সুষম সার ব্যবস্থাপনা

Saturday, August 7, 2010


● মানুষের মত গাছেরও বৃদ্ধির জন্য খাদ্যের প্রয়োজন আছে। সাধারণত: ফসলের খাদ্য উপাদান ১৬টি। তার মধ্যে গাছের মোট শুষ্ক অংশের শতকরা প্রায় ৯৫ ভাগ তৈরি হয় তিনটি উপাদানের (কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন) মাধ্যমে যা গাছ বাতাস ও পানি থেকে সংগ্রহ করে।

● বাকি মাত্র শতকরা ৫ ভাগ শুষ্ক অংশ তৈরি হয় ১৩টি উপাদানের (নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশ, সালফার, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ম্যাঙ্গানিজ, তামা, জিংক, বোরণ, মলিবডিনাম ও ক্লোরিণ) মাধ্যমে যা গাছ মাটি থেকে সংগ্রহ করে থাকে।

● মাটিতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় উপাদানগুলোর মধ্যে বার বার ফসল আবাদের ফলে সাধারণত: নাইট্রোজেন ফসফরাস, পটাশ ও সালফারের ঘাটতি পড়ে।

● শস্য উৎপাদনে বিভিন্ন ধরণের সার মাটি ও শস্যের প্রকৃত প্রয়োজনের নিরীখে সঠিক পরিমানে প্রয়োগকে সুষম সারের ব্যবহার বলা হয়। সার নির্ভর কৃষি ব্যবস্থাপনায় সুষম সার সকল কার্যক্রমের মুখ্য।

● মাটি থেকে উদ্ভিদ যে পরিমান পুষ্টি গ্রহণ করে সেই পরিমান পুষ্টি পূরণের জন্য জমিতে যতটুকু সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন তা না করার ফলে অব্যাহতবাবে জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে এবং দেশে কৃষি উৎপাদন দারুনভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। নিবিড় শস্য আবাদ এলাকায় বার্ষিক পুষ্টি হ্রাসের পরিমান ১৮০ থেকে ২৫০ কেজিরও অধিক বলে অনুমিত হচ্ছে।

● বাংলাদেশে উদ্ভিদের খাদ্য হিসেবে সারের ব্যবহার একবারেই সুষম নয়। বিশেষ করে দেমে পসফরাস, পটাশ ও সালফার ব্যবহারের পরিমান অত্যন্ত কম। নাইট্রোজেনের ব্যবহার প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু ফসফরাস ও পটাশের ব্যবহারের পরিমান তেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে না এমনকি কোন কোন বছর কমেও যাচ্ছে।

● শুধু নাইট্রোজেন সার ব্যবহার করে যে অতিরিক্ত ফসল পাওয়া যায় তার ফলে সঞ্চিত সহজলভ্য ফসফরিক এসিড, পটাশ ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান নিঃশেষ হয়ে যায়, যার ফলে ফসফরিক এসিড বা পটাসিয়ামের মতো বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি দেখা যায়। এই কারনে পরবর্তীকালে নাইট্রোজেন সার প্রয়োগ করে শস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায় না। এ সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় হচ্ছে মাটি পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সমূহ সঠিকভাবে বা সুষমভাবে প্রয়োগ করা।

● নাইট্রোজেন , ফসফরাস ও পটাস এই ৩টি উপাদান যখন সঠিক পরিমানে ব্যবহার হয় তখন এটি উদ্ভিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

সুষম সার ব্যবহারের উদ্দেশ্য হলো:


ফসলেরফলনবৃদ্ধি আদি মাটির পুষ্টি ঘাটতি সংশোধন
ফসলের মান উন্নয়ন মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি
খামারের আয়বৃদ্ধি পরিবেশ ঠিক রাখা

মাটির উর্বরতা ও উৎপাদন ক্ষমতার পুনঃরুদ্ধার করণ।

সুষম হারে সঠিক পরিমান সার প্রয়োগ নিশ্চিত করার লক্ষে বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। কৃষককে পরামর্শ দেয়ার সময় যে সকল প্রধান বিষয়, বিশেষভাবে বিবেচনা করা উচিত তা হলো:

<ফসল বিন্যাসে বর্তমান ফসলের প্রত্যাশিত ফলনের মাত্রা, নির্দিষ্ট জমির উর্বরতা, পুষ্টি উপাদানের অপরাপর উৎস (জৈব সার, সবুজ সার, ফসলের পরিত্যক্ত অংশ) প্রভৃতি বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে অজৈব সারের ধরণ ও পরিমান নির্ধারণ করা প্রয়োজন।


<বিভিন্ন প্রকারের সার প্রয়োগ পদ্ধতি ও সময়, সারে বিদ্যমান নির্দিষ্ট উপাদান সমূহের পরিমান, সারের ধরণ (জৈব সার, অজৈব সার, অদ্রবণীয় ইত্যাদি), সারের অবশিষ্ট পুষ্টির কার্যকারিতা এবং শস্য বিন্যাস ও ফসলের গড়ণ/বাড়নের পর্যায়ে তার প্রভাব এবং ফসল উৎপাদনের পরিবেশ (অর্থাৎ সেচ নির্ভর না বৃষ্টি নির্ভর) ইত্যাদি। ফসল উৎপাদনের একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।

তথ্যসূত্র : দি-এডিটর

মনের উঠোনে

সাম্প্রতিক সংযোজন

মোবাইল থেকে দেখুন

আমাদের দেশ এখন আপনার মুঠোফোনে, মোবাইল থেকে লগইন করুন আমাদের দেশ

দ র্শ না র্থী

দ র্শ না র্থী

free counters

কে কে অনলাইনে আছেন