নারিকেল অর্থকরী ফসল হওয়ায় গাছটি দেশের সর্বত্রই দেখা যায়। গ্রামগঞ্জ, শহর-নগর সবখানেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে আগের মতো এর ফলন হচ্ছে না। তা ছাড়া নারিকেলের গায়ে এক ধরনের ছোট ছোট দাগ দেখা যাচ্ছে। নারিকেল হচ্ছে ছোট এবং বিকৃত ধরনের। 'মুচি' অবস্থায় ডাব ঝরে যাচ্ছে। মুচির সবুজ অংশ এদের খাদ্য। এদের ব্যাপক আক্রমণেই মুচি ঝরে যায়। মুচি যখন ডাবে পরিণত হয় তখন ডাবের গায়ে এদের আক্রমণের চিহ্ন বোঝা যায়। আক্রান্ত ডাবে পানি কম তাকে। অনেক সময় ডাবে পানি থাকেও না। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ডাবের মধ্যে থাকা শাঁস বা নারিকেল। তাই সঠিক সময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে নারিকেলের ফলন তো কম হবেই সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ডাব কিংবা-নারিকেল। মাকড়নাশক দু'ভাবে গাছে প্রয়োগ করা যেতে পারে। এক. ছোট গাছে স্প্রের মাধ্যমে। দুই. বড় গাছে শিকড়ের মাধ্যমে। মাকড় নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিশেষজ্ঞরা রাসায়নিক নাশক ব্যবহার না করে জৈবনাশক ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দেন। প্রতি লিটার পানির সঙ্গে এই তেল মেশাতে হবে। শিকড়ের মাধ্যমে মাকড়নাশক প্রয়োগ করার জন্য লাগবে পাঁচ হাজার পিপিএমের নিমতেল। প্রতিটি গাছের জন্য সাড়ে সাত মি.লি. এই তেল আর সমপরিমাণ জল একটি পলিথিন পাউচে ভরতে হবে। নারিকেল গাছের গোড়া থেকে আড়াই বা তিনফুট দূরে গর্ত খুঁড়লেই পাওয়া যাবে বেশকিছু জীবন্ত শিকড়। যে শিকড়টি পেনসিলের মতো মোটা এবং যার রং গাঢ় ঘিয়ের মতো সেই শিকড়ের মাথাটি কোনো ধারালো জিনিস দিয়ে তেরচা করে কাটতে হবে। এবার নিমতেলের দ্রবণভর্তি পলিথিনের পাউচের মধ্যে শিকড়টি ঢুকিয়ে মুখ বেঁধে গর্তে মাটি ভরে দিতে হবে। নারিকেলের ফলন ভালো পাওয়ার জন্য কেবল মাকড়নাশক প্রয়োগ করলেই হবে না। এর জন্য প্রয়োজন প্রতিবছরই বর্ষার আগে এবং বর্ষার পরে সার প্রয়োগ করাও জরুরি।