পাথর উত্তোলনে সরকারি কোনো নীতিমালা না থাকায় পঞ্চগড়ের সমতল কৃষিজমি থেকে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে নির্বিচারে। এভাবে পাথর তোলায় জেলায় কমে যাচ্ছে কৃষিজমি। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে বলে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন। সরেজমিন দেখা গেছে, পঞ্চগড়ের সদর ও তেঁতুলিয়া উপজেলার বিভিন্ন সীমান্তবর্তী নদী তীরবর্তী এলাকায় নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সমতল ভূমির ৩০/৪০ ফুট পর্যন্ত গভীর গর্ত করে পাথর তোলা হচ্ছে। সাও নদী থেকে পাথর উত্তোলনের ফলে ইতোমধ্যে বাংলাদেশি কিছু এলাকা ভারতের নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আরও জমি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তেঁতুলিয়া ও পঞ্চগড় সদর উপজেলায় আবাদি জমি খনন করে ব্যাপক পাথর তোলায় নিচের বালু উপরে উঠে ফসলি জমি বালুময় হয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনা চলমান থাকলে তেঁতুলিয়া এলাকা মরুভূমিতে পরিণত হতে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্র জানা গেছে, বড় বড় গর্ত করে পাথর তোলায় শুধু তেঁতুলিয়া উপজেলায় ৭০০ হেক্টর জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। এর আয়তন দিন দিন বাড়ছে। পাথর তোলার কাজে নিয়োজিত কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রথমে লোহার রড দিয়ে জমির তলদেশে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে পাথর আছে কিনা বোঝা হয়। তারপর মাটির বুক খুঁড়লেই স্তরে স্তরে সাজানো ৫/৬ ফুট থেকে ১৫/২০ ফুট পর্যন্ত পাথর পাওয়া যায়। সেই পাথরগুলো নেটিং করে বিক্রি করা হয়। শ্রমিকরা আরও জানান, বহু বছর যাবৎ তারা এসব জায়গা থেকে পাথর তোলার কাজ করে আসছেন। এ এলাকায় প্রায় ৪০ হাজার পাথর শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে বলে জানা গেছে।
মাটি খুঁড়লেই গোটা জেলায় কম-বেশি পাথর পাওয়া যায়। তবে ভূতত্ত্ববিদদের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, পঞ্চগড় সদর ও তেঁতুলিয়ার ভূগর্ভে ৮ কোটি ঘনফুট নুড়ি পাথর মজুদ আছে। এই জেলার পাথর দিয়ে দেশের কংক্রিটশিল্পে প্রায় ৭০ ভাগ চাহিদা মিটছে। অথচ পাথর তোলার কোনো নীতিমালা নেই। জমি যার খনি তার এই নীতিতে চলছে পাথর উত্তোলন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জমি কিনে লিজ অথবা বন্ধক নিলেই পাথরের মালিক হওয়া যায়। এজন্য সরকারকে কোনো ট্যাক্স দিতে হয় না। তবে পঞ্চগড় পাথর-বালি যৌথ ফেডারেশন রসিদ মূলে ৫০ টাকা ছাড়াও পঞ্চগড় মহাসড়কে বাঁশকল বসিয়ে প্রতি ট্রাকে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অথচ মজুরদের প্রতি সিএফটিতে দেওয়া হয় মাত্র চার-পাঁচ টাকা। সিন্ডিকেট বা সমিতি বানিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা প্রতিবারই এসব পাথর কোয়ারি ইজারা নিয়ে আসছে। প্রতিবছরই এক থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যেই মহালগুলো ইজারা নেওয়ার সুযোগ পায় তারা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বড় বড় গর্ত করে পাথর তোলায় আবাদি কৃষি জমি কমে যাচ্ছে। বালুময় হয়ে উর্বরতা শক্তি হারাচ্ছে। মাটির তলদেশ থেকে পাথর উত্তোলনের কারণে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। পাথর তোলার পর তা সমান করে আবাদ করার চেষ্টা করলেও দীর্ঘদিনও আবাদ করা সম্ভব হবে না।
পঞ্চগড় পরিবেশ পরিষদের সভাপতি ও সরকারি মহিলা কলেজের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক তোহিদুল বারী বলেন, এভাবে পাথর তোলার কারণে এসব জমি পতিত হয়ে পড়ছে। এতে জমির গঠন ও প্রকৃতি বদলে যাচ্ছে। ফলে কৃষি, পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য হুমকির মধ্যে পড়েছে। ভূমিধসসহ পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি। পাথর উত্তোলনকারী শ্রমিকদের নেতা ও তেঁতুলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মুক্তারুল হক বলেন, খাসজমিসহ সমতল কৃষিজ জমি থেকে অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে ড্রিল ড্রেজার দিয়ে পাথর তোলা বন্ধের আন্দোলন চালানো হচ্ছে। বর্তমানে একটি মহল বিভিন্ন স্থানে জমি দখল করেও পাথর তুলছে।
তথ্য সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন, তারিখ: ১১-১২-২০১০
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্র জানা গেছে, বড় বড় গর্ত করে পাথর তোলায় শুধু তেঁতুলিয়া উপজেলায় ৭০০ হেক্টর জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। এর আয়তন দিন দিন বাড়ছে। পাথর তোলার কাজে নিয়োজিত কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রথমে লোহার রড দিয়ে জমির তলদেশে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে পাথর আছে কিনা বোঝা হয়। তারপর মাটির বুক খুঁড়লেই স্তরে স্তরে সাজানো ৫/৬ ফুট থেকে ১৫/২০ ফুট পর্যন্ত পাথর পাওয়া যায়। সেই পাথরগুলো নেটিং করে বিক্রি করা হয়। শ্রমিকরা আরও জানান, বহু বছর যাবৎ তারা এসব জায়গা থেকে পাথর তোলার কাজ করে আসছেন। এ এলাকায় প্রায় ৪০ হাজার পাথর শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে বলে জানা গেছে।
মাটি খুঁড়লেই গোটা জেলায় কম-বেশি পাথর পাওয়া যায়। তবে ভূতত্ত্ববিদদের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, পঞ্চগড় সদর ও তেঁতুলিয়ার ভূগর্ভে ৮ কোটি ঘনফুট নুড়ি পাথর মজুদ আছে। এই জেলার পাথর দিয়ে দেশের কংক্রিটশিল্পে প্রায় ৭০ ভাগ চাহিদা মিটছে। অথচ পাথর তোলার কোনো নীতিমালা নেই। জমি যার খনি তার এই নীতিতে চলছে পাথর উত্তোলন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জমি কিনে লিজ অথবা বন্ধক নিলেই পাথরের মালিক হওয়া যায়। এজন্য সরকারকে কোনো ট্যাক্স দিতে হয় না। তবে পঞ্চগড় পাথর-বালি যৌথ ফেডারেশন রসিদ মূলে ৫০ টাকা ছাড়াও পঞ্চগড় মহাসড়কে বাঁশকল বসিয়ে প্রতি ট্রাকে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অথচ মজুরদের প্রতি সিএফটিতে দেওয়া হয় মাত্র চার-পাঁচ টাকা। সিন্ডিকেট বা সমিতি বানিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা প্রতিবারই এসব পাথর কোয়ারি ইজারা নিয়ে আসছে। প্রতিবছরই এক থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যেই মহালগুলো ইজারা নেওয়ার সুযোগ পায় তারা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বড় বড় গর্ত করে পাথর তোলায় আবাদি কৃষি জমি কমে যাচ্ছে। বালুময় হয়ে উর্বরতা শক্তি হারাচ্ছে। মাটির তলদেশ থেকে পাথর উত্তোলনের কারণে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। পাথর তোলার পর তা সমান করে আবাদ করার চেষ্টা করলেও দীর্ঘদিনও আবাদ করা সম্ভব হবে না।
পঞ্চগড় পরিবেশ পরিষদের সভাপতি ও সরকারি মহিলা কলেজের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক তোহিদুল বারী বলেন, এভাবে পাথর তোলার কারণে এসব জমি পতিত হয়ে পড়ছে। এতে জমির গঠন ও প্রকৃতি বদলে যাচ্ছে। ফলে কৃষি, পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য হুমকির মধ্যে পড়েছে। ভূমিধসসহ পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি। পাথর উত্তোলনকারী শ্রমিকদের নেতা ও তেঁতুলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মুক্তারুল হক বলেন, খাসজমিসহ সমতল কৃষিজ জমি থেকে অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে ড্রিল ড্রেজার দিয়ে পাথর তোলা বন্ধের আন্দোলন চালানো হচ্ছে। বর্তমানে একটি মহল বিভিন্ন স্থানে জমি দখল করেও পাথর তুলছে।
তথ্য সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন, তারিখ: ১১-১২-২০১০