পুষ্টি মূল্যঃধান ও গমের তুলনায় ভুট্টারপুষ্টিমান বেশী। এতে প্রায় ১১% আমিষ জাতীয় উপাদান রয়েছে। আমিষে প্রয়োজনীয় এ্যামিনোএসিড, ট্রিপটোফ্যান ও লাইসিন অধিক পরিমানে আছে। এছাড়া হলদে রংয়ের ভুট্টা দানায়প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ৯০ মিলিগ্রাম ক্যারোটিন বা ভিটামিন "এ" থাকে।
ভেষজ গুনঃ
ব্যবহারঃভুট্টার দানা মানুষের খাদ্য হিসেবে এবংভুট্টার গাছ ও সবুজ পাতা উন্নত মানের গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। হাঁস-মুরগি ওমাছের খাদ্য হিসেবেও এর যথেষ্ট গুরূত্ব রয়েছ। শুধু পশু, মুরগির খামার ও মাছেরচাহিদা মিটানোর জন্যই বছরে প্রায় ২ লক্ষ ৭০ হাজার টন ভুট্টা দানা প্রয়োজন।বাংলাদেশে ভুট্টার জমি দ্রুত বাড়ছে।
উপযুক্তজমি ও মাটিঃ বেলে দোআশ ও দোআশ মাটি ভুট্টা চাষের জন্য উপযোগী। লক্ষ্য রাখতে হবে যেনজমিতে পানি জমে না থাকে
জাত পরিচিতিঃভুট্টার জাত সংগ্রহ ও বাছাই করনেরমাধ্যমে বিএআরআই আজ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশেরক্রমবর্ধমান চাহিদা মিটাতে বহুমুখী ব্যবহারের উপযোগী ভুট্টা জাতের চাষের সম্ভবনাখুবই উজ্জ্বল।
ভুট্টার জাতঃ
বর্ণালীঃবাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটকর্তৃক উদ্ভাবিত বর্ণালী জাতটি ১৯৮৬ সালে অনুমোদিত হয়। স্থানীয় জাতসমূহের চেয়েবর্ণালী জাতের গাছের উচ্চতা বেশী। এ জাতের মোচা আকারে বেশ বড় এবং আগার দিক কিছুটাসরু। মোচার অগ্রভাগ পযন- শক্তভাবে খোসাদ্বারা আবৃত থাকে। বর্ণালীর দানা সোনালী হলদেরংয়ের এবং দানা আকারে বেশ বড়। হাজার দানার ওজন ২৪৫-৩২০ গ্রাম। এ জাতটি রবি মৌসুমে১৪০-১৪৫ দিনে এবং খরিফ মৌসুমে ৯৫-১০০ দিনে পাকে। ফলন প্রতি হেক্টরে রবি মৌসুমে৫.৫-৬.০ টন এবং খরিফ মৌসুমে ৪.০-৪.৫ টন হয়। বর্ণালী জাতে বেশী পরিমানে ক্যারোটিনআছে বলে এর দানা হাঁস-মুরগির খাদ্য তৈরির একটি উত্তম উপকরণ।
শুভ্রাঃশুভ্রা নামে ভুট্টার উচ্চ ফলনশীল এজাতটি ১৯৮৬ সালে অনুমোদন করা হয়। স্থানীয় জাতের চেয়ে শুভ্রা জাতের গাছের উচ্চতাবেশী। শুভ্রার দানা আকারে বড় এবং সম্পূর্ণ মোচা দানায় ভর্তি থাকে। হাজার দানার ওজন৩১০-৩৩০ গ্রাম। এ জাতটির গাছের উপরের অংশের পাতা নিচের অংশের পাতার চেয়ে আকারে ছোটএবং অপেক্ষাকৃত সরু। জাতটি রবি মৌসুমে ১৩৫-১৪৫ দিনে এবং খরিফ মৌসুমে ৯৫-১০৫ দিনেপাকে। পরিপক্ক অবস্থায় মোচা সংগ্রহ করলে প্রতি হেক্টরে ৫০-৫৩ হাজার মোচা পাওয়া যায়।ফলন প্রতি হেক্টরে রবি মৌসুমে ৪.০-৫.৫ টন এবং খরিফ মৌসুমে ৩.৫-৪.৫ টন হয়। দানার রংসাদা বলে গমের আটার সাথে মিশিয়ে রুটি তৈরি করা যায়।
খইভুট্টাঃখইভুট্টা জাত খই এর জন্য ১৯৮৬ সালেজাত হিসেবে অনুমোদন লাভ করে। গাছ মাঝারি উচ্চতা সম্পন্ন, মোচার উপরের পাতাঅপেক্ষাকৃত সরু এবং দানা আকারে ছোট। হাজার দানার ওজন ১৪০-১৫০ গ্রাম। খইভুট্টা রবিমৌসুমে ১২৫-১৩০ দিনে এবং খরিফ মৌসুমে ৯০-১০০ দিনে পাকে। ফলন হেক্টরে রবি মৌসুমে৩.৫-৪.০ টন এবং খরিফ মৌসুমে ২.৫-৩.৫ টন হয়। খইভুট্টার দানা থেকে শতকরা ৯০-৯৫ ভাগ খইপাওয়া যায়। খই আকারে বেশ বড় ও সুস্বাদু।
মোহরঃভুট্টার মোহর জাত ১৯৯০ সালে উচ্চ ফলনশীলজাত হিসেবে অনুমোদন লাভ করে। মোহর জাতের গাছ অন্যান্য জাতের গাছের চেয়ে বেশ উঁচু, ফলে খড়ের পরিমান বেশী হয়। এ জাতের মোচা পাকার পরেও পাতা বেশ সবুজ থাকে বলে পাতাউৎকৃষ্ট গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। মোহর জাতের কান্ড শক্ত হওয়ায় বাতাসে সহজেহেলে পড়ে না। মোচা মোটা,লম্বা এবং সম্পূর্ণ মোচা দানায় পূর্ণ থাকে। দানা উজ্জ্বলহলুদ এবং আকারে বড়। হাজার দানার ওজন ১৮০-৩০০ গ্রাম। মোহর জাতটি দানা এবং গো-খাদ্যউভয় উদ্দেশ্যে চাষ করা যেতে পারে। জাতটি রবি মৌসুমে ১৩৫-১৪৫ দিনে এবং খরিফ মৌসুমে৯৫-১০৫ দিনে পাকে। ফলন হেক্টরপ্রতি রবি মৌসুমে ৫.০-৫.৫ টন এবং খরিফ মৌসুমে ৩.৫-৪.৫টন হয়।
বারি ভুট্টা-৫:নাইজেরিয়া থেকে ১৯৮৮ সালেসংগৃহিত ১০ টি ইনব্রেড সারি থেকে ৫টি বাছায় করা হয়। পরবর্তীতে ১টি অগ্রবর্তীকম্পোজিটের সংগে সংকরায়ণের মাধ্যমে এ জাতটি উদ্ভাবিত হয় এবং ১৯৯৭ সালে অনুমোদন করাহয়। জাতটি বাংলাদেশে ভুট্টা চাষ উপযোগী এলাকায় চাষাবাদের জন্য উপযুক্ত বলে প্রমানিতহয়েছে। গাছ সহজে হেলে পড়ে না। জাতটির মোচা বেশ লম্বা ও মোটা এবং সম্পূর্ণভাবেখোসাদ্বারা আবৃত। এ জাতের দানার রং হলুদ এবং হাজার দানার ওজন ২৯০-৩১০ গ্রাম। এজাতের জীবনকাল ১৩৫-১৫৫ দিন। হেক্টরপ্রতি ফলন রবি মৌসুমে ৬.০-৬.৫ টন এবং খরিফ মৌসুমে৩.৫-৪.০ টন হয়।
বারি ভুট্টা-৬:সংগৃহিত কম্পোজিট জাতসমূহের মধ্যথেকে বাছই করে বারি ভুট্টা-৬ জাতটি উদ্ভাবন করা হয় এবং ১৯৯৮ সালে অনুমোদন করা হয়।রবি মৌসুমে এ জাতের জীবনকাল ১৪৫-১৫০ দিন এবং খরিফ মৌসুমে ৯৫-১০৫ দিন। এ জাতের মোচাখোসাদ্বারা ভালভাবে আবৃত থাকে। মোচা মাঝারি আকারের। হাজার দানার ওজন ৩১৫-৩২৫ গ্রাম।হেক্টরপ্রতি ফলন রবি মৌসুমে ৬.৫-৭.০ টন এবং খরিফ মৌসুমে ৫.০-৫.৫ টন পাওয়াযায়।
বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১:থাইল্যান্ড হতে সংগৃহিতইনব্রেড থেকে বাছাইয়ের মাধ্যমে বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১ জাতটি উদ্ভাবিত হয়। বর্তমানেজাতটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। জাতটি বাংলাদেশের আবহাওয়ায় উৎপাদনের উপযোগী। জীবনকালরবি মৌসুমে ১৩৫-১৪৫ দিন ও খরিফ মৌসুমে ৯৫-১০৫ দিন। জাতটির দানা বেশ বড়, রং হলুদ।মোচার অগ্রভাগ ভরাট। এ জাতের গাছের উচ্চতা ১৯০-২১০ সেমি। হাজার দানার ওজন ৫৭০-৫৮০গ্রাম। জাতটির ফলন হেক্টরপ্রতি ৮.০-৮.৫ টন।
বপনের সময়ঃবাংলাদেশে রবি মৌসুমে মধ্য-আশ্বিনথেকে মধ্য অগ্রহায়ণ (অক্টোবর-নভেম্বর) এবং খরিফ মৌসুমে ফাল্গুন থেকে মধ্য-চৈত্র (মধ্য ফেব্রুয়ারী-মার্চ) পর্যন্ত সময় বীজ বপনের উপযুক্ত সময়।
সার ব্যবস্থাপনাঃভুট্টা চাষে বিভিন্ন প্রকারসারের পরিমান নিচে দেওয়া হলোঃ
সারেরনাম সারের পরিমান/হেক্টর প্রতি
কম্পোজিট হাইব্রিড
রবি
ইউরিয়া ১৭২-৩১২ কেজি
টিএসপি ১৬৮-২১৬ কেজি
এমপি ৯৬-১৪৪ কেজি
জিপসাম ১৪৪-১৬৮ কেজি
জিংক সালফেট ১০-১৫ কেজি
বোরিক এসিড ৫-৭ কেজি
গোবর ৪-৬ টন
খরিফ
২১৬-২৬৪ কেজি
১৩২-২১৬ কেজি
৭২-১২০ কেজি
৯৬-১৪৪ কেজি
৭-১২ কেজি
৫-৭ কেজি
৪-৬ টন
রবি
৫০০-৫৫০ কেজি
২৪০-২৬০ কেজি
১৮০-২২০ কেজি
২৪০-২৬০ কেজি
১০-১৫ কেজি
৫-৭ কেজি
৪-৬ টন
সার প্রয়োগ পদ্ধতিঃজমি তৈরীর শেষ পর্যায়েঅনুমোদিত ইউরিয়ার এক তৃতীয়াংশ এবং অন্যান্য সারের সবটুকু ছিটিয়ে জমি চাষ দিতে হবে।বাকি ইউরয়া সমান ২ কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম কিস্তি বীজ গজানোর ২৫-৩০ দিন পরএবং দ্বিতীয় কিসি- বীজ গজানোর ৪০-৫০ দিন পর উপরি প্রয়োগ করতে হবে। চারা গজানোর ৩০দিনের মধ্যে জমি থেকে অতিরিক্ত চারা তুলে ফেলতে হবে। চারার বয়স এক মাস না হওয়াপর্যন্ত জমি আগাছামুক্ত রাখতে হবে।
সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনাঃউচ্চ ফলনশীল জাতেরভুট্টার আশানুরূপ ফলন পেতে হলে রবি মৌসুমে সেচ প্রয়োগ অত্যাবশ্যক। উদ্ভাবিত জাতেনিম্নরূপ ৩-৪টি সেচ দেওয়া যায়।
প্রথমসেচ : বীজ বপনের ১৫-২০ দিনের মধ্যে (৪-৬ পাতা পর্যায়)
দ্বিতীয়সেচ : বীজ বপনের ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে (৮-১২ পাতা পর্যায়)
তৃতীয়সেচ : বীজ বপনের ৬০-৭০ দিনের মধ্যে (মোচা বের হওয়া পর্যায়)
চতুর্থসেচ : বীজ বপনের ৮৫-৯৫ দিনের মধ্যে (দানা বাঁধার পূর্বপর্যায়)
ভুট্টারফুল ফোটা ও দানা বাঁধার সময় কোন ক্রমেই জমিতে যাতে জলবদ্ধতা সৃষ্টি না হয় সেদিকেখেয়াল রাখতে হবে। জমিতে আগাছা দেখা দিলে নিড়ানী দিয়ে দমন করতে হবে।
পোকা মাকড়ব্যবস্থাপনাঃ ভুট্টার চারা অবস্থায় কাটুই পোকার আক্রমণ হলে হাত দিয়ে তা মেরে ফেলতেহবে।
রোগ ব্যবস্থাপনাঃ
ভুট্টারবীজ পচা এবং চারা গাছের রোগ দমনঃ বীজ পচা এবং চারা নষ্ট হওয়ার কারণে সাধারণত ক্ষেতেভুট্টা গাছের সংখ্যা কমে যায়। নানা প্রকার বীজ ও মাটি বাহিত ছত্রাক যেমন পিথিয়াম, রাইজোকটনিয়া, ফিউজেরিয়াম, পেনিসিলিয়াম ইত্যাদি বীজ বপন, চারা ঝলসানো, রোগ ও শিকড়পচা রোগ ঘটিয়ে থাকে। জমিতে রসের পরিমান বেশী হলে এবং মাটির তাপমাত্রা কম থাকলেবপনকৃত বীজের চারা বড় হতে অনেক সময় লাগে। ফলে এ সময়ে ছত্রকের আক্রমনের মাত্রা বেড়েযায়।
প্রতিকার
১. সুস্থ্য, সবল ও ক্ষতমুক্ত বীজ এবং ভুট্টার বীজ পচা রোগ প্রতিরোধী বর্ণালী ওমোহর জাত ব্যবহার করতে হবে।
২. উত্তমরূপে জমি তৈরী করে পরিমিত রস ও তাপমাত্রায় (১৩ সে. এর বেশী) বপন করতেহবে।
৩. থিরাম বা ভিটাভেক্স (০.২৫%) প্রতি কেজি বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধনকরলে ভুট্টার বীজ পচারোগের আক্রমণ অনেক কমে যায়।
ভুট্টারপাতা ঝলসানো রোগ দমনঃ হেলমিনথোসপরিয়াম টারসিকাম ও হেলমিনথোসপরিয়াম মেইডিস নামকছত্রাকদ্বয় এ রোগ সৃষ্টি করে। প্রথম ছত্রাকটি দ্বারা আমাদের দেশে ভুট্টার পাতাঝলসানো রোগ বেশী হতে দেখা যায়। হেলমিনথোসপরিয়াম টারসকাম দ্বারা আক্রান্ত গাছেরনিচের দিকের পাতায় লম্বাটে ধূসর বর্ণের দাগ দেখা যায়। পরবর্তীতে গাছের উপরের অংশেতা বিস্তার লাভ করে। রোগের প্রকোপ বেশী হলে পাতা আগাম শুকিয়ে যায় এবং গাছ মরে যায়।এ রোগের জীবানু গাছের আক্রান্ত অংশে অনেক দিন বেঁচে থাকে জীবাণুর বীজকণা বা কনিডিয়াবাতাসের সাহায্যে অনেক দূর পর্যন্ত সুস্থ্য গাছে ছড়াতে পারে। বাতাসের আদ্রতা বেশীহলে এবং ১৮-২৭ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রায় এ রোগের আক্রমণ বেড়ে যায়।
প্রতিকারঃ
১. রোগ প্রতিরোধী জাতের (মোহর) চাষ করতে হবে।
২. আক্রান্ত ফসলে টিল্ট ২৫০ ইসি (০.০৪%) ১৫ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতেহবে।
৩. ভুট্টা উঠানোর পর জমি থেকে আক্রান্ত গাছ সরিয়ে অথবা পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
ভুট্টারমোচা ও দানা পচা রোগ দমনঃ মোচা ও দানা পচা রোগ ভুট্টার ফলন, বীজের গুনাগুন ওখাদ্যমান কমিয়ে দেয়। বিভিন্ন প্রকার ছত্রাক যথা ডিপ্লোডিয়া মেডিস, ফিউজেরিয়ামমনিলিফরমি প্রভৃতি এ রোগ ঘটায়। আক্রান্ত মোচার খোসা ও দানা বিবর্ণ হয়ে যায়। দানাপুষ্ট হয় না, কুঁচকে অথবা ফেটে যায়। অনেক সময় মোচাতে বিভিন্ন দানার মাঝে বা উপরেছত্রাকের উপস্থিতি খালি চোখেই দেখা যায়। ভুট্টা গাছে মোচা আসা থেকে পাকা পর্যন্তবৃষ্টিপাত বেশী থাকলে এ রোগের আক্রমণ বাড়ে। পোকা বা পাখির আক্রমনে বা কান্ড পচারোগে গাছ মাটিতে পড়ে গেলে এ রোগ ব্যাপকতা লাভ করে। এ রোগের জীবাণু বীজ অথবাআক্রান্ত গাছের পরিত্যক্ত অংশে বেঁচে থাকে। একই জমিতে বার বার ভুট্টার চাষ করলে এরোগ দ্রুত বিস্তার লাভ করে।
প্রতিকারঃ
১. এ রোগের প্রাদুর্ভাব এড়াতে একই জমিতে বার বার ভুট্টা চাষ করা ঠিক নয়।
২. জমিতে পোকা ও পাখির আক্রমন রোধ করতে হবে।
৩. ভুট্টা পেকে গেলে তাড়াতাড়ি কেটে ফেলতে হবে।
৪. কাটার পর ভুট্টার পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
ভুট্টারকান্ড পচা রোগ দমনঃ বিভিন্ন প্রজাতির ছত্রাক যথা ডিপ্লোডিয়া মেডিস, ফিউজেরিয়ামমনিলিফরমি-এর কারণে এ রোগ ঘটে থাকে। প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে গাছের কান্ড পচে যায় এবংগাছ মাটিতে ভেঙ্গে পড়ে। আমাদের দেশে খরিফ মৌসুমে এ রোগ বেশী হয়ে থাকে। জমিতেনাইট্রোজেনের পরিমাণ বেশী এবং পটাশের পরিমাণ কম হলে ছত্রাক জনিত কান্ড পচা রোগ বেশীহয়।
প্রতিকারঃ
১. ছত্রাকনাশক ভিটাভেক্স-২০০ দিয়ে বীজ শোধন করে লাগাতে হবে।
২. সুষম হারে সার ব্যবহার করতে হবে, বিশেষ করে নাইট্রোজেন ও পটাশ পরিমিতমাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।
৩. ভুট্টা কাটার পর পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
৪. শিকড় ও কান্ড আক্রমকারী পোকা-মাকড় দমন করতে হবে।
আক্রান্তজমিতে অনুমোদিত ছত্রাকনাশক ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
ফসল সংগ্রহঃদানার জন্য ভুট্টা সংগ্রহেরক্ষেত্রে মোচা চক্চক্ খড়ের রং ধারণ করলে এবং পাতা কিছুটা হলদে হলে সংগ্রহেরউপযুক্ত হয়। এ অবস্থায় মোচা থেকে ছড়ানো বীজের গোড়ায় কালো দাগ দেখা যাবে। ভুট্টাগাছের মোচা ৭৫-৮০% পরিপক্ক হলে ভুট্টা সংগ্রহ করা যাবে। বীজ হিসেবে মোচার মাঝামাঝিঅংশ থেকে বড় ও পুষ্ট দানা সংগ্রহ করতে হবে।
লেখক :এআইএস
সুত্রঃ সিবোকন লাইন ডট কম