Tuesday, February 7, 2012

সারের অপপ্রয়োগে জমির শক্তি কমছে


পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কৃষকেরা না জেনে জমিতে দ্বিগুণ সার প্রয়োগ করে আসছে। প্রয়োজন না থাকলেও এমনকি প্রতিযোগিতা করে অনেক জমিতে বেশি সার প্রয়োগ করে। ফলে একদিকে এই এলাকার জমির গুণাগুণ নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে কৃষক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উপজেলার কৃষি অফিসসহ একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, কৃষি বিভাগ ও কৃষকদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে এই এলাকার কৃষকেরা জমিতে সার প্রয়োগের মাত্রা সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাচ্ছেন না। সারের যথেচ্ছ ব্যবহার কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি আশানুরূপ ফসলও ফলাতে পারছেন না কৃষকেরা। জমিতে সার প্রয়োগের সময় ও পরিমাণের কথা উল্লেখ করলে দেখা যায়, তারা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি সার প্রয়োগ করছেন। অন্য কৃষকের দেখাদেখি অনেকে প্রতিযোগিতা করেও অহেতুক বেশি সার প্রয়োগ করেন। সার ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে তারা কিছু জানেন না।

বাউফল উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আনছার উদ্দিন মোল্লা জানান, 'কৃষক অফিস আসতে চাচ্ছে না। বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরামর্শ দিলেও তারা এ পরামর্শ গ্রহণ করতে রাজি নয়। বিদেশে টাকার বিনিময় কৃষি সেবা গ্রহণ করেন। বাংলাদেশে ফিরে সেবা দিলেও এ সেবা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। মাটির গুণাগুণ সম্পর্কে কৃষকদের তেমন ধারণা নেই।' মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করায় জমির উর্বরাশক্তি হ্রাস পাচ্ছে। অনেকে জমিতে প্রতিবছর শুধু ধান উৎপন্ন করে। কিন্তু মাটি পরীক্ষা করে অর্থকরী অন্যান্য ফসলও চাষ করা যায়। এতে কৃষকের লাভ বেশি হতো। মাটি পরীক্ষার জন্য তাদের কাছে ওষুধ ও যন্ত্রপাতি রয়েছে। সামান্য ফি দিয়ে কৃষকরা মাটি পরীক্ষা করে নিতে পারেন। কারো একার পক্ষে ফি দেওয়া সম্ভব না হলে সমষ্টিগতভাবে ফি জমা দিতে পারেন। সরেজমিন দেখা গেছে, কৃষক হেমায়েত উদ্দিন জমিতে সার প্রয়োগ করছে। কতটুকু জমিতে কি পরিমাণ সার লাগবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যত বেশি সার প্রয়োগ করতে পারা যায় ততোবেশি ফল পাওয়া যাবে। উপজেলায় কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে সার বিতরণ করায় কৃষক জমিতে বেশি সার ব্যবহার করা হচ্ছে। ভালো ফলনের পূর্বশর্ত হলো ভালো বীজ। কিন্তু এই জেলার কৃষক ভালো বীজ পান না। সরকার চাহিদার তুলনায় মাত্র ৫ শতাংশ বীজ সরবরাহ করে। আর প্রত্যায়িত বীজ সরবরাহ করে মাত্র ১ ভাগ। বাকি বীজ কৃষকরা নিজেদের উৎস থেকে সংগ্রহ করেন। কৃষকরা জানেন না বীজ কিভাবে উৎপন্ন ও সংক্ষরণ করতে হয়।