পুঁইশাক
পুঁইশাক এ দেশের সব স্থানেই বছরের সব সময়েই আবাদ করা হয়। এটি একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর শাক।
মাটি
এটি সুনিকাশযুক্ত বেলে দোআশ থেকে এটেল দোআশ মাটিতে সবচেয়ে ভাল হয়।
জাত
রঙভেদে দু’ধরনের পুইশাক দেখা যায়। লাল ও সবুজ। লাল রঙের জাত হল মনীষা। এ জাতটি বীজ বপনের ৪০-৪৫ দিন পই তোলা শুরু করা যায় এবং ফলন হেক্টর প্রতি ৫০-৬০ টন। সবুজ রঙের জাতের মধ্যে ভাল বারি পুইশাক ১ (চিত্রা)। এ জাতের ফলন হেক্টর প্রতি ৪০-৫০ টন সবুজ রঙের অন্যান্য জাত হল মাধুরী ও রূপসা গ্রীন।
বীজ বপনের সময়
ফাল্গুন থেকে জ্যৈষ্ঠ। সাধারণতঃ গ্রীষ্মকালে বর্ষায় এর চাষ ভাল হয়। বীজ ২৪ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরে জমিতে বুনতে হয়।
বীজের পরিমাণ
সারিতে বুনলে প্রতি শতকে ৮-১০ গ্রাম ও হেক্টর প্রতি ১.৫-২.৫ কেজি বীজ লাগবে। তবে ছিটিয়ে বুনলে বীজের পরিমাণ বেশী লাগবে।
বীজ বপন
সারি করে বীজ বপন করা যায়।
চারা রোপণ
চারা উৎপাদন করে ১৫-২০ দিনের চারা লাগানো যায়। পুঁই শাকের চারা রোপণের জন্য সারি থেকে সারি ১ মিটার এবং প্রতি সারিতে ৫০ সেন্টিমিটার দূরে দূরে চারা রোপণ করতে হয়।
জমি তৈরি
৫ থেকে ৬ টি চাষ ও মই দিয়ে উত্তমরূপে জমি তৈরি করতে হয়।
সারের পরিমাণ
সার এক শতকে হেক্টর প্রতি
গোবর ৬০ কেজি
সরিষার খৈল ৫০০ গ্রাম
ইউরিয়া ৮০০ গ্রাম
টিএসপি ৪০০ গ্রাম
এমও পি ৪০০ গ্রাম
সার ব্যবহারের নিয়ম
ইউরিয়া ছাড়া সব সারই জমি তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে। চারার বয়স ১০-১২ হলে ইউরিয়া সার প্রথম কিস্তি ৩০-৪০ দিন পর এবং প্রথমবার ফলন তোলার পর বাকি দুই কিস্তি এই মোট তিন কিস্তিতে উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
পরিচর্যা
বর্ষায় সাধারণতঃ সেচ দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। তবে মাটিতে রস না থাকলে অবশ্যই সেচ দিতে হবে। প্রায়ই মাটি আলগা করে দিতে হবে এবং আগাছা পরিস্কার করতে হয়। ফলন বেশী পেতে হলে বাউনি দিতে হবে। চারা ২৫-৩০ সেন্টিমিটার উঁচু হলে আগা কেটে দিতে হয়। এতে গাছ ঝোপালো হয়।
পোকামাকড় ও রোগ
পুঁইশাকে পাতার বিট্ল বা ফ্লি বিট্ল ছাড়া আর কোন পোকা তেমন ক্ষতি করে না। এ পোকা পুঁইশাকের পাতা ছোট ছোট ছিদ্র করে ফেলে। সারকোস্পোরা পাতায় দাগ পুঁই শাকের একটি মারাত্মক রোগ। প্রায়ই এ রোগটি দেখা যায়।
ফসল সংগ্রহ
পুঁই গাছের ডগা মাঝে মাঝে কেটে দিতে হয়। এতে শাকও খাওয়া হয় আবার গাছে নতুন ডগাও বেরোয়। একবার চারা লাগিয়ে ৮ থেকে ১০ বার পুঁইশাক সংগ্রহ করা যায়।
ফলন
প্রতি শতকে ৮০- ১২০ কেজি, হেক্টর প্রতি ৫০- ৭০ টন।
তথ্যসূত্র : দি-এডিটর