Friday, December 17, 2010

মসলা চাষে বেশি লাভ


প্রান্তিক কৃষকরা কম খরচে মসলা চাষ করে বেশি লাভবান হচ্ছেন। রান্নার অন্যতম উপাদান মসলার মূল্য বৃদ্ধি এবং জমিতে উৎপাদন বেশি পাওয়া কৃষকরা মসলা চাষ শুরু করে দিয়েছেন। বাড়ির আঙ্গিনাসহ পতিত জমিতে মসলা চাষ করা যতে পারে। মসলার মধ্যে রয়েছে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, হলুদ, মরিচ ও ধনিয়া। দেশে মসলার উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে মসলার চাহিদা পূরণ, বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখাসহ মসলা রপ্তানির সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে। বাউফল উপজেলায় বর্তমান অর্থবছরে মসলা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে_ পেঁয়াজ ১২৫ হেক্টর, রসুন ১৫০ হেক্টর, আদা ৪৫ হেক্টর, হলুদ ৩০০ হেক্টর, মরিচ ২ হাজার ২০০ হেক্টর এবং ধনিয়া ১০০ হেক্টর। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে মোট ৪ হাজার ১২.৫ মেট্রিক টন। জলোচ্ছ্বাসের পানির সঙ্গে প্রতি বছর জমিতে বেশি পলি পড়ায় মরিচ, রসুন পেঁয়াজের আশাতীত ফলন হয়। কালাইয়া মাহিনুর বেগম (৩৫) তার বাড়ির আঙ্গিনায় ৩ শতাংশ জমিতে হলুদ চাষ করেছেন। পরিবারের ১ বছরের হলুদের চাহিদা পূরণের পর বাকি হলুদ বিক্রি করবেন। গত ১০ বছর ধরে হলুদ চাষ করছেন মাহিনুর বেগম। তার দেখাদেখি এলাকার অনেকেই হলুদ চাষ করছেন। চরওয়াডেল এলাকা আহসান হাবিব পরীক্ষামূলকভাবে হলুদ চাষাবাদ করে বেশ লাভবান হচ্ছে। তিনি কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে হলুদ চাষ করেন। জৈব সার প্রয়োগের মাধ্যমে অল্প জমিতে বেশি হলুদ চাষ করা যায়। পতিত উঁচু মাঝারি জমি বেলে দোআঁশ মাটিতে হলুদ ও আদা চাষ করা যায়। প্রতি বছর বৈশাখ মাসে হলুদ রোপণ করা হয়, পরবতী ১ বছর পর বৈশাখ মাসে হলুদ তুলতে হয়। বর্তমান বাজারে হলুদের মূল্য প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। শীত মৌসুমে ধনিয়া চাষ করে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকতা আনছার উদ্দিন জানান, প্রত্যন্ত এলাকার পরিবার মসলা চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। কৃষি বিভাগ আইপিএম ও আইসিএম ক্লাব মাধ্যমে আমন চাষের পাশাপাশি মসলা চাষে কৃষককে ধারণা প্রদান করে আসছে। দু'শতাধিক চাষিকে মসলা চাষের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, কৃষকদের মসলা চাষে বেশি জোর দেওয়া উচিত। কেননা, ৩ শতাংশ জমিতে ধান রোপণ করলে যে ফলন হয়, এর আর্থিক মূল্য হবে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা। ধানের পরিবর্তে মসলা চাষ করলে যে ফলন হবে তার আর্থিক মূল্য হবে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে দৈনিক মাথাপিছু ৩৮ গ্রাম মসলার প্রয়োজন। সে হিসাবে বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২০ লাখ মেট্রিক টন। দেশে মোট ৩.১৬ লাখ হেক্টর জমিতে প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ মেট্রিক টন মসলা জাতীয় ফসল উৎপাদিত হয়। দেশের চাহিদা পূরণ করতে অবশিষ্ট মসলা আমদানি করতে হয় এবং প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়।


তথ্য সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন, তারিখ: ১১-১২-২০১০