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাগাবলা ইউনিয়নের রামপুর গ্রাম। এ গ্রামের আব্দুল আজিজ টাকার জন্য এক সময় লন্ডনে থাকতেন। পাশাপাশি শ্রীমঙ্গল শহরে পর্যটকদের জন্য টি-টাউন রেস্ট হাউজ নির্মাণ করে রেষ্ট হাউস ব্যবসায় একনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন। কিন্তু অযত্নে অবহেলায় দেশের মাটিতে পড়েছিল তার পৈত্রিক অনেক অনাবাদি জমি। একটা সময় তিনি অনুভব করলেন পতিত জমি কীভাবে কাজে লাগানো যায়। সময়টা ছিল ৪ থেকে ৫বছর পূর্বে। দেশের মাটিতে এসে মাটির সদব্যবহারের জন্য ব্যস্তô হয়ে পড়েন তিনি। আব্দুল আজিজ স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে তার পতিত জমিতে ভিত্তি বীজ (মাদার সীড) চাষের প্রদক্ষেপ নেন এবং প্রথম বছরই তিনি উৎপাদনে সফল হন।

সফলতার অগ্রযাত্রায় এক পর্যায়ে সরকারই তার কাছ থেকে ভিত্তি বীজ কিনে সংরক্ষণ করে রাখে। এরপর থেকে তার উৎসাহ বেড়ে যায়। নেশা জন্মে যায় কৃষি কাজে। বিভিন্ন স্থান ঘুরে ঘুরে সংগ্রহ করতে থাকেন একের পর এক নতুন ফর্মূলা। ফর্মূলা বাস্তবায়নে সর্বশেষ তিনি এ বছর জৈব সার ব্যবহার করে বিগত বছরগুলোর চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেশি ফলন পান। তিনি জানান, বিগত সময়ে কিয়ার প্রতি ২১শ টাকার সার ব্যবহার করে যে ফলন পেয়েছেন এ বছর জৈব সার ব্যবহার করে ফলন হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। শ্রীমঙ্গল টি-টাউন রেষ্ট হাউসের স্বত্ব্যাধিকারী আব্দুল আজিজ প্রথম বৃহৎ আকারে ভিত্তি বীজ উৎপাদনে মৌলভীবাজার জেলায় অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।

তিনি একই সাথে বীজ ধান, সৃজনাল সবজি চাষ, বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছের বাগান করে প্রায় শতাধিক বেকার লোকের কাজেরও সুযোগ করে দিয়েছেন। এ সকল খামার থেকে তিনি বছরে আয় করছেন ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা। তাঁর সংগ্রহে প্রায় আড়াইশ প্রজাতির গাছ রয়েছে। এর মধ্যে বাউকুল, আপেল কুল, ঢাকাইয়া ত্রিবিড় বড়ই, সুবর্ণা আম, পাকিস্তôানী বারমাসী আম, বোম্বে আম, রাজশাহী আমড়া, থাইলেন্ডী বারমাসী আমড়া, ছাতিকী কমলা, থাইলেন্ডী জাম, তিন প্রজাতির পেয়ারা, বারমাসী কাঁঠাল, ভাওয়ালী কাঁঠাল, সাতকড়া, আগর গাছ, থাইলেন্ডী নারকেল, দেশি নারিকেল, সুপারী, বারমাসী জাম্বুরা, আঙুর, কাগজী লেবু, কুয়েতী খেজুর, লাম্বু গাছ, চামল, সেগুন, একাশী, মেহগনি, শিল কড়ই, তেজপাতা, নিম, আমলকি, হরতকি, লুকলুকি, জলপাই, কদম, তেঁতুল, দারুচিনিসহ আরও শতাধিক।

এবারে তার উৎপাদিত ধানের জাতগুলো হল বি· আর-১১ ও ৩৪, নাজির শাইল, কালা বিড়ইন, সাদা বিড়ইন। তাঁর এ বাম্পার ফলনে উৎফুল্ল এলাকাবাসী। আব্দুল আজিজের সাফল্য দেখে অনেকেই আগামী মৌসুমে জৈব সার ব্যবহারের চিন্তা করছেন।

বিগত বছরে তিনি ২ হাজার মণ বীজ ধান উৎপাদন করেছেন। তার এই উৎপাদনে ব্যয় হয়েছিল ৬ লক্ষ টাকা। এ ধান বিক্রি করেছেন ২১ লক্ষ টাকা। এতে তার লাভ হয়েছে ১৫ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে সরকারই তার কাছ থেকে কিনে নিয়েছেন এক হাজার মণ ধান। যা সরকারের সংরক্ষণে রয়েছে। চলমান মৌসুমেও তাঁর উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে গেছেন। ইতিমধ্যে তিনি প্রায় এক হাজার মণ বীজ ধান উৎপাদন করেছেন। আব্দুল আজিজ আশা করছেন, একই জায়গায় আরও প্রায় আড়াই হাজার মন ধান উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এছাড়াও তিনি তার পতিত জমিতে সৃজনাল সবজি চাষ করে বছরে প্রায় ২ লক্ষ টাকা আয় করেন। এসব কিছুর পাশাপাশি তিনি তার বাড়ির আশেপাশে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ, বনজ ও ঔষধি বৃক্ষসহ প্রায় শতাধিক প্রজাতির বৃক্ষ রোপণ করেছেন।

- বিকুল চক্রবর্ত্তী, মৌলভীবাজার

মনের উঠোনে

সাম্প্রতিক সংযোজন

মোবাইল থেকে দেখুন

আমাদের দেশ এখন আপনার মুঠোফোনে, মোবাইল থেকে লগইন করুন আমাদের দেশ

দ র্শ না র্থী

দ র্শ না র্থী

free counters

কে কে অনলাইনে আছেন