কৃষিবিদ মোহাম্মদ শামীম আল মামুন
বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (কীটতত্ত্ব), বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার।
চা বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল ও রপ্তানী পন্য। বাংলাদেশ চা অভ্যন্তরীন চাহিদা মিটিয়েও প্রতি বছর ৫ মিলিয়ন কেজি চা রপ্তানী হয়ে থাকে। বাংলাদেশে চা চাষ শুরু হয় ঊনিশ শতকের গোড়ার দিকে। বাংলাদেশের প্রথম চা বাগান প্রতিষ্ঠিত হয় চট্টগ্রামে ১৮৪০ খ্রীস্টাব্দে। তারপর ১৮৫৭ খ্রীস্টাব্দে সিলেটের মালনীছড়ায় বাণিজ্যিকভাবে চা বাগান উন্মুক্ত করা হয়।
বাংলাদেশের প্রধানত: দুটি অঞ্চলে চায়ের ব্যাপক চাষ হয়ে থাকে; একটি সুরমা ভ্যালীস্থ বৃহত্তর সিলেট এলাকা ও অপরটি হালদা ভ্যালীস্থ চট্টগ্রাম এলাকা। তবে সমপ্রতি করোতোয়া ভ্যালীস' উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পঞ্চগঢ় এলাকায় চা চাষ শুরু হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৬৭টি চা বাগানের ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে প্রতি বছর ৫৮ হাজার মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হচ্ছে।
উদ্ভিদ পরিচিতি: চা গাছ একটি বহুবর্ষজীবি চিরসবুজ উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম ”ক্যামেলিয়া সাইনেসিস”। চা গাছ ছেঁটে না রাখলে মাঠে ১০ মিটার পর্যন্ত উচুঁ হতে পারে। আদর্শ পরিবেশে একটি চা গাছ ৫০-৬০ বছর বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক ফলন দিতে সক্ষম। বাংলাদেশে সাধারনত: বড় পাতাওয়ালা আসাম জাত ও ছোট পাতার চীনা জাত চাষ করা হয়।
চায়ের অনুকূল পরিবেশ: চা গাছ তার বৃদ্ধিতে কিছুটা আরণ্যক পরিবেশ পছন্দ করে। উষ্ণ ও আর্দ্র পরিবেশ যেখানে তাপমাত্র ২৬ - ২৮ ডিগ্রি সে: এবং বৃষ্টিপাত ২০০০ মি.মি. এর উপরে ও বাতাসে জলীয় বাস্পের পরিমান অর্থাৎ আদ্রতা ৭০ - ৯০%, সে জায়গা চায়ের জন্য আদর্শ পরিবেশ। এছাড়া দিবালোকের স্থায়ীত্ব ১২ ঘন্টার কাছাকাছি ও মাটি অম্লধর্মী (পিএইচ ৪.৫ - ৫.৮), বেলে দোঁয়াশ ও সন্তোষজনক পুষ্টিমানসম্পন্ন হওয়া আবশ্যক। চা গাছ মোটেই জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টি কোনটাই চায়ের অনুকুল নয়।
চায়ের বংশবিস্তার ও নার্সারী ব্যবস্থাপনা: বীজ ও অঙ্গজ (ক্লোন) এর মাধ্যমে চা গাছের বংশবিস্তার করা হয়ে থাকে। চা বীজ গুটিবাড়ি থেকে সংগ্রহ করে বীজতলায় ২০ সে.মি. ী ২০ সে.মি. ত্রিভূজ দূরত্ব পদ্ধতিতে লাগাতে হবে। বীজ বা কাটিং লাগানোর পূবেই নার্সারীর মাটি নেমাটোডমুক্ত রাখতে হবে। বীজতলায় ছায়া প্রদান আবশ্যক। প্রতি বেডে ৬০ - ৭৫ সে.মি. উচুঁতে ছন বা বাশের চাপ্টা দিয়ে ছায়ার ব্যবস্থা করতে হবে। নার্সারীর চারার বৃদ্ধি ও সজীবতার জন্য রাসায়নিক সার (ইউরিয়া, টিএসপি ও এমওপি) ২:১:২ অনুপাতে প্রয়োগ করা যেতে পারে। অঙ্গজ বংশবিস্তার বা কাটিং পদ্ধতিতে উন্নতমানের ক্লোন হতে চারা তৈরি করা হয়। কাঙ্খিত ক্লোনের মাতৃবৃক্ষ হতে ডাল সংগ্রহ করে একটি পূর্ণপাতা ও তার সঙ্গে সুপ্ত পত্রকলি সমেত কাটিং তৈরি করা হয়। প্রথমে প্রাথমিক বেডে কাটিং লাগিয়ে ২-৩ পাতা গজানো পর্যন্ত ৩-৪ মাস পর নার্সারী ব্যাগে মাধ্যমিক বেডে স্থানান্তর করা হয়। কাটিং নার্সারীতে ১৫০-১৮০ সে.মি. উচুঁতে ছন বা বাশের চাপ্টা দিয়ে ছায়ার ব্যবস্থা করতে হবে। নার্সারীতে নিয়মিত পানি সিঞ্চন করতে হবে। নার্সারী সর্বদা আগাছামুক্ত রাখতে হবে। পোকামাকড় ও রোগবালাই এর হাত থেকে চারাগুলোকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় কীটনাশক প্রয়োগের ব্যবস্থা নিতে হবে।
অনুমোদিত বীজজাত ও ক্লোন: সাধারণ বীজের চেয়ে উন্নত মান ও ফলনের জন্য এ পর্যন্ত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) কর্তৃক উদ্ভাবিত ৪ ধরনের বাইক্লোনাল বীজস্টক যথা-বিটিএস১, বিটিএস২, বিটিএস৩ এবং বিটিএস৪ নামক বীজস্টক চা শিল্পে ছাড়া হচ্ছে। চায়ের উৎপাদন ও গুনগতমান বৃদ্ধিও লক্ষ্যে বিটিআরআই বীজজাত উন্নয়নের পাশাপাশি ক্লোনাল সিলেকশন বা ব্রিডিংয়ের মাধ্যমে এ পর্যন্ত নিজস্ব ১৭টি ক্লোনজাত অবমুক্ত করেছে। বিটি১, বিটি২, বিটি৩, বিটি৫, বিটি৭, বিটি৯, বিটি১১, বিটি১৩ ও বিটি১৪ ক্লোনগুলি আদর্শ ক্লোন হিসাবে পরিগনিত। বিটি১০ ও বিটি১২ ক্লোনদ্বয় উ"চফলনশীল ক্লোন শ্রেণীভূক্ত। বিটি৪, বিটি৬ ও বিটি১৫ উচ্চ পেয়ালীমানসম্পন্ন ক্লোন হিসেবে পরিচিত।
চাষ পদ্ধতি:
জমি প্রস্ন্তুতি ও রোপণ পরিকল্পনা: বাংলাদেশে চায়ের আবাদযোগ্য শতকরা ৫৫ থেকে ৬০ ভাগই টিলা। টিলা বা পাহাড়ী জমিতে কন্টুর পদ্ধতিতে চায়ের চাষ করা হয়। উচুঁ সমতল ভূমিতে চাষ ও মই দিয়ে এবং আগাছা পরিস্কার করে জমি তৈরি করতে হয়।
চারা রোপণ: এপ্রিল/মে মাসে প্রাক-বর্ষাকালীন সময়ে চা চারা রোপণ করাই ভাল। তবে যদি সেচের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায় তাহলে ডিসেম্বর/মার্চ মাসেও চারা রোপণ করা যায়।
রোপণ সারি: একক সারি প্রণালীতে টিলাতে রোপণ দূরত্ব- ৯০ সে.মি.x ৬০ সে.মি. অর্থাৎ হেক্টর প্রতি ১৮,৫১৮টি গাছ; সমতল ভূমিতে দূরত্ব ১০৫ সে.মি. x ৬০ সে.মি. অর্থাৎ হেক্টর প্রতি ১৫,৫৭৬টি গাছ। দ্বৈতসারি প্রণালীতে রোপণ দূরত্ব ১০৫ সে.মি. x ৬০ সে.মি. x ৬০ সে.মি. অর্থাৎ হেক্টর প্রতি ১৯,৯৬০টি গাছ।
রোপণ পদ্ধতি: ক্লোন চারার জন্য ৩০-৩৫ সে.মি ও বীজ চারার জন্য ৪০-৪৫ সে.মি. গভীরতা বিশিষ্ট এবং উভয়টির জন্য ২৫-৩০ সে.মি. প্রশস্ততা বিশিষ্ট গর্ত করে ৪০-৫০ সে.মি. উচ্চতাসম্পন্ন সুস্থ সবল চারা রোপণ করতে হবে। গর্তেও প্রথম ২৩ সে.মি. মাটি গর্তের একপাশে তুলে রেখে এ মাটির সাথে প্রতিটি গর্তের জন্য ২ কেজি পচা গোবর সার, ৩০ গ্রাম টিএসপি ও ১৫ গ্রাম এমপি সাথে মেশাতে হবে। সার মিশ্রিত এ মাটি গর্তের নিচে দিতে হবে।
মাল্চ প্রয়োগ: মাটির আদ্রতা সংরক্ষণের জন্য সাধারণত শুষ্ক মৌসুমে রোপনের পর চারার গোড়া থেকে ৭-১০ সে.মি. দূরে এবং ৮-১০ সে.মি. উচুঁ করে মাল্চ বিছিয়ে দিতে হবে। মাল্চ হিসেবে কচুরীপানা, গুয়াতেমালা বা সাইট্রোনেলা ঘাস, এমনকি ঝোপ-জঙ্গলও ব্যবহার করা যেতে পারে।
চা গাছ ছাঁটাই এর সময় ও পদ্ধতি: চা গাছ রোপনের পর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত চা গাছকে অপ্রাপ্ত বয়স্ক বা অপরিণত চা গাছ হিসেবে গণ্য করা হয়। অপরিণত চা গাছের ছাঁটাইয়ের উদ্দেশ্য হল গাছটিকে ঝোপাকৃতি করা। যত বেশী ঝোপন শাখা-প্রশাখা বেশী হবে তত বেশী পাতা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদি চা গাছ এপ্রিল/মে মাসে রোপণ করা হয় তবে পরের বৎসর জানুয়ারি মাসের শেষে অথবা ফেব্রুয়ারি মাসে ১ম সপ্তাহে ছাঁটাই করতে হবে। বিভিন্ন পদ্ধতিতে অপরিণত চা গাছ ছাঁটাই করা হয়, যেমন- মধ্যকান্ডচ্ছেদন, ভঙ্গন, বক্রন/বাহুবদ্ধকরণ ইত্যাদি।
সারণী ১: অপরিণত চা গাছ ছাঁটাই ও পাতা চয়ন উচ্চতা
ঊৎসর | ছাঁটাই প্রকৃতি | ছাঁটাই উচ্চতা | পাতা চয়ন উচ্চতা |
১ | ডিসেন্টার/ব্রেকিং | ১৫-২৩ সে.মি. | ৫০ সে.মি. |
২ | প্রুন | ৪০ সে.মি. | ৫০ সে.মি. |
৩ | স্কীফ | ৫০-৫৩ সে.মি. | ৫২-৫৫ সে.মি. |
৪ ৫ | প্রুন স্কীফ | ৪৫-৫০ সে.মি. ৭৫ সে.মি. | ৭০-৭৫ সে.মি. ৭৮-৮০ সে.মি |
পরিণত চা গাছ ছাঁটাই: পরিণত চা গাছ ছাঁটাই এর উদ্দেশ্য হল ফলনকালে গাছকে সবসময় সজীব ও পত্রময় এবং সীমিত উ"চতায় রাখা। অবস'াভেদে চা গাছের ছাঁটাই চক্র ত্রিবার্ষিক অথবা চতুর্বার্ষিক হতে পারে।
ত্রিবার্ষিক চক্র = লাইট প্রুনিং - লাইট স্কীফ - ডীপ স্কীফ
চতুর্বার্ষিক চক্র = লাইট প্রুনিং - ডীপ স্কীফ - মিডিয়াম স্কীফ - লাইট স্কীফ
শুধুমাত্র চরম খরাপ্রবণ এলাকা ছাড়া আজকাল ত্রিবার্ষিক চক্রের প্রচলন নেই বললেই চলে। চতুর্বার্ষিকচক্র পদ্ধতিতে প্রথম চক্রের প্রথম বৎসর অর্থাৎ ৬ষ্ঠ বৎসরে লাইট প্রুনিং ৫৫ সে.মি. (২২ ইঞ্চি) উচ্চতায় প্রুনিং বা ছাঁটাই করার পর যে শাখা প্রশাখা গজাবে ঐগুলিকে প্রুনিং মার্ক বা ছাঁটাই চিহ্ন থেকে ২০ সে.মি. উচ্চতায় টিপিং করতে হবে। ৭ম বৎসরে ডীপ স্কীফ ৬৫ সে.মি. এবং ৭৫ সে.মি. পাতা চয়ন করতে হবে। ৮ম বৎসরে মিডিয়াম স্কীফ ৭০ সে.মি. করে ৭৫ সে.মি. এ পাতা চয়ন করতে হবে এবং ৯ম বৎসরে ৭৫ সে.মি. লাইট স্কীফ করে ৭৭.৫ সে.মি. উ"চতায় পাতা চয়ন করতে হবে। এভাবে একটি চতুর্বার্ষিকচক্র শেষ হলে দ্বিতীয় চতুর্বার্ষিকচক্র শুরু হয়।
সারণী ২: পরিণত চা গাছ ছাঁটাই এর সময়
ছাঁটাই প্রকৃতি | ছাঁটাই এর সময় |
লাইট প্রুনিং | ডিসেম্বরের ১ম সপ্তাহ থেকে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ |
ডীপ স্কীফ | জানুয়ারির ১ম সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ |
মিডিয়াম স্কীফ | জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারির ১ম সপ্তাহ |
লাইট স্কীফ মিডিয়াম প্রুনিং | জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে ফেব্রুয়ারি পুরো মাস চক্র শুরুর ২৪ থেকে ৩০ বৎসরের মধ্যে একবার |
ছায়াগাছ রোপন ও প্রতিপালন: চা গাছ অত্যধিক সূর্যতাপ সহ্য করতে পারে না। তাই বাংলাদেশের আবহাওয়ায় ছায়া একটি অপরিহার্য প্রয়োজন। এ ছায়া পদ্ধতিতে আপতিত সূর্যকিরণের শতকরা ৫০-৭০ ভাগ চা গাছের উপর পতিত হওয়া জরুরী। সে জন্যে চা গাছ রোপণের সাথে সাথে ছায়া গাছও রোপণ করা প্রয়োজন। চা বাগানে সাধারণত অস্থায়ী ছায়া হিসেবে বগামেডুলা, ক্রোটালারিয়া ও ইন্ডিগুফেরা এবং স্থায়ী ছায়া হিসেবে কালশিরিষ, শীলকড়ই ও লোহাশিরিষ গাছ লাগানো হয়ে থাকে। অস'ায়ী ছায়াগাছ ৩ মিটার দ্ধ ৩ মিটার দূরত্বে এবং স'ায়ী ছায়াগাছ ৬ মিটার দ্ধ ৬ মিটার দূরত্বে লাগাতে হবে। ৯০ সে.মি. গভীর দ্ধ ৬০ সে.মি. চওড়া গর্ত করে গর্ত প্রতি ১০ কেজি পচা গোবর, ৫০০ গ্রাম টিএসপি, ২৫ কেজি ছাই এবং ৫০০ গ্রাম গুড়া চুন প্রয়োগ করতে হবে।
পাতা চয়ন পদ্ধতি: প্রুনিং করার পর মার্চ মাসের শেষে অথবা এপ্রিলে চায়ের শাখা থেকে কচি কচি শাখা ও পাতা (কিশলয়) গজায়। এ কচি ডগাগুলি নির্দিষ্ট উ"চতায় প্রথম টিপিং করা হয়। এভাবে একটি চয়ন টেবিল প্রতিষ্ঠা কওে পরে সপ্তাহ অন্তর অন্তর পাতা তোলা হয়।
সার প্রয়োগ: চা চারা বেড়ে উঠার সাথে সাথে এনপিকে মিশ্রসার প্রতি গাছে প্রয়োগ করতে হবে। নিম্নে কোন আবাদীর হেক্টর প্রতি ১০০০ কেজি হতে ৩০০০ কেজি উৎপাদনের দুইটি প্রান্ত ধরে প্রয়োজনীয় সারের পরিমাণ ও মাত্রা দেয়া হলো।
সারণী ৩: হেক্টর প্রতি সার প্রয়োগের পরিমাণ
নাইট্রোজেন ১ম দফা ৫০ কেজি থেকে ১৫৮ কেজি (ইউরিয়া ১১০ কেজি থেকে ৩০০ কেজি)
২য় দফা ৬০ কেজি (ইউরিয়া ১৩০ কেজি)
ফসফরাস একমাত্র দফায় ২০ কেজি থেকে ৪০ কেজি (টিএসপি ৪৪ কেজি থেকে ৮৮ কেজি)
পটাশ ১ম দফা ৩০ কেজি থেকে ৭৫ কেজি (এমপি ৬০ কেজি থেকে ১৫০ কেজি)
২য় দফা ৩০ কেজি (এমপি ৬০ কেজি)
নাইট্রোজেন সারের অভাব পূরণ এবং গাছের পত্র-পল্লব বৃদ্ধির জন্য ২ কেজি ইউরিয়া সার প্রতি ১০০ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে চা গাছের পাতায় সিঞ্চন করতে হবে। পটাশ সারের অভাব পূরণে ইউরিয়ার সাথে ১% পটাশ সার মিশিয়ে পাতায় সিঞ্চন করতে হবে। জিংক বা দস্তার অভাব পূরণে ২০০ থেকে ৪০০ গ্রাম জিংক সালফেট ১০০ লিটার পানিতে মিশিয়ে সিঞ্চন করতে হবে। মাটির অম্লত্ব কমানোর জন্য লাইট প্রুনিং বৎসরে হেক্টর প্রতি ৪০০-৫০০ কেজি সহজলভ্য চুনসার ডলোমাইট ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।
সেচ ও পানি নিষ্কাশন: গাছের বৃদ্ধি ও উৎপাদনে পানির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাব দূরকরণে চা বাগানে সিপ্রংক্লার পদ্ধতিতে সেচ দেওয়া হয়। বর্ষাকালে অতিবৃষ্টির জন্য জলাবদ্ধতা দেখা দেয় বিশেষ করে সমতল নিম্নভূমিতে। সেজন্য উপযুক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করে জমিতে নর্দমা খনন করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
চায়ের পোকামাকড়: চা উৎপাদনের যেসব অন-রায় রয়েছে তাদের মধ্যে চায়ের ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ, পোকামাকড় ও কৃমিপোকা অন্যতম। বাংলদেশ চায়ে এখন পর্যন্ত ২৫ প্রজাতির পতঙ্গ, ৪ প্রজাতির মাকড় ও ১০ প্রজাতির কৃামপোকা সনাক্ত করা হয়েছে। তন্মধ্যে আবাদী এলাকায় চায়ের মশা, উঁইপোকা ও লালমাকড় এবং নার্সারী ও অপরিনত চা আবাদীতে এফিড, জেসিড, থ্রিপস, ফ্লাসওয়ার্ম ও কৃমিপোকা মূখ্য ক্ষতিকারক কীট হিসাবে পরিচিত। অনিস্টকারী এসব পোকামাকড় বছরে গড়ে প্রায় ১৫% ক্ষতি করে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে ১০০% ক্ষতির সম্মুখীন হয়। নিম্নে চায়ের এসব ক্ষতিকারক পোকামাকড়ের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ও তাদের দমন ব্যবস্থা আলোচনা করা হলো।
১) চায়ের মশা: বাংলদেশ চায়ে চায়ের মশা একটি গুরুত্বপূর্ণ কীট। ইহা টি হেলোপেলটিস নামে পরিচিত। চায়ের এই শোষক পোকাটির নিম্ফ ও পূর্ণাঙ্গ পতঙ্গ চায়ের কচি ডগা ও পাতার রস শোষণ করে এবং আক্রান- অংশ কালো হয়ে যায়। ব্যপক আক্রমনে নতুন কিশলয় গজানো বন্ধ হয়ে যায়। চায়ের এ কীট দমনে শুষ্ক মৌসুমে হেক্টর প্রতি ২.২৫ লি. হারে ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি ৫০০ লি. পানিতে মিশিয়ে ৭ দিন অন-র সেপ্র করতে হবে। বর্ষা মৌসুমে হেক্টর প্রতি ১.৫ লি. হারে থায়োডান ৩৫ ইসি অথবা ৫০০ মি.লি. হারে রিপকর্ড ১০ ইসি অথবা ৭৫০ মি.লি. হারে মেটাসিস্টঙ ২৫ইসি ৫০০ লি. পানিতে মিশিয়ে ৭ দিন অন-র সেপ্র করতে হবে।
২) লাল মাকড়: চায়ের লাল মাকড় খুবই অনিস্টকারী। আকারে অতি ক্ষুদ্র। পরিনত পাতার উপর ও নীচ থেকে আক্রমন করে থাকে। রস শোষনের ফলে পাতার উভয় দিক তাম্রবর্ন ধারন করে এবং শুষ্ক ও বিবর্ন দেখায়। উপোর্যপুরি আক্রমনে সম্পূর্ন পাতা ঝরে যায় ও কিশলয় ক্ষীণ বা লিকলিকে হয়। প্রতিরোধমূলক ব্যবস'া হিসাবে হেক্টর প্রতি ২.২৫ কেজি হারে সালফার ৮০ ডব্লিউ পি ১০০০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫-৬ দিন অন-র সেপ্র করতে হবে। প্রতিকারমূলক ব্যবস'া হিসাবে হেক্টর প্রতি ১.০০ লিটার হারে ইথিয়ন ৪৬.৫ ইসি অথবা ওমাইট ৫৭ ইসি ১০০০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫-৬ দিন অন-র সেপ্র করতে হবে।
৩) উঁইপোকা: উঁইপোকা মৌমাছির মত সামাজিক পতঙ্গ। চা বাগানে ’উলুপোকা’ নামে পরিচিত। ইহা চায়ের অন্যতম মূখ্য ক্ষতিকারক কীট। চা গাছের মরা-পঁচা বা জীবন- অংশ খায়। এরা মাটিতে ও গাছের গুড়িতে ঢিবি তৈরী করে বাস করে। কেবলমাত্র শ্রমিক শ্রেণীই চা গাছ খেয়ে থাকে। পোকাদমনে হেক্টর প্রতি ১.৫ লিটার হারে এডমায়ার ২০০ এসএল ১০০০ অথবা ১০ লিটার হারে ডার্সবান ২০ ইসি ১০০০ লিটার পানিতে মিশিয়ে গাছের গোড়ায় ভালভাবে সেপ্র করতে হবে।
৪) জেসিড: নার্সারী ও অপরিনত চায়ের অন্যতম অনিষ্টকারী কীট। আবাদী এলাকায় ছাঁটাই উত্তর নতুন কিশলয়ে আক্রমন পরিলক্ষিত হয়। এরা চায়ের পাতার রস শুষে নেয়। আক্রান- পাতা নৌকাকৃতি ধারন করে ও কিনারা শুকিয়ে যায়। জেসিড দমরন হেক্টর প্রতি ১.৫ লি. হারে থাযোডান ৩৫ ইসি অথবা ৫০০ মি.লি. হারে রিপকর্ড ১০ ইসি ৫০০ লি. পানিতে মিশিয়ে ৭ দিন অন-র সেপ্র করতে হবে। কচি ডগা ও কচি পাতার নিচে সেপ্র করতে হবে।
৫) এফিড: এদেরকে জাবপোকাও বলা হয়। নার্সারী ও অপরিনত চায়ের অন্যতম অনিষ্টকারী কীট। আবাদী এলাকায় ছাঁটাই উত্তর নতুন কিশলয়ে আক্রমন পরিলক্ষিত হয়। দলবদ্ধভাবে বিভিন্ন বয়সের এফিড চায়ের কচি ডগা ও কচি পাতার রস শুষে নেয়। তাই বৃদ্ধি ব্যহত হয়। এদের অবস'ানের পাশাপাশি কালো পিপড়া দেখা যায়। ডিসেম্বর-মার্চ মাস পর্যন- আক্রমন তীব্র থাকে। হেক্টর প্রতি ১.৫ লি. হারে থাযোডান ৩৫ ইসি অথবা ৫০০ মি.লি. হারে রিপকর্ড ১০ ইসি ৫০০ লি. পানিতে মিশিয়ে ৭ দিন অন-র সেপ্র করতে হবে।
৬) থ্রিপ্স: থ্রিপ্স অতি ক্ষুদ্র বাদামী রংয়ের পোকা । নার্সারী ও অপরিনত চায়ের অন্যতম অনিষ্টকারী কীট। নার্সারী ও স্কিফ এলাকায় আক্রমন বেশী পরিলক্ষিত হয়। আবাদী এলাকায় ছাঁটাই উত্তর নতুন কিশলয়ে আক্রমন পরিলক্ষিত হয়। রস শোষণের ফলে পাতার উপরিভাগের মধ্যশিরার দু’পাশ্বে দুটি লম্বা শোষণ রেখা দেখা যায়। হেক্টর প্রতি ১.৫ লি. হারে থাযোডান ৩৫ ইসি অথবা ৫০০ মি.লি. হারে রিপকর্ড ১০ ইসি ৫০০ লি. পানিতে মিশিয়ে ৭ দিন অন-র ২ বার সেপ্র করতে হবে।
৭) ফ্লাশওয়ার্ম: এরা মথ জাতীয় পতঙ্গের অপরিনত দশা। দেখতে লেদা পোকার মত। দু’টি পাতা ও একটি কুঁড়িকে গুটিয়ে পাটি-সাপটার মত মোড়ক তৈরী করে। মোড়কের ভিতরে থেকে কচি কিশলয় কুড়ে কুড়ে খায়। নার্সারী ও অপরিনত চাও আবাদী এলাকায় ছাঁটাই উত্তর নতুন কিশলয়ে এ সমস্যা ব্যপক। হাত বাছাই উত্তম পদ্ধতি। হাত বাছাই করে মোড়ক অংশটি বিনষ্ট করলে কীড়াটি মারা যাবে।
৮) উরচুঙ্গা: নার্সারী ও অপরিনত চা আবাদীতে উরচুঙ্গা বড় সমস্যা। মুখে শক্ত ও ধারালো দাঁত আছে। সামনের পা জোড়া খাঁজকাটা, চ্যাপ্টা কোদালের মত। পায়ের এ অবস'ার কারনে ছোট চা-চারাকে ধরে সহজেই কেটে ফেলে। এরা নিশাচর পতঙ্গ। মাটিতে গর্ত করে থাকে এবং সন্ধার পর বের হয়ে আসে। ইহা দমনে নার্সারী ও অপরিনত চা আবাদী এলাকার উরচুঙ্গার গর্তগুলো সনাক্ত করে গর্তের মুখে দু’ চা চামচ পোড়া মবিল দিয়ে চিকন নলে পানি ঢেলে দিতে হবে। উরচুঙ্গা গর্ত থেকে বের হয়ে আসলে লাঠি বা পায়ের আঘাতে মেরে ফেলতে হবে।
৯) লিফ রোলার: এরাও মথ জাতীয় পতঙ্গের অপরিনত দশা। এরা পাতার অগ্রভাগ থেকে নিম্নভাগের দিকে পাতা মুড়িয়ে ফেলে এবং মোড়কের ভিতরে থেকে কচি কিশলয় কুড়ে কুড়ে খায়। এরা সাধারনত ২য় থেকে ৪র্থ পাতায় আক্রমন করে থাকে। হাত বাছাই উত্তম পদ্ধতি। হাত বাছাই করে মোড়ক অংশটি বিনষ্ট করলে কীড়াটি মারা যাবে।
১০) কৃমিপোকা: এরা মাটিতে বাস করে। অতিক্ষুদ্র ও আণুবিক্ষণিক পোকা। দেখতে সূতা বা সেমাই আকৃতির। কচি শিকড়ের রস শোষণ করে। ফলে গিট তৈরি হয়। আক্রমণে চারা দূর্বল ও রুগ্ন হয় এবং চারার বৃদ্ধি ব্যহত হয়। এ পোকা দমনে প্রতি ১ ঘনমিটার মাটিতে ফুরাডান ৫ জি ১৬৫ গ্রাম হারে প্রয়োগ করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।
চায়ের রোগবালাই ও দমন ব্যবস'া: অদ্যবদি চায়ে ২২টি বিভিন্ন জীবানুঘটিত রোগ সনাক্ত করা হয়েছে। নিম্নে চায়ের প্রধান প্রধান রোগ ও তাদের দমন ব্যবস'া আলোচনা করা হলো।
১) পাতা পচা রোগ: এ রোগ চায়ের আবাদী এলাকায় বয়স্ক বা পরিণত পাতায় আক্রমন করে এবং পাতা বাদামী বর্ণ ধারন করে। এ রোগ দমনে ম্যাকুপ্রঙ ১৬ ডব্লিউ ২.২৪ কেজি হারে হিেক্টর প্রতি ১১২০ লিটার পানিতে মিশিয়ে পাতায় সেপ্র করতে হবে।
২) ফোঁস্কা রোগ: নরম ডগা ও কচি পাতায় আক্রান্ত অংশ ফুলে গিয়ে ফোঁস্কার আকার ধারণ করে। এ রোগ দমনে চ্যাম্পিয়ন ৭৭ ডব্লিউ পি ২.২৪ কেজি হারে বা ক্যালিঙিন ৮০ ইসি ১.১২ লিটার হারে হেক্টর প্রতি ১১২০ লিটার পানিতে মিশিয়ে পাতায় সেপ্র করতে হবে।
৩) আগা মরা রোগ: নার্সারী ও আবাদী এলাকায় নরম ডগা ও কচি পাতায় আক্রান্ত অংশ কালো হয়ে ধীরে ধীরে উপর থেকে নিচের দিকে মরতে থাকে। এ রোগ দমনে চ্যাম্পিয়ন ৭৭ ডব্লিউ পি ২.২৪ কেজি হারে বা কিউপ্রাভিট ৫০ ডব্লিউ পি ২.৮ কেজি হারে বা ক্যালিঙিন ৮০ ইসি ১.১২ লিটার হারে হেক্টর প্রতি ১১২০ লিটার পানিতে মিশিয়ে পাতায় সেপ্র করতে হবে।
৪) লাল মরিচা রোগ: এক প্রজাতির শৈবালের আক্রমনে কান্ড ও বয়স্ক ডালে এ রোগের সৃষ্টি হয়। কান্ড অক্রান্ত হলেও রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় পাতায়। পাতাগুলো ছোপানো হলুদবর্ণ ধারণ করে। এ রোগ দমনে ম্যাকুপ্রঙ ১৬ ডব্লিউ ২.২৪ কেজি হারে হেক্টর প্রতি ১১২০ লিটার পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত কান্ডে সেপ্র করতে হবে।
৫) ক্ষত রোগ: চা গাছের শাখা প্রশাখা বা মূল কান্ডে এ রোগের আক্রমণ বেশী পরিলক্ষিত হয়। আক্রান্ত অংশে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং ধীরে ধীরে ক্ষতটি বড় হতে থাকে। এ রোগ দমনে ম্যাকুপ্রঙ ১৬ ডব্লিউ ২.২৪ কেজি হারে হেক্টর প্রতি ১১২০ লিটার পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত কান্ডে বা শাখা প্রশাখায় সেপ্র করতে হবে।
৬) গোড়াপচা রোগ: অরিণত গাছের গোড়ায় এ রোগের আক্রমণ লক্ষ্য করা যায়। আক্রমণে গাছ ঝিমিয়ে পড়ে এবং মাটির সমান্তরালে বাকল ফেটে রিং আকারে উপরের দিকে উঠে যায়। এ রোগ দমনে ফরমালিন ৪০% ২.২৪ লিটার হারে হেক্টর প্রতি ১১২০ লিটার পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত গাছের গোড়ায় সেপ্র করতে হবে।
৭) চারকোল স্টাম্প রট: নার্সারী ও আবাদীতে গাছের শিকড়ে এ রোগের আক্রমণ দেখা যায়। আক্রমণে গাছ ঝিমিয়ে পড়ে এবং পাতাগুলি শুকিয়ে ডালে শক্তভাবে লেগে থাকে। এ রোগ দমনে ফরমালিন ৪০% ২.২৪ লিটার হারে হেক্টর প্রতি ১১২০ লিটার পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত গাছের গোড়ায় সেপ্র করতে হবে।
চায়ের আগাছা ও এর নিয়ন্ত্রণ: অদ্যাবধি বাংলাদেশ চায়ে ৩৭টি প্রজাতির আগাছা সনাক্ত করা হয়েছে। পরিসংখানে দেখা যায় আগাছা ১৫-২০ শতাংশ পর্যন্ত ফলন কমিয়ে দিতে পারে। এসব আগাছা দমনে যান্ত্রিক পদ্ধতি অর্থাৎ নিড়ানী, কোদাল, কাঁটাকোদাল বা লম্বা সরু কাস্তের সাহায্যে চেঁছে, উপড়ে ফেলে বা কেটে আগাছা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এছাড়া রাসায়নিক পদ্ধতি অনুসরণ করে স্বল্প সময়ে বিস্তীর্ণ এলাকায় দ্রুত আগাছা দমন করা যায়। বাগরাকোট, মিকানিয়ালতা, ছন, বিভিন্ন ঘাস ও অন্যান্য একবীজ ও দ্বিবীজপত্রী আগাছা দমনে বিটিআরআই অনুমোদিত গ্লাইফোসেট হেক্টর প্রতি ৩.৭ লিটার হারে ৭৫০ লিটার পানিতে মিশিয়ে সেপ্র করতে হবে।
চা প্রক্রিয়াকরণ: আমাদের দেশে কাল চা প্রক্রিয়াকরণে ৫টি ধাপ অনুসরণ করা হয়ে থাকে। যেমন-
১) উইদারিং বা নির্জীব করা
২) প্রসেসিং বা পাতাকে ছিন্নভিন্ন করা
৩) ফার্মেন্টেশন বা রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটান
৪) ড্রায়িং বা শুকানো
৫) সর্টিং বা শ্রেণীবিভাজন
চা অর্থনীতি: বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চায়ের অবদান অনস্বীকার্য। চা শিল্পকে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করতে হলে হেক্টর প্রতি উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি ও উৎপাদন খরচ কমানোর মাধ্যমে এর মানের উৎকর্ষ সাধন অপরিহার্য। হেক্টর প্রতি প্রথম ৫ বছরে চা উৎপাদন খরচ টা: ২,৪৬,৭৭৭ এবং ১ম বছরে উৎপাদন খরচ সর্বাধিক অর্থাৎ টা: ১,০৭,২৮৩ এবং পরবর্তীতে ইহা ধীরে ধীরে কমে আসবে। হেক্টর প্রতি সবুজ পাতা থেকে যে আয় পাওয়া যাবে তা ৪র্থ এবং পরবর্তী বছর থেকে মোট খরচের পরিমাণ বাদ দিয়ে আস্তে আস্তে মুনাফার দিকে এগিয়ে যাবে।
তথ্যসূত্র : দি-এডিটর