একটি মৎস্য খামারের জন্য হাজার একরে জলাবদ্ধতা

Wednesday, September 1, 2010


নরনইর বিল। চারধারে একরের পর একর আমন খেত। সেই খেতের ধানই বাঁচিয়ে রেখেছে পাঁচ শতাধিক কৃষকের পরিবারকে। তাই শত প্রতিকূলতায় ফসল আগলে রাখেন তাঁরা। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুরের নরনইর বিলের সেই আমন খেত শুধু একটি মাছের খামারের কারণে এখন ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
গ্রামবাসীর ভাষ্যমতে, নরনইর বিলের পানি নিষ্কাশনের রাস্তায় একটি মাছের খামারের জন্য পুকুর খনন করে পাড় উঁচু করায় এলাকার এক হাজার একর জমিতে সৃষ্টি হয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। ইতিমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে ৫০০ একর জমির আমনের চারা। এতে দুই হাজার টন ধান কম হবে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নরনইর বিলে রহিমানপুর ইউনিয়নের ফকদনপুর, লক্ষ্মীপুর, গোয়ালপাড়া, মড়লডোবা, দেবাডাঙ্গী, খালপাড়া, মোলানি, দাসপাড়া ও বিলপাড়া গ্রামের ৫০০ কৃষক পরিবারের এক হাজার একর জমি রয়েছে। বিল এলাকায় রয়েছে বিভিন্ন মাপের ৩৫টি পুকুর। বিলের ২০ একর পতিত জমিতে গত জুনে বিলের পানি নিষ্কাশনের জায়গায় রাজা ফ্লাক্সজেন ফিশারিজ চারটি নতুন পুকুর খনন করে। পুকুরগুলো বিলের পশ্চিম থেকে পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ায় পুকুরটির উঁচু পাড় অলিখিতভাবে এলাকার বাঁধ হিসেবে গড়ে উঠেছে। এতে সেখানে পানি বাধা পায়। আর সেই পানি বিল এলাকার জমির ফসল তলিয়ে দেয়, সৃষ্টি করে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিলের চারদিকে বিস্তৃত আমন খেত পানিতে তলিয়ে আছে। বিলের মধ্যখানে খনন করা হয়েছে পাশাপাশি চারটি পুকুর। সেই পুকুরের উঁচু পাড় পানি নিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি করেছে। বিলের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে খনন করা হয়েছে ২০ ফুট প্রস্থের এটি খাল। কিন্তু বিলের পানির তুলনায় নিষ্কাশনের পথ পর্যাপ্ত না হওয়ায় পানি জমে সেই আমন খেতে সৃষ্টি হয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা।
লক্ষ্মীপুর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম (৪৫) পচে যাওয়া আমনের চারা দেখিয়ে বলেন, ‘প্রাচীন এই বিলের জমিতে প্রতিবছর ধানের বাম্পার ফলন হয়। এ বছর নয় বিঘা জমিতে আমন লাগিয়েছিলাম। কিছুদিন আগে চারাগুলো পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যায়। এরপর আবার রোপা লাগাই। এবারও ঢলের পানিতে জমির ধান নষ্ট হয়ে গেল। স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহায়তায় একটি কোম্পানি এখানে মাছের খামার গড়ে তুলেছে, যা এলাকায় পানি বের হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করেছে। প্রভাবশালীরা সেই কোম্পানির সঙ্গে থাকায় এলাকার লোকজন কিছু বলতে পারছে না।’ এ বিষয়ে ফ্লাক্সজেন ফিশারিজের প্রকল্প পরিচালক ইকবাল জাহাঙ্গীর জানান, নতুন চারটি পুকুর খননের পর থেকে নরনইর বিলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, এমন নয়। অনেক আগে থেকেই এলাকায় এ মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। তবুও তাঁরা পানি নিষ্কাশনের জন্য তিন একর জমি নষ্ট করে একটি খাল খনন করে দিয়েছেন। কিন্তু দক্ষিণ দিক অপেক্ষাকৃত উঁচু বলে সে দিক দিয়ে পানি রেব হতে পারছে না।
জেলা প্রশাসক মুহা. শহীদুজ্জামান জানান, বিলের মধ্যে পুকুর খননের পর নরনইর বিল এলাকার জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, এমন অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি বিল এলাকা পরিদর্শন করেছেন। সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও রহিমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যাকে সব পক্ষের সঙ্গে বসে বিষয়টির মীমাংসা করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সূত্রঃ প্রথম আলো

মনের উঠোনে

সাম্প্রতিক সংযোজন

মোবাইল থেকে দেখুন

আমাদের দেশ এখন আপনার মুঠোফোনে, মোবাইল থেকে লগইন করুন আমাদের দেশ

দ র্শ না র্থী

দ র্শ না র্থী

free counters

কে কে অনলাইনে আছেন